গাজার পাশে দাঁড়াবে সৌদি? সারা বিশ্বের নজর এক ফোনালাপে
Israel-Hamas conflict: এই প্রথম ইজরায়েল-গাজা সংঘাত নিয়ে ফোনে কথা হল দুই রাষ্ট্রপ্রধানের। স্বাভাবিক ভাবে এই সময়ে দু'দেশের এই দ্বিপাক্ষিক কথাবার্তা বেশ তাৎপর্য বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এ মাসের গোড়াতেও কোনও আভাস ছিল না। হঠাৎ করেই যুদ্ধ লেগে গেল দু-দেশের মধ্যে। গত শনিবার ইজরায়েলের উপর অতর্কিতে হামলা করে হামাস জঙ্গিরা। তার প্রত্যুত্তর দিয়ে সর্বশক্তি প্রয়োগের কথা জানায় ইজরায়েলের। আর এ ভাবেই শুরু হয়ে যায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধটা। ইতিমধ্যেই গাজায় একের পর এক হামলা চালিয়ে চলেছে ইজরায়েল। ঘনিয়ে উঠেছে যুদ্ধ। এর মধ্যেই হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে এই যুদ্ধপরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করলেন সৌদি আরবের সর্বময় নেতা যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন। ইতিমধ্যেই তিনি ফোন করেছে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রেইসিকে। জানা গিয়েছে, দু'দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের।
মার্চ মাসে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছিল। তার পর থেকে আর কথা হয়নি দু-পক্ষের। তারপর এই প্রথম ইজরায়েল-গাজা সংঘাত নিয়ে ফোনে কথা হল দুই রাষ্ট্রপ্রধানের। স্বাভাবিক ভাবে এই সময়ে দু'দেশের এই দ্বিপাক্ষিক কথাবার্তা বেশ তাৎপর্য বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কূটনৈতিক মহলের খবর, যুবরাজ সলমন রেইসিকে জানিয়েছেন, এই যুদ্ধের সংকট রুখতে সমস্ত আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পাশাপাশি অন্যান্য রাজ্যগুলির কাছে প্যালেস্তাইনিদের সমর্থনের জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, কীভাবে এই যুদ্ধপরিস্থিতি আটকানো যায়, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে দু'দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে।
আরও পড়ুন: রণক্ষেত্রে যেমন করে দিন কাটছে ইজরায়েলের বাসিন্দা ও অভিবাসীদের
শনিবার ইজরায়ালের হামাসের হামসার পর থেকে যুদ্ধ উত্তরোত্তর বেড়েছে দু-দেশেকর মধ্যে। সরকারি সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলে নিহত হয়েছে ১২০০ জন। আর তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক। প্রথমে পাঁচ হাজার রকেট হানা, তারপর নানা দিক দিয়ে ইজরায়েলে ঢুকে পড়ে অসংখ্য হামাস জঙ্গি। অজস্র নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছে হামাসরা। অপহরণ করে পণবন্দী করা হয়েছে অসংখ্য মানুষকে।
এদিকে ইসরায়েলে হামাসদের এই হামলার পরেই প্যালেস্টাইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দেয় ইজরায়েলের। সমস্ত রকম সামরিক শক্তি নিয়ে গাজার উপরে আক্রমণ করে ইজরায়েলি সেনারা। জানা গিয়েছে, গাজায় ইজরায়েলের একের পর এক হামলায় কম করে হলেও এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে গাজায় হামাসদের হাতে বন্দিদের জীবন নিয়েও সংশয় ক্রমশ বাড়ছে। গাজায় ইজরায়েলের হানা প্রতিটি আঘাতের উত্তরে একের পর এক বন্দিকে খুনের হুমকি দিয়েছে হামাসরা। যতদূর জানা গিয়েছে, হামাসদের হাতে বন্দিদের অধিকাংশই ইজরায়েলি, তবে বেশ কয়েকজন বিদেশি এবং দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারীও রয়েছে অপহৃতদের মধ্যে।
ইজরায়েলের সঙ্গে প্যালেস্টাইনের এই ভূমির যুদ্ধ আজকের নয়। অনেকেই মনে করেন, এই লড়াইয়ে হামাসদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করে আসছে ইরান ও সৌদি আরব। তবে শনিবারের এই হামলার সঙ্গে তাদের যোগ নেই বলেই জানা গিয়েছে সূত্র মারফত।
আরও পড়ুন:প্যালেস্তাইন বনাম ইজরায়েল || আপনি কার পক্ষ নেবেন?
ইতিমধ্যেই ঘনিয়ে ওঠা এই যুদ্ধপরিস্থিতি নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচের তায়েপ এর্দোগানের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন প্রিন্স সলমন। তবে সত্যিই প্রতিবেশি রাষ্ট্র ও আঞ্চলিক শক্তির সঙ্গে এ নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা কোনও সমাধানসূত্র আদৌ বেরোবে কিনা তা বলা শক্তি। কারণ সময় যত এগোচ্ছে, ততই কঠিন হচ্ছে যুদ্ধপরিস্থিতি। আর যুদ্ধ মানেই অসংখ্য নিরপরাধ মানুষের জীবনের বলি। দেশে যুদ্ধ লাগার আরেক দিক হল খাদ্যের অভাব। ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে জানানো হয়েছে, এই যুদ্ধ যত এগোবে, ততই খাদ্যসঙ্কটের দিকে এগিয়ে যাবে দু'দেশ। তাছাড়া তেলের জন্য ইজরায়েলের উপর নির্ভরশীল বিশ্বের বহু দেশই। ফলে এই যুদ্ধ ডেকে বিশ্বব্যাপী মানুষকেই এক নতুন সঙ্কটের সামনে দাঁড় করিয়ে দেবে, সে আশঙ্কা কিন্তু অমূলক।