প্রেমের ময়দানে রাজনীতি জরুরি? সমীক্ষায় হাতে এল চমকে দেওয়া তথ্য

Politics and Dating: অন্তত ৪৪ শতাংশ ভারতীয়ই কিন্তু বলছেন, সম্পর্কে সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার অন্যতম শর্ত নাকি তাঁদের সঙ্গীর রাজনৈতিক সচেতনতা। রাজনৈতিক বিষয়আশয় নিয়ে খোলাখুলি কথা বলতে তাঁরা পছন্দ করেন কিনা সেটাও বেশ জরুরি।

সদ্য গিয়েছে ভ্যালেন্টাইন্স ডে। আসছে লোকসভা ভোট। নিশ্চয়ই ভাবছেন, কোথায় প্রেমদিবস, আর কোথায় রাজনীতির কচকচানি। এই দু'টোর তো দূর দূর পর্যন্ত কোনও সম্পর্কই নেই! কিন্তু না মশাই আছে। আলবাত আছে। প্রেম-প্রণয় এবং পলিটিকস এখন এক সুতোয় গাঁথা। বিশ্বাস হচ্ছে না তো। কিন্তু সমীক্ষা কিন্তু তাই বলছে।

পাড়ার আড্ডা, বন্ধুদের খোশগল্পে রাজনীতির গল্প এসে যায়ই। এ ব্যাপারে আবার বাঙালিদের বিশেষ বদনাম। তারা নাকি কথায় কথায় রাজনীতির আলোচনা একটু বেশিই করে। তবে শুধু বাঙালি বলে নয়, আজকাল প্রেমের ক্ষেত্রে সঙ্গীর রাজনৈতিক সচেতনতা নাকি বেশ জরুরি জেন-ওয়াই ও জেড-এর কাছে।

আরও পড়ুন: অবশেষে রহস্য সমাধান বিজ্ঞানীদের! কেন প্রেমে পড়লে মাথা কাজ করে না আমাদের?

আজকাল প্রেম যত না মাঠে-ঘাটে-বাটে হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি হয় টিন্ডার, বাম্বলের মতো ডেটিং সাইটে। সেই বাম্বল সম্প্রতি রাজনৈতিক সচেতনতা ও প্রেম নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। সেখানে দেখা গিয়েছে, অন্তত ৭৭ শতাংশ ভারতীয়ই তেমন সঙ্গী পছন্দ করেন, যারা ভোট দেন। হ্যাঁ, ভোট দিচ্ছেন কিনা, সেটার উপরেই নির্ভর করছে এই বছরও আপনি 'একাবোকা' থাকবেন কিনা।

সমীক্ষা এ-ও বলছে, অন্তত ৪৪ শতাংশ ভারতীয়ই কিন্তু বলছেন, সম্পর্কে সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার অন্যতম শর্ত নাকি তাঁদের সঙ্গীর রাজনৈতিক সচেতনতা। রাজনৈতিক বিষয়আশয় নিয়ে খোলাখুলি কথা বলতে তাঁরা পছন্দ করেন কিনা সেটাও বেশ জরুরি। অর্থাৎ কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স সম্পর্কে বিন্দুবিসর্গ জানেন না, এমন সঙ্গী কিন্তু পছন্দ করছেন না বেশীরভাগ ভারতীয়ই। শুধু কি তাই! অন্তত ৫০ শতাংশ ভারতীয় মহিলাই জানিয়েছেন, সামাজিক সমস্যগুলো নিয়ে যারা তাঁদের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলতে পেরেছেন, সঙ্গী হিসেবে তাঁরা কিন্তু বেশি নম্বর পেয়েছে। আদৌ সেই মানুষটির সঙ্গে তাঁরা কমপ্যাটিবেল কিনা, আদৌ তারা একসঙ্গে থাকার জন্য যোগ্য কিনা, তার নির্ণায়ক হয়ে উঠেছে সেই ব্যাপারটাই।

সময় পাল্টেছে। প্রেমের ধরণ পাল্টেছে। ঘটক থেকে ম্য়াট্রিমনিয়াল সাইট হয়ে সম্পর্ক এখন বাম্বল, টিন্ডার নির্ভর। জেন-জেড-রা নিজের সঙ্গীর জন্য মামা-মাসি-কাকা-পিসির থেকে এই প্রযুক্তিগত এই মাধ্যমের উপরেই এখন বেশি নির্ভরশীল। আর এই জেনারেশনের কাছে ভীষণ জরুরি রাজনৈতিক মতাদর্শ। আগেকার দিনে প্রেম বা সম্পর্কের ক্ষেত্রে সে ব্যাপারটা তেমন জরুরি ছিল না। কিন্তু দিনকাল পাল্টেছে। জেন-জেডরা কিন্তু রাজনৈতিক ভাবনা, রাজনীতির রং দেখে-বুঝে তবেই প্রেমের জন্য রাজি হচ্ছেন। অন্তত ৪৬ শতাংশ জেন-ডেডের ক্ষেত্রেই বিষয়টা তেমন।

আরও পড়ুন: কলকাতার প্রেমিক, পাকিস্তানের প্রেমিকা! ভালবাসা জুড়ে দিল দুই দেশকে

আজকের দিনে অন্তত ৪১ শতাংশ ভারতীয়ের কাছেই সঙ্গীর রাজনীতি এবং ভোটপ্রক্রিয়ার সঙ্গে জুড়ে থাকা বিষয়টা অত্যন্ত জরুরি ৫১ শতাংশ ভারতীয়ের কাছে সঙ্গীর রাজনৈতিক মতাদর্শ জরুরি কারণ সেটাই ঠিক করে দেয় সঙ্গীটি রোম্যান্টিক কিনা। ৩৯ শতাংশ ভারতীয় অন্য রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গীদের সঙ্গে ডেটিংয়ে রাজি। অর্থাৎ যাঁরা অন্য দলের প্রার্থীকে ভোট দেন। তবে রাজনীতিতে আগ্রহ নেই এমন ভারতীয়ও কিন্তু রয়েছে প্রেমের ময়দানে। অন্তত ২০ শতাংশ ভারতীয় জানিয়েছেন, রাজনীতির কচকচানি তাঁদের অন্তত প্রেমের ক্ষেত্রে পছন্দ নয়। ডেটিংয়ের সময় রাজনীতি বরং তাঁদের রোম্যান্টিক মনোভাবকে নষ্ট করে দেয়।

ফলে রাজনীতি থেকে শতহস্ত দূরে থাকা কিন্তু আজকাল প্রেমের ময়দানে মোটেও কাজের কথা নয়। অন্তত জেন-জেডদের কাছে তো বটেই। ফলে আগামী ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে সিঙ্গল না থাকতে চাইলে রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামানো শুরু করে দিন এখন থেকেই। সামনেই লোকসভা ভোট। এর চেয়ে সুবর্ণ সময় বুঝি আর নেই।

 

More Articles