মাঝ সমুদ্রে মন্দির, পাহারায় থাকে শতাধিক বিষধর সাপ! ৬০০ বছরের পুরনো এই স্থান আজও বিস্ময়

600 years old mysterious temple: বছরের পর বছর ধরে সুরক্ষার দায়িত্বে রয়েছে শত শত বিষধর সাপ, জানেন কোথায় আছে এই বিস্ময়কর মন্দির?

চারিদিকে অথৈ সমুদ্র, নীল জল আর তারই মাঝে একটা ভাঙাচোরা প্রাচীন মন্দির। বাইরের দেওয়ালের স্থাপত্য দেখলেই বয়স আঁচ করা যায়। প্রায় ৬০০ বছর আগে গড়ে উঠেছিল এই সামুদ্রিক বিস্ময়টি। তারপর সময়ের বহমানতায় বহু কিছুই বদলে গিয়েছে। সমুদ্রের ঢেউ এসে ধাক্কা দিয়েছে প্রাচীন মন্দিরের দেওয়ালে, অথচ একইরকম ঐতিহ্য নিয়ে আজও টিকে আছে এই জায়গা। বয়স যাই বা হোক, ভক্তি এবং ইতিহাসের জোরে প্রাচীন যা কিছু যে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে তা বলাই বাহুল্য। বিশ্বে আজও এমন অনেক জায়গা রয়েছে, ইতিহাসের পাতায় যার ব্যাখ্যা পড়লে রীতিমতো শিহরণ জাগে। এই যে মন্দিরটির কথা বলা হচ্ছে সেটিও সেই তালিকায় অন্যতম।

বিস্ময় এখানেই শেষ নয়, বরং শুরু। জানেন, সমুদ্রের মাঝে অবস্থিত এই প্রাচীন মন্দিরটির রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্বে আছেন কারা? শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি, কোনও মানুষ নয়, শতাধিক বিষধর সাপই রয়েছে এই দায়িত্বে। তারাই বছরের পর বছর ধরে রক্ষা করে আসছে মন্দিরটিকে। যদিও এই বিস্ময়কর মন্দিরটির অবস্থান এদেশে নয়। তা রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়।

ভারত তো বটেই এমনকি পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশেও প্রাচীন মন্দির নিয়ে অজস্র গল্পকথা এবং রহস্য আজও রয়ে গিয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো ইন্দোনেশিয়ার এই বিষধর সাপের মন্দিরটি। ইন্দোনেশিয়ার হলেও এই মন্দিরটি কিন্তু খোদ হিন্দু মন্দির। সুনীল সাগরের বুকে বালি দ্বীপের মাঝে একটি উঁচু পাথরের উপর প্রায় ৬০০ বছর ধরে অবস্থান এই মন্দিরটির। এই মন্দিরের পোশাকি নাম ‘তানাহ লট’। বালির সৈকতে এই বিশেষ মন্দিরটি ছাড়াও রয়েছে আরও ছয়টি মন্দির। এই মন্দিরগুলির একটি বিশেষত্ব রয়েছে। পর পর অবস্থিত এই সাতটি মন্দির আকারে এমন যা একটির থেকে আর একটি স্পষ্ট ভাবে দৃশ্যমান।

আরও পড়ুন - ইঁদুরের উচ্ছিষ্ট খাবারই প্রসাদ এখানে! কোন রহস্য লুকিয়ে আছে রাজস্থানের এই মন্দিরে

বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে পর্যটনে আগ্রহী প্রজন্মের কাছে ইন্দোনেশিয়ার বালি খুবই জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট। তাই এই অঞ্চলে বেড়াতে গেলে বিস্ময়কর এই মন্দিরটি দেখার কথা ভোলেন না পর্যটকেরা। এই মন্দির একবারা চাক্ষুষ করলে রীতিমতো শিহরণ জাগবে তা বলাই বাহুল্য।

‘তানাহ লট’ নামের এই এই মন্দিরটিকে ইন্দোনেশিয়ার বালির পৌরাণিক সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করা হয়। পৌরাণিক কাহিনী থেকে জানা যায়, ১৫ শতকে এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন নিরার্থ নামে এক পুরোহিত। এখানেই শেষ নয়, আরও জানা যায় যে এই মন্দিরটির সুরক্ষা হেতু রয়েছে পাথরের নীচে বসবাসকারী শত শত বিষাক্ত সাপ। আবার মন্দিরের কিংবদন্তী অনুসারে, একটি বিশালাকার সাপই এই মন্দিরটিকে অশুভ আত্মা এবং অশুভ অনুপ্রবেশকারীর হাত থেকে মুক্ত রাখে। আজও এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে। প্রাচীনত্ব এসে পা চেপে ধরে। অচিরেই ইতিহাসের সঙ্গে হাত বদল হয় বর্তমানের। আর সেই সূত্র ধরেই ৬০০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্য আজও রক্ষিত হয়।

More Articles