বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা কি সত্যিই নির্যাতিত? প্রকৃত চিত্রটি আসলে যেমন
Bangladesh Minorities: শেখ হাসিনার দেশত্যাগের দিন বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলিতে বলা হয়েছিল, সেদিনই দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে প্রায় ২০টি জেলার হিন্দুবাড়িতে হামলা ও লুটপাঠ চালানো হয়েছে।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে দু'মাস হল। অনেকেই মনে করেছিলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের পরিস্থিতিটা হাসিনা আমলের থেকে ভালো হবে, সংস্কার সাধনের স্বপ্ন সাকার হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বাস্তব চিত্রটা কী? সদ্য গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার কি সংখ্যালঘুর অধিকার রক্ষা করতে পারছে?
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনা ঘট বলে অভিযোগ করছে সে দেশের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। দাবি করা হয়, ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে ধর্মীয় উপাসনালয় এবং হিন্দুদের মালিকাধীন সম্পত্তিগুলি। প্রতিবেদনে লেখা হয়, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগে বাধ্য করছে বাংলাদেশের এক শ্রেণির মানুষ। এরই মধ্যে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে দাবি করা বহু পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে গিয়েছে। ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বৃহত্তম সংগঠন 'হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ' ঢাকায় সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছে, অগাস্টের ৪ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত ২০১০টি সাম্প্রদায়িক হামলায় ১৭০৫টি সংখ্যালঘু পরিবারের মানুষ হতাহত হয়েছেন। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রকৃত চিত্রটা তাহলে কী?
বাংলাদেশের হিন্দুরা বহুকাল থেকেই আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেন। বাংলাদেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর তুলনায় আওয়ামী লীগকে ধর্মনিরপেক্ষ বলে দেখা হয়। যদিও এই দলের জোটে মুসলিমপন্থী দলও রয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম 'প্রথম আলো'-তে লেখা হয়েছে, হাসিনার সরকারের পতনের পর ভারতের বেশ কিছু গণমাধ্যম দাবি করেছিল, 'শিগগিরই বাংলাদেশের থেকে এক কোটির বেশি শরণার্থী ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করবে।' টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় স্পষ্ট ভাবে বলা হয়, 'জামায়াতে ইসলামী' বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে এই আন্দোলন করেছিল। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান 'আল জাজিরা' সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমগুলো 'ইসলামভীতির দৃষ্টিতে' সংবাদ পরিবেশন করছে।
আরও পড়ুন- বাংলাদেশে গণরোষের শিকার! কেমন আছেন বছর বাইশের উৎসব মণ্ডল?
১১ অগাস্ট, 'বিবিসি'-র একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ভারতে সামাজিকমাধ্যমে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর হামলা নিয়ে ভুয়ো পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। ওই সংবাদমাধ্যমেরই তথ্য যাচাই বিভাগ ভাইরাল পোস্টগুলি যাচাই করে দেখেছে, শেখ হাসিনার পতনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর যেমন আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে তেমনই অনেক ক্ষেত্রে গুজব ছড়ানো হয়েছে। ফ্যাক্ট-চেকাররা জানিয়েছেন, ভুয়ো পোস্টগুলি বেশিরভাগই ভারতীয় অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা। ভারতের অতি-দক্ষিণপন্থী 'ইনফ্লুয়েন্সর'রা বিভ্রান্তিকর পোস্ট শেয়ার করেন। তবে, কিছু পোস্ট বাংলাদেশ থেকে ছড়ানো হয়েছিল বলেও দাবি করা হয়েছে। পোস্টগুলিতে বলা হয়েছিল, হিন্দুদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, জ্বালানো হয়েছে কিন্তু মুসলমান বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছিল এবং আগুন লাগানো হয়েছিল বলে দাবি করেছে সংবাদমাধ্যমটি। 'বিবিসি'-তে লেখা হয়েছে, আক্রমণকারী উদ্যোক্তাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সম্পত্তিতে হামলা চালানো। ধর্মীয় পরিচয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গৌণ ছিল বলে লেখা হয়েছে। একাধিক ফ্যাক্ট চেকার দাবি করেছেন, ভারত থেকে করা পোস্টগুলিতে, বিষয়টিকে রাজনৈতিক না রেখে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসা আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদেরও বক্তব্য, আক্রমণ উভয় সম্প্রদায়ের ওপরেই হয়েছে।
'ব্র্যান্ডওয়াচ' অ্যাপের তথ্য অনুযায়ী, ১৪ অগাস্টের পর থেকে বিশেষ হ্যাশট্যাগ দিয়ে ভুয়ো তথ্য ছড়ানো হয়েছিল। নির্দিষ্ট একটি হ্যাশট্যাগ দিয়ে ৭ লক্ষ বার ভুয়ো তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এই অ্যাপটি সামাজিক মাধ্যমগুলির উপর নজর রাখে। ব্র্যান্ডওয়াচ থেকে জানা গিয়েছে, ট্রেন্ডিং পোস্টগুলি বেশিরভাগই ভারত থেকে করা হয়েছে। উল্লেখ্য, হিন্দু ক্রিকেটার লিটন দাসের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছিল। লেখা হয়েছিল, কট্টর ইসলামপন্থীরা তাঁর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। কিন্তু পরে জানা যায়, বাড়িটি বাংলাদেশের জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তাজার।
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের কিছুদিন পর টাইমস গ্রুপের মালিকাধীন 'মিরর নাও'-এর ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেটির শিরোনাম ছিল, 'বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলা? উত্তেজিত জনতার গণহত্যা, হত্যা।' ভিডিওটিতে দেখানো হয়েছিল, চারটি বাড়িতে (দু'টি বাড়ি মুসলিম) আগুন লাগিয়ে দেওয়া ও হিংসার ঘটনা। ৮ অগাস্ট ২০২৪-এর 'আল-জাজিরা'র একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিরর নাও-এর ভিডিওটির শিরোনাম বিভ্রান্তিকর। ভিডিওতে দাবি করা হয়েছিল, ২৪জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দাবি করা হয়, আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু নাকি সংখ্যালঘুরা। আল-জাজিরার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনও প্রমাণ ছাড়াই ভিডিওতে দাবি এমন নানা কিছু দাবি করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের দিন বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলিতে বলা হয়েছিল, সেদিনই দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে প্রায় ২০টি জেলার হিন্দুবাড়িতে হামলা ও লুটপাঠ চালানো হয়েছে। আল-জাজিরার একটি প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, তাঁদের প্রতিনিধিরা সেই জেলাগুলির বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন ধর্মীয় পরিচয়ের জন্য নয়, বরং রাজনৈতিক পরিচয়ের জন্যই আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। যেমন, বাংলাদেশের নরসিংদী জেলার বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান হিরু 'আল-জাজিরা' প্রতিনিধিকে বলেন, তাঁদের গ্রামের দু'টি বাড়িতে হামলে হয়েছে, দু'টি বাড়ির মালিকই আওয়ামী লীগের নেতা।
আরও পড়ুন- পেট ভরে খাইয়ে মানসিক ভারসাম্যহীনকে খুন ছাত্রদের! এটাই কি নতুন বাংলাদেশ?
উল্লেখ্য, এবছর জুলাই মাসে, গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর অল্টারনেটিভস (সিএ) এবং বাংলাদেশ পিস অবজারভারির (বিপিও) প্রতিবেদনে লেখা হয়েছিল, বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ৭০ ভাগই ভূমিকেন্দ্রিক। যার ফলে বারংবার সংখ্যালঘুদের সম্পদ এবং ধর্মীয় উপাসনালয়গুলিতে আক্রমণ চালানো হয়। বাংলাদেশ পিস অবজারভারি জানিয়েছে, ২০১৩ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর যে হিংসা চালানো হয় তার ধরন বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, এই দাঙ্গা সৃষ্টির ক্ষেত্রে অনেকটাই ভূমিকা থাকে ফেসবুকের ভুয়ো তথ্যের। প্রতিবেদনে মিথ্যে তথ্য ছড়ানো বেশ কয়েকটি ঘটনারও কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে এও বলা হয়েছিল, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মহিলারা হিংসার শিকার হন। সেন্টার ফর অল্টারনেটিভসের পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের কথায়, স্থানীয় নেতাদের মদতে এই হিংসাগুলি ছড়ায়। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বৃহত্তম সংগঠন 'হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ'-এর সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বক্তব্যের উদ্ধৃতি রয়েছে। এই হামলাগুলো করার মূল কারণ হল, যাতে সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভীতি তৈরি করা যেতে পারে এবং তারা জমি বিক্রি করে অন্য দেশে চলে যান। তাঁর কথায়, এই ঘটনাগুলির সঙ্গে বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষের কোনও সম্পর্ক নেই। ঘটনাগুলিতে যুক্ত থাকে লুটেরা, ভূমিদস্যু এবং সাম্প্রদায়িক শক্তিরা।
উল্লেখ্য, বহু সংখ্যালঘু মানুষ নিরাপত্তাহীনতার কারণে নাকি চোরা পথে ভারতে আসছেন। সীমান্ত পেরোতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে প্রাণও হারিয়েছেন একজন তরুণ। অনেকেই ধরা পড়েছেন। ১ সেপ্টেম্বর কিশোরী স্বর্ণা দাস মায়ের সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরায় থাকা ভাইকে দেখতে যাচ্ছিল। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রাণ হারায় স্বর্ণা। ৪ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ১ তারিখ রাতে স্বর্ণা মায়ের সঙ্গে ভাইকে দেখতে যাচ্ছিল স্থানীয় দুই দালালের সহযোগিতায়। রাত ৯ টা নাগাদ তাঁরা ভারতীয় সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার কাছে পৌঁছলে, বিএসএফের সদস্যরা গুলি চালান। ঘটনাস্থলেই স্বর্ণা নিহত হয়। ২০১১ সালে, সীমান্তে ১৫ বছর বয়সি ফেলানি খাতুনের মৃত্যু আলোড়ন ফেলেছিল। বাবার সঙ্গে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরছিল ফেলানি। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মারা যায়। তাঁর লাশ দীর্ঘক্ষণ কাঁটাতারে ঝুলছিল। এই মামলা সুপ্রিম কোর্ট অবধি গেলেও, কোনও বিচার হয়নি। বরং বিএসএফের ওই সদস্যকে বেকসুর খালাস দিয়েছিল বিএসএফ আদালত। মনে রাখতে হবে, হাসিনার সরকার পতনের পর ভারতের হাই কমিশন বাংলাদেশের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এতে যেহেতু বাংলাদেশের মানুষদের বৈধ পথে ভারতে আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তাই ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরোতে হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বরে ডয়েচে ভেলে, এক ভারতীয় মানবধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুমা) সচিব কিরীটি বলেছিলেন, 'এই সীমান্ত হত্যার পেছনে যে গল্প ফাঁদা হয়, তা-ও ঠিক না। তারা বলে, সীমান্ত দিয়ে গরু চোরাচালান হয়। চোরাচালানিদের হত্যা করা হয়। মনে হয় যেন, সীমান্তে গরু জন্ম নেয় আর তা বাংলাদেশে পাচার করা হয়। বাস্তবে এই সব গরু আনা হয় ভারতের অভ্যন্তরে দুই-আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরের হরিয়ানা, পঞ্জাব থেকে। গরুগুলো হাঁটিয়ে, ট্রাক-ট্রেনে করে আনা হয়। তখন কেউ দেখে না! তারা আটকায় না। কারণ, তারা ভাগ পায়। এখানে আসল কথা হল দুর্নীতি, ভাগ-বাঁটোয়ারার মাধ্যমে সব করা হয়। যখন ভাগ-বাঁটোয়ারা মেলে না, তখন বিএসএফ হত্যা করে।
আরও পড়ুন- এই মুহূর্তে কেমন আছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা?
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অভিনন্দন জানিয়ে বলেছিলেন, "আমরা আশা করছি দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে বাংলাদেশে। এবং হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।" পিটিআইয়ের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফোনালাপে ইউনূস বলেছিলেন, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা ও নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এই পরিস্থিতিতে ইউনূস বলেছেন, সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের বিষয়টি অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, "বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর হামলা সাম্প্রদায়িকতার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক।" বাংলাদেশ এবং ভারত দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধুত্বের সম্পর্কের কথা দাবি করে এসেছে। তবুও দুই দেশের সীমান্তে নিয়মিতভাবে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী নিয়মিত বাংলাদেশের মানুষদের উপর সীমান্তে গুলি চালায়। বহুদিন ধরেই প্রশ্ন উঠছে, দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকলে কেন একটি দেশ অন্যদেশের নাগরিকদের উপর গুলি চালায়?
প্রসঙ্গত, প্রায় প্রতিটি প্রতিবেদনেই উল্লেখ রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভুয়ো তথ্যের কথা। বর্তমান সময়ে সামাজিক মাধ্যমের বিস্তৃতিও ব্যাপক। সেন্টার ফর অল্টারনেটিভস (সিএ) এবং বাংলাদেশ পিস অবজারভারির (বিপিও) প্রতিবেদনে আগেই বলা হয়েছে এই ধরনের হিংসা বন্ধ করতে সরকার, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজকে একসঙ্গে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে। তাহলে, এত ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে যাওয়ার পরও কেন কোনও গুরুত্বপুর্ণ পদক্ষেপ করা হচ্ছে না? সেই প্রশ্ন থাকছেই।