আজব ত্রিকোণমিতি শেখালেন যাঁরা...

Teachers' Day 2023: তবে এত সবের সমান্তরালে ছাত্রটির জীবনে পূর্বপ্রস্ততিহীন অপ্রত্যাশিত অনুপ্রবেশ ঘটে গিয়েছিল নতুন এক বন্ধুর। তাঁর মধ্যস্থতায় ছাত্রটির খিটকেল, তত্ত্বকঠোর ব্যক্তিত্বে যুক্ত হয় নতুন কিছু মাত্রা। সহিষ্ণুতা, স...

সুনির্মল বসুর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। কিন্তু বঙ্গদেশে এহেন যাবতীয় গুরুত্বের কপালে নিয়তির মতই অনিবার্য অতিব্যবহারে জীর্ণ হয়ে যাওয়া উদ্ধৃতিসর্বস্বতার দণ্ডাদেশ। মাতামহের মতো সুনির্মল নিজে বিপ্লবী নন। এমনকী তিনি পারফিউমপুষ্ট একুশ শতকিয়া অধ্যাত্মগুরুও নন। হলে অন্তত ধর্মভাবে মাতোয়ারা অনুগামী সম্প্রদায়ের কল্যাণে শহরের ব্যানারশোভিত চৌরাস্তার মোড়ে নিয়ত দৃষ্টি টেনে নিতে পারত চকিত কোনও আধ্যাত্মিক অধ্যাদেশ। অথবা তিথিভেদে ট্রাফিকরোখা প্ল্যাকার্ড-খচিত ভক্তিগদগদ মিছিলে আচমকা চোখে পড়ে যেত কিছু সুস্মিত অনুজ্ঞামূলক কাপলেট। হায়, সুনির্মল তো কোনও বোস বা বাসুও নন। তিনি তো ছন্দের টুংটাং আর আনন্দনাড়ু। নেহাতই শিশুপাঠ্য এক বসু। সুনির্মল বসু। আবৃত্তির ক্লাস ছাড়া সাধারণভাবে তাঁকে মনে করি না আমরা। শেষশয্যায় শায়িত বাংলামাধ্যম সরকারি শিক্ষার নাভিশ্বাসটুকু থামলে সে প্রয়োজনও ফুরোবে। তবে ভারতের জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত তারিখটির বিশেষ উপলক্ষে যে উদযাপনমুখর বাঙালিরা উৎসাহিত হন, তাঁরা যথারীতি এ কারণে আরও কিছুকাল তাঁর কবিতাটি স্মরণ করবেনই।

আরও পড়ুন: শিক্ষা প্রসার থেকে বিপ্লবীদের সাহায্য, স্বামীজির আলোয় যে নিবেদিতা আজও অজানাই

সুনির্মলের কবিতাটি অস্বীকার করা সত্যিই ক্ষমাহীন অপরাধ। ওটি ভুলে মেরে দিলে শিক্ষক দিবসের প্রথাসিদ্ধ আনুষ্ঠানিকতাকে প্রতি বছর একই লব্জে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেনা বাক্যবন্ধটিই হারিয়ে যাবে। যুগপৎ প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রথাসিদ্ধ হয়ে প্রতি বছর ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে যাওয়া - এই শিক্ষক দিবসই ছাত্র-আমির বুকের দরবারে নিজের আসন পাকা করে রেখেছে। প্রথাও পুনরাবৃত্তিমূলক, প্রশ্নও তাই। আপাত দৃষ্টিতে ফি বছর এক গল্প। পরিচিত ছক। মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা, শিক্ষারত্ন, স্কুল-কলেজে চাকুরিরত পেশাদার শিক্ষক বনাম প্রাণ-প্রকৃতিবেশী সুনির্মলা শিক্ষক নিয়ে তরজা, পোশাকী সম্মানজ্ঞাপনের সরকারি কুচকাওয়াজ বা ইতিউতি প্রতিষ্ঠানের পরব, ক্ষেত্রবিশেষে ছোটখাটো উপহার, এমনকি টিউশন মাস্টরের প্রযোজনায় আদায়ীকৃত সান্ধ্যভোজ, হালফিলে ‘কুম্ভীলক রাধাকৃষ্ণন: পক্ষে, বিপক্ষে’-র ফেসবুকীয় চণ্ডীমণ্ডপ, সাপ্তাহিকী বা দৈনিকের বিশেষ ক্রোড়পত্র - পরিচিত ছক। কিন্তু স্রেফ ছকটুকু চিনে নিয়ে মুখ ঘুরিয়ে থাকার মত নিষ্পৃহ কাঠামোবাদ অনুশীলনে মন সায় দেয় না। ফলে কিছু প্রাণ রহিয়া যায়!

শতপথ ব্রাহ্মণের শ্লোকটি ভুলে গেলে হয়ত বিরাট অপরাধ হবে না। তবে মনে রাখতে ক্ষতি কী? এ জীবন চির-অধমর্ণ। বাকি কথা বাদ রাখলেও, কিছু না-হোক মৃত্যুর কাছে ঋণগ্রস্ত হয়ে জীবনের শুরু। এই সূত্রেই তো ‘সময় সবচেয়ে বড় শিক্ষক’ ইত্যাদি। কিন্তু বিশ্ব-জোড়া পাঠশালায়, পৃথিবীর বিরাট খাতার প্রতি পাতায় পাঠ্য খুঁজে পাওয়া ঋদ্ধিমান ছাত্রটির জীবনেও তো কিছু জলজ্যান্ত ব্যক্তি ছিলেন। যাঁদের থেকে এক আনা, দু'আনা করে শিখে নিয়ে তার ব্যক্তিসত্তাটি তৈরি হয়েছে। কারা তাঁরা, যাঁরা না থাকলে আজকের আমিটা ঠিক আমার মত হত না? এ লেখায় শিক্ষক বলতে কঠোর ভাবে স্রেফ তাঁদেরই বুঝতে হবে আপাতত। সেরকমই কয়েকজনের জন্য আমার ব্যক্তিগত কিছু কথা প্রকাশ্যে বলে নেওয়ার ধানটুকু ভানতেই আসলে এত লম্বা শিবের গীত। তাঁদের উপস্থিতি আবশ্যিক শর্ত ছিল নাকি পর্যাপ্ত, সে কূট-প্রশ্নে যাব না। তেমনি সলজ্জ ব্যক্তিগত পরিসরের আয়ত্তাধীন যা, ঝোঁকের মাথায় তার বারোয়ারি বাঁটোয়ারার কথা ভাবলে আড়ষ্ট হতে হয়৷ কিন্তু, এ বৈ-পাঠের মাধ্যমটির সম্পাদকীয় চাহিদাটির গুরুত্বও আমার চোখে আসলে তা-ই। একটা তারিখের ছুতোয় সীমা লঙ্ঘন না করে যথাসম্ভব ব্যক্তিস্মৃতিটুকুর দলিল করিয়ে নেওয়া। তাই স্কুলবেলা, কলেজবেলা ভেদে খানিক তথ্য, উপাত্ত, পরিসংখ্যানের ঢংটিই নেওয়া ভাল। তবে সকলের নাম নেওয়া হবে না।

বাসুদেব গুছাইত। জন্ম আমতার খিলা-গোপীমোহনপুর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭১। তাঁর কথা অন্যত্র লিখেছি আগে। ব্রাহ্মণ পদবীধারী ছাত্রটির, যাঁর বাপ-জ্যাঠাদেরও শিক্ষক তিনি, প্রণাম নিতে ভালবাসতেন। বলতেন: 'আমার একটাই গর্ব, প্রেসিডেন্সি কলেজের ইংরেজি বিভাগের খাতায় চাষার ছেলে হয়ে গুছাইত পদবিটা রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পেরেছি'। এ সেন্টিমেন্টের ইতিহাস লেখা হবে না? ক্লাস সেভেনে পড়তে বুড়ো মাস্টারের কাছে একান্ত পাঠের সুযোগে নাদান ছাত্রটির ব্যক্তিত্বের গড়নটিই সম্পূর্ণ ভিন্ন পথ খুঁজে পেল। পরবর্তী পাঁচ-ছ'বছর নিরবচ্ছিন্ন চলল একই পদ্ধতির পাঠগ্রহণ। সে নিরবচ্ছিন্নতার স্বাদ প্রথমবার ফিকে লাগল তখন, যখন ছাত্রটির জীবনে সেই শিক্ষকেরই সমবয়সী আরেক বৃদ্ধ, যে এতদিন নির্বিবাদী পর্যটকের মত আসত-যেত, সে হঠাৎ শিঙা ফুঁকে হইচই করে বসতভিটে তুলে ফেলল মনে, মগজে! এই নতুন শিক্ষকের সঙ্গে আজও ছাত্রটির সশরীরে সাক্ষাত হয়নি। কিন্তু গ্রহিষ্ণু বয়সে কলরব-উদ্বিগ্ন চেতনায় কবীর সুমনের কন্ঠটি কানে এসে না পৌঁছলে এ ছাত্রটি বোধহয় ভাষাকে ভালবাসা যায়, তা বুঝত না। ইতিহাস বা রাজনীতি - কিছুতেই বিশেষ আগ্রহ তৈরি হত না। জীবনে প্রথমবার সে জীবন নিয়ে ভাবল। স্রেফ উচ্চারণেই কীভাবে সাত-সমুদ্র পেরোনো যায়, টের পেয়ে গেল। পোক্ত ভিতের বসতবাড়িটিতে অবশ্য এই প্রবীণ আজকাল ঘরবন্দিই থাকেন। জানলা-দরজা খোলেন না বিশেষ। কিন্তু বুড়োদের মাঝে এক ছোঁড়াও ছিল। সহপাঠী, বন্ধু। সমর্থ উচ্চারণে সেও কিছুকাল খবর পাঠালো, ভাষা ও সংস্কৃতির পাঠ নেওয়া গেল কিছু। আর শেখা গেল একটা নির্দিষ্ট জগতের আদব-কায়দা, কৃৎ-কৌশল।

স্কুলবেলায় প্রভূত প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল আরও একজনের থেকে। লাল মলাটের একটি পুস্তিকা, অনিবার্য এক গদ্যের আঘ্রান আর কিছু জনশ্রুতির বিনিময়ে অনেকটা অহেতুক আকর্ষণ দাবী করছিলেন তিনি। সেই অদৃশ্য চুম্বকের বশীভূত হয়ে খানাতল্লাশি চলল দিনকয়েক। উদ্ধার হল কয়েক তাড়া পোর্টেবল ডকুমেন্ট ফাইল, গোটা চার-পাঁচ অডিও, দুটি ভিডিও। দূরে থেকেই জমি কিনে রাখলেন তিনি। পাকা বাড়ি তৈরি করতে সময় নেবেন আরও বছর কয়েক। নাম নিয়ে তাঁর অস্বস্তির কারণ হতে চাই না। প্রাগুক্ত সীমার কথা ভেবেই সতর্ক থাকছি। সীমানা নিয়ে সতর্কতার শিক্ষা তো তাঁর থেকেই পাওয়া।

প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা শুরু করার দিন আসতে আসতে ছাত্রটি বেশ লায়েক হয়েছে। আগের দুই মাস্টারকে সে নির্বাচন করতে পারেনি। তাঁরা নিজেরাই সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ময়দান দখল করে নিয়েছিলেন। এবার তাই আগে থেকে নিজেই সব ঠিক করে রেখেছে। কাকে শিক্ষক বানাতে হবে সে জানে। ‘বাঙালির ইংরেজি সাহিত্যচর্চা’র লেখকের সাপ্তাহিক পুরনো চাল সে নিজেও রপ্ত করতে চায়। কিন্তু এবারেও ছিপ নিয়ে গেল কোলা ব্যাঙে, মাছ নিয়ে গেল চিলে। কথা নিশ্চয়ই হল বেশ কয়েকবার স্বপন চক্রবর্তীর সঙ্গে। কিন্তু একে তাঁর নাগাল মেলা মুশকিল। তায় আবার তিনি হাত ঝাড়লেই পর্বত! ছাত্রটি নিজে পাঠক হিসেবেই তাঁকে চিনল বেশি, ছাত্র হিসেবে কম। তাই আজকের জবানবন্দীতে তাঁর কথা হবে না। লেখার শুরুতে ঘোষিত শর্ত স্মর্তব্য।

বরং ময়দানে ঢুকে পড়ে সটান রাজপ্রাসাদ তুলে ফেললেন যিনি, তিনি ছাত্রটির এই জবানবন্দীর একমাত্র সাবেক সংজ্ঞার শিক্ষক। ক্লাসরুমে যে শিক্ষকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় ছাত্রের। শুরু হল বহু প্রথমের পথ চলা। তাঁর ক্লাসে ঢুকতে বা বেরোতে অনুমতি লাগত না। সবে আট-দশ মাস কলেজে যাতায়াত করেও তাই অনায়াসে মাস্টার্সের ক্লাসরুমে ঢুকে বসে পড়া গেল। সেখানে কৃশতনু যে বইটি পড়ান তিনি, তার নাম 'আর্কিওলজি অফ নলেজ'। প্রথমবার যাবতীয় স্বীকৃত, বৈধ, মান্যকে সন্দেহ করা। সত্য এবং সত্য-বলে-প্রতিষ্ঠিতর বিভেদ করতে শেখা। প্রথমবার দৃশ্যগত যা-কিছু, তার অন্তর্গত স্তরভেদকে শনাক্ত করতে চাওয়া। প্রথমবার ইংরেজি বই গোটাগুটি পড়ে শেষ করা, যা গল্প বা উপন্যাস নয়। প্রথমবার এমনক মনের মধ্যে সযত্নে লালিত ‌রাজনৈতিকতার ধারণাটিকেও আঁচিয়ে নেওয়া। প্রথমবার মৃত্যু নিয়ে সত্যিসত্যিই ভাবা। প্রথমবার প্রশ্ন করা, আমার আমি কি এক, নাকি বহু? নাকি একটিও নয়? প্রথম ভাবা, দেহ আর মনের দূরত্ব, সংযোগ নিয়ে।

অবাধ প্রশ্রয় পাওয়া গিয়েছে তাঁর কাছে। বিরুদ্ধ মত তৈরি করতে নিরন্তর উৎসাহ দিয়েছেন তিনি। প্রথমদিন ক্লাসরুমে এসে ঘোষণা করেছিলেন, “এমনভাবেই পড়াশোনা কোরো, যেন ক্লাসে ঢুকতে আমার ভয় করে। তোমাদের সামনে দাঁড়াতে যেন আমার হাঁটু কাঁপে। তবেই তো তোমরা ছাত্র, আর আমি শিক্ষক”। তর্ক করতেও ইচ্ছে হয়েছে তাঁর সঙ্গে প্রায়ই। বিষাদ আর বিলাপের ফারাক প্রসঙ্গে তাঁর মত মানেনি ছাত্রটি। আচার, আনুষ্ঠানিকতা বিষয়েও নয়। আরও কত বিষয়ে মনে মনে, অথবা ফোনে ফোনে তর্ক হয়েছে। মজা হল যে বিষয়ে সে মত মানেনি, সে নিয়ে তাঁর বলার আগে সে ভাবেওনি। তাঁর নাম সুমিত চক্রবর্তী। স্বপনবাবু বলতেন, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক যে বিন্দুগুলি ছুঁয়ে থাকে তা হল সপ্রশ্ন শ্রদ্ধা (ভক্তি নয়) আর উভয়পক্ষে নমনীয় মননগ্রাহ্য অধিকারবোধ। স্বপনবাবুর এ ছাত্রটির সঙ্গে তাঁর নিজের ছাত্রের সম্পর্কও এই বিন্দুগুলি বিলক্ষণ ছুঁয়ে থাকছে।

ঋতভাষের শপথে আর একজনের কথা বলতে হবে এখানে। তিনি ছাত্রটির প্রত্যক্ষ শিক্ষক নন। ক্লাসরুমের দৈনন্দিনতার দায় কাঁধে নিয়ে নয়, তাঁর চিন্তাজগতের সঙ্গে ছাত্রটির পরিচয় হয় অনেকটা আলগোছে, খানিক বিচ্ছিন্নভাবেই কিছু বক্তৃতা শুনে অথবা বিক্ষিপ্ত কিছু কথোপকথনের মধ্যে দিয়ে। ভাবনা-চিন্তার নামে এতদিনের নিরাপদ পাঁচিলের ঘেরাটোপে অল্পবিস্তর লাট্টু-লেত্তির খেলা, যাকে ছাত্রটি প্রায় বৈপ্লবিক জ্ঞানে ডগমগ ছিল, এই স্বল্প পরিচয়েই দমকা হাওয়া লাগে সেখানে। অপূর্বকল্পিত নতুনত্বের চাপে খুঁটি উপরে যাওয়ার জোগাড় হয় তার। এতটা অন্য ধাঁচের চিন্তাও কেউ করতে পারে? প্রাথমিক মুগ্ধতাটুকু কাটিয়ে উঠে সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষিকা সুকন্যা সর্বাধিকারীর থেকে ছাত্রটি শেখে সত্যিকারের দর্শন হল আত্মদর্শন। নতুন করে শেখে, ভাবনার জগত আপোষ চেনে না। 'কল্পনার প্রসার ছাড়া বিদ্যা তো ক্ষমতার গোলাম' - এ কথা পড়ে সে স্বপন চক্রবর্তীর লেখায়। আর এ কথার মর্মার্থ সে নিজের অভিজ্ঞতায় উপলব্ধি করে সুকন্যা সর্বাধিকারীর সঙ্গে যৎকিঞ্চিত কথোপকথনে ভাগ নিয়ে।

আরও পড়ুন: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্গতি হতে চলেছে প্রেসিডেন্সির মতোই

তবে এত সবের সমান্তরালে ছাত্রটির জীবনে পূর্বপ্রস্ততিহীন অপ্রত্যাশিত অনুপ্রবেশ ঘটে গিয়েছিল নতুন এক বন্ধুর। তাঁর মধ্যস্থতায় ছাত্রটির খিটকেল, তত্ত্বকঠোর ব্যক্তিত্বে যুক্ত হয় নতুন কিছু মাত্রা। সহিষ্ণুতা, সংবেদন, শ্রমের শিক্ষা মেলে বিভিন্ন ব্যক্তিগত মুহূর্তে। সে শেখে, নিজেকেও লুকিয়ে ফেলতে হয়, সবার আগে নিজের কাছেই। তাতে মগজ বিরাম পায়, অহংয়ের প্রতাপ কমে। সেই ভালবাসার মানুষের কথাও বেশি বলা চলে না এখানে। 'আড়ালে আড়ালে দেয়া-নেয়া/ আপনায় লুকায়ে দেয়া-নেয়া।' সুনির্মল স্রোতে বয়ে যেতে ভাল লাগে, আরও ভাল লাগে এই শিক্ষকদের কথা ভাবতে, যাঁদের ছাড়া সেই ছাত্রের সত্তায় টান পড়ত, যাঁদের কোনও একজন না থাকলে তাঁর ব্যক্তিত্বই হয়তো অন্যরকম হয়ে যেত।

More Articles