ভয়াবহ হামলায় নিহত অন্তত ১৬, গাজার পর কেন ইজরায়েলের নিশানায় এবার সিরিয়া?
Israel Attack in Syria: ভয়ঙ্কর যুদ্ধের ক্ষত সামলে এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়নি সিরিয়া। তার মধ্যেই সিরিয়ার হামা প্রদেশে নামল ভয়াবহ আঘাত।
গাজায় এক বছর ব্যাপী যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েল। ইজরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে চল্লিশ হাজার। এরই মধ্যে ইরানের সঙ্গে নতুন করে সংঘাতে জড়িয়েছে ইজরায়েল। নিত্য দিনই লেবাননের সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন হেজবুল্লাহ হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েলে। তার মধ্যেই এবার সিরিয়ায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে বসল ইজরায়েল।
ভয়ঙ্কর যুদ্ধের ক্ষত সামলে এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়নি সিরিয়া। তার মধ্যেই সিরিয়ার হামা প্রদেশে নামল ভয়াবহ আঘাত। রবিবার মধ্যে রাতে হামা প্রদেশে বিমান হামলা চালায় নেতানিয়াহুর দেশ। ওই ঘটনায় অন্তত ষোলো জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম অন্তত ১৩। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, ইজরায়েলের ওই হামলায় হামা প্রদেশের একাধিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস মনিটর দলটির তরফে জানানো হয়েছে, মূল হামলাটি হয়েছে মাসয়াফের একটি বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে। অভিযোগ, সেখানে ইরানপোষিত জঙ্গিরা অস্ত্র তৈরি করছে। এই হামলায় জঙ্গিদের মৃত্যু হয়েছে না সেই তালিকায় সাধারণ নাগরিকেরা রয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। একই সঙ্গে উপকূলীয় শহর টারতুসের কাছেও হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ইজরায়েলি বোমা কেড়েছে সদ্যোজাত দুই সন্তান, স্ত্রী! শূন্যতা আগলে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ‘একা’ যুবক
একদিন আগেই ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বলয় লঙ্ঘন করে একশোটিরও বেশি রকেট নিয়ে নেতানিয়াহুর দেশে হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহেরা। তার বদলা নিতেই কি এই হামলা? যদিও ইসরায়েলের তরফে এখনও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, সিরিয়ার বাহিনী ও ইরান সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে নিশানা করেই নেতানিয়াহু বাহিনীর এই হামলা। সিরিয়ায় এই গবেষণাগার থেকেই হেজবুল্লাহকে অস্ত্র সরবরাহ করে ইরান। সেই রাস্তা বন্ধ করতেই এই হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জর্ডানের কিং হুসেন ব্রিজ ক্রসিং ও দখলিকৃত সিরিয়ার পশ্চিম তীরে হামলার পর ইজরায়েলের সঙ্গে জর্ডানের সমস্ত সীমান্তের ক্রসিং পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এদিকে ইজরায়েলের এই হামলা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ইরান। তেহরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র নাসের কানানি একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, সিরিয়ার মাটিতে ইহুদি শাসকের এই অপরাধমূলক হামলার তীব্র নিন্দা করছে ইরান। একই সঙ্গে ইজরায়েলের সমর্থকদের অস্ত্র নামিয়ে রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
৭ অক্টোবর ইজরায়েলে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র জঙ্গিগোষ্ঠী হামাস। অভিযোগ, সেই হামাসদের গোড়া থেকেই মদত জুগিয়ে এসেছে ইরান। সেই হামলার পরেই গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দেয় নেতানিয়াহুর দেশ। তবে শুধু গাজা নয়, তার পর থেকে সিরিয়াতেও ইরান-সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির আস্তানাগুলিকে নিশানা করা শুরু করেছে ইজরায়েল। এমনকী সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা-সহ একাদধিক সামরিক বাহিনীকেও নিশানা করেছে ইজরায়েল। যদিও সেই সব অধিকাংশ হামলারঅ দায় নেয়নি ইজরায়েল।
আরও পড়ুন:যে কোনও মুহূর্তে ইজরায়েলে হামলা! কেন নতুন করে যুদ্ধ চাইছে ইরান?
তবে সাম্প্রতিক এই অভিযান আকারে বেশ বড়সড় এবং ভয়াবহ ছিল বলেই জানানো হয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে। সরকারি ভাবে ১৬ জনের মৃত্যুর খবর মিললেও মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিরিয়ায় ইরানপোষিত জঙ্গিঘাঁটিতে হামলার উত্তর কি এবার ফিরিয়ে দিতে চলেছে ইরানও? আপাতত সেই জল্পনাই উস্কে দিচ্ছে ফের যুদ্ধের আশঙ্কা।