'তারিখ পে তারিখ'-ই সত্য তবে! কেন ১৭ সেপ্টেম্বর আরজি করের আগামী সুপ্রিম শুনানি?

RG Kar Supreme Court Hearing: ১৭ সেপ্টেম্বর আগামী শুনানির কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা নিয়েছিল সুপ্রিম আদালত। গত ৫ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় শুনানি হওয়ার কথা ছিল এই মামলার। তবে সেই তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়। ৯ সেপ্টেম্বর আরজি কর কাণ্ডের একমাস পূর্তি। এই একমাস ধরে টানা প্রতিবাদ চলছে রাজ্যে, দেশে এমনকী বিশ্বের বহু দেশেও। শুধু বিচারের দাবি নয়, আমজনতা কথা বলছে পুলিশ ও প্রশাসনকে নিয়েও। প্রথম থেকেই এই ধর্ষণকাণ্ডে দোষীদের আড়াল আর তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ উঠেছিল হাসপাতাল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এবং সেই দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা অভিযোগ ওঠে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে। ফলে সুপ্রিম কোর্টের শুনানির দিকে তাকিয়ে ৮ সেপ্টেম্বর রাত থেকে স্লোগান উঠতে থাকে রাজ্য জুড়ে। তবে ৯ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে ১৭ সেপ্টেম্বর আগামী শুনানির দিন ধার্য ছাড়া প্রাপ্তি হলো না কিছুই। 

৯ তারিখ প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি পর্বের শুরুতেই স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্যের একাধিক হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতির ডাকায় ২৩ জন মারা গিয়েছেন বলে জানান রাজ্যের আইনজীবী। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এদিন জানতে চান, আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বাড়ি থেকে হাসপাতালের দূরত্ব কত? জবাবে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, ১৫-২০ মিনিটের পথ। এর পরেই প্রধান বিচারপতি জানতে চান, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা কখন রুজু করা হয়? রাজ্য সরকারের পক্ষের আইনজীবী জানান, দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছিল। তারপর দুপুর তিনটে বাজতে ৫ মিনিটে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলাটি যুক্ত করা হয়েছিল। ওই একই সময়ে জেনারেল ডায়রিও করা হয়েছিল। সেদিনই রাত সাড়ে ৮টা থেকে পৌনে ১১টা পর্যন্ত তল্লাশি ও বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছে রাজ্য।

আরও পড়ুন- ব্রাজিল থেকে তাইওয়ান, ফ্রান্স! আরজি করের বিচার চেয়ে বিশ্বজুড়ে যে মানববন্ধন দেখল মানুষ

আরজি কর কাণ্ডে ধর্ষণের অভিযোগে এখনও অবধি গ্রেফতার হয়েছে সঞ্জয় রায়। আর দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আরজি কর হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে সেমিনার কক্ষের বিল্ডিংয়ে ঢুকতে-বেরোতে দেখা যায়। পুলিশ জানিয়েছিল, ভোর ৪টে নাগাদ সঞ্জয়কে বেরোতে দেখা যায়। এই সমস্ত ফুটেজ সিবিআইকে দেওয়া হয়েছিল কিনা তাও জানতে চান প্রধান বিচারপতি। সিবিআইয়ের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, ২৭ মিনিটের মোট চারটি ক্লিপিং দেওয়া হয়েছে এখনও। ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, "সিসিটিভি শুধু দেখা যাচ্ছে অভিযুক্ত ঢুকছে। আর কারা কারা ঢুকছেন, সেটা কি পেয়েছেন? সেই তথ্য পরের রিপোর্টে দিন।"

সিবিআই সুপ্রিম কোর্টকে এদিন জানায়, “এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে প্রথম ৫ ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা ৫ দিন পরে গিয়েছি। তখন কিছু পাল্টে গিয়েছে।” ময়নাতদন্ত ঠিকমতো হয়েছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে এদিন। আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বলেন, “দুপুর আড়াইটা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শুধুমাত্র ১০ বার জিডি এন্ট্রি করা হয়েছে। পুরোটা পরে তৈরি করা হয়নি তো? অনেক রহস্য রয়েছে।” তিনি সংশয় প্রকাশ করেছেন, ময়নাতদন্তের পুরো রিপোর্ট আবারও খতিয়ে দেখার কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উপস্থিত চিকিৎসকরা একটি নির্দিষ্ট লবির। এরপরেই সোমবার সিবিআইকে ফের তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ১৭ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানান ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।

More Articles