মোদি মন্ত্র নাকি অন্য চাল? চব্বিশের রাস্তা কতটা মসৃণ করল গুজরাত মডেল?
Gujrat Election : একদিকে, মোদি হয়ে উঠেছেন বিজেপি-র মানসপুত্র, অন্য দিকে, শাহ তাঁর প্রধান সেনাপতি
‘লোকাল টু গ্লোবাল’ না হলেও, ন্যাশনাল তো বটেই, গুজরাতে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) ‘ঐতিহাসিক’ জয়ে পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন নিয়ে শোনা যাচ্ছে এমনই ভবিষ্যদ্বাণী। কারণ এই নিয়ে পর পর সপ্তম বার গুজরাতে সরকার গড়ল বিজেপি, তাও আবার সর্বকালীন আসনে জয় পেয়ে। আর এই সাফল্যের মূল কারিগর বলে গণ্য হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই। সেই ২০০১ সাল থেকে ভূমিপুত্র মোদিকে কার্যত মাথায় করেই রেখেছে গুজরাত। সেখান থেকে লুটিয়েন্স দিল্লি পর্যন্ত তাঁর অদম্য হয়ে ওঠার যাত্রায় বরাবর ছায়াসঙ্গী হিসেবে থেকেছেন গুজরাতের আর এক ভূমিপুত্র অমিত শাহ। বিগত কয়েক বছরে বিজেপি-কে যে রাজনৈতিক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন মোদি-শাহ, শুধুমাত্র অঙ্কের হিসেবে তার ব্যাখ্যা সম্ভব নয়। বর্তমানে অভিভাবক সংস্থা রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘও কার্যত তাঁদের ইশারায় পরিচালিত হচ্ছে। একদিকে, মোদি হয়ে উঠেছেন বিজেপি-র মানসপুত্র, অন্য দিকে, শাহ তাঁর প্রধান সেনাপতি। তাই গুজরাত নির্বাচনের ফলাফল বেরনোর আগেই ২০২৪-এর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। গুজরাতের এই জয় বিজেপি-র গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
সাধারণত বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনকে এক আসনে দেখার পক্ষপাতী নন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাই প্রায় ৬.৫ কোটি জনসংখ্যার গুজরাতে ৫২.৫ শতাংশ ভোট লোকসভায় তৃতীয় দফায় মোদির প্রত্যাবর্তনে সিলমোহর দেবে, এমন ভবিষ্যদ্বাণী অবাস্তব বলেই ঠাহর হয়। কিন্তু বিগত আট বছরে দেশের রাজনৈতিক সমীকরণে যে রদবদল ঘটেছে, রাজনীতিক মোদি যেভাবে ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছেন, হিন্দুত্ববাদী আবেগ যেভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সর্বত্র, দিনে দিনে যেভাবে বিরোধী ঐক্য অলীক স্বপ্নে পরিণত হওয়ার দিকে এগোচ্ছে, তাতে অস্বীকার করার উপায় নেই যে, গুজরাতের জয় ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-কে আরও কিছুটা এগিয়ে দিল। এই কৃতিত্বের শ্রেয়ও মোদি-শাহেরই প্রাপ্য। কারণ গুজরাত নির্বাচনের প্রস্তুতিপর্ব থেকেই ২০২৪-এর ভিত গাঁথতে শুরু করেন তাঁরা। গুজরাতের বিজেপি সরকার নয়, সরাসরি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের জন্যই ভোটপ্রার্থনা করেন তাঁরা। গুজরাতকে পাশে পেলে তবেই দিল্লিতে ২০২৪-এ প্রত্যাবর্তন সম্ভব হবে, কোনও রকম রাখঢাক না করেই মোদ্দাকথা তুলে ধরেন প্রচারে। ভূমিপুত্রকে নিয়ে আবেগপ্রবণ গুজরাতিরা তাতে সাড়া দিতেনই। রাজনীতির এই ‘গুজরাত মডেল’ অন্য রাজ্যগুলিতেও বিজেপি-কে অক্সিজেন জোগাবে আগামী দিনে।
আরও পড়ুন : আপই কি নয়া ‘কংগ্রেস’? গুজরাত নির্বাচন যে প্রশ্ন তুলে ধরছে বারবার
১৮২ আসনের গুজরাত বিধানসভায় এ বার ১৫৬টি আসনে জয়লাভ করেছে বিজেপি। তাতে ভেঙে গিয়েছে এতদিন নজির হয়ে থাকা ১৯৮৫ সালে কংগ্রেসের তৎকালীন সরকারের সর্বোচ্চ ১৪৯ আসনের রেকর্ড। এমনকী ২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গার পরেও ১২৭ আসনেই থামতে হয়েছিল মোদি নেতৃত্বাধীন তৎকালীন গুজরাতের বিজেপি সরকারকে। গুজরাতে এ বার ৩১টি জনসভা করেন মোদি। গাড়িতে চেপে পথসভা করে পেরোন দীর্ঘ পথ। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল নন, সরাসরি নিজের নামে ভোট চান। ২০১৭-র নির্বাচনে পার্টিদার, দলিত সমর্থনে ভর করে যে ভাবে সমানে সমানে টক্কর দিয়েছিল কংগ্রেস, হার্দিক প্যাটেল, অল্পেশ ঠাকুরদের ভাঙিয়ে এনে, রাজ্য সভাপতি সিআর মাটিল মারফত তা এ বার রুখে দেন শাহ। তার ফলও মিলেছে হাতে হাতে। কংগ্রেস ৭৭ থেকে নেমে ১৭-য় চলে গিয়েছে। বিজেপি-র ভোট বেড়েছে। গুজরাতে তৃতীয় বিরোধী দল হিসেবে আম আদমি পার্টির উত্থান যেমন ঘটেছে, তেমনই জাতীয় রাজনীতিতে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে কংগ্রেসের যাবতীয় সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হতে শুরু করেছে। গুজরাত প্রতি বছর লোকসভায় ২৬ জন সাংসদ পাঠায়। বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলকে সামনে রেখে বলা যায়, ২০২৪-এর লোকসভায় সব যদি নাও হয়, ২০ জন সাংসদ পাওয়া প্রায় পাকা বিজেপি-র।
তবে ২০২৪-এ বিজেপি-কে সবচেয়ে সুবিধা করে দিতে পারে বিরোধী শিবিরের ছত্রখান অবস্থান। নির্বাচন কমিশনের তালিকা অনুযায়ী, এই মুহূর্তে দেশে জাতীয় দলের সংখ্যা সাত— অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস, বহুজন সমাজ পার্টি, ভারতীয় জনতা পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া, কমিউনিস্টি পার্টি অফ ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট), ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস এবং ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি। জাতীয় দল হিসেবে পরিগণিত হওয়ার মাপকাঠি হল, কমপক্ষে চার রাজ্যে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া। কোনও রাজ্যে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী দল হিসেবে স্বীকৃতি পেতে, অন্তত দু’টি আসনে জয়ী হওয়া আবশ্যক। সেই সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে অন্তত ৬ শতাংশ ভোট পাওয়া জরুরি। দিল্লি, পঞ্জাবে আগে থেকেই সরকার রয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ)। এ বছরই গোয়ায় দু’টি আসনে জিতেছে তারা। হিমাচলপ্রদেশ থেকে খালি হাতে ফিরতে হলেও, গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে পাঁচটি আসনে জয়ী হয়েছে আপ। শুধু তাই নয়, দু’ডজনের বেশি জায়গায় কংগ্রেসকে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানেও উঠে এসেছে তারা। এর আগে, সুরত পৌরসভা নির্বাচনেও ২৯ শতাংশ ভোট পায় আপ।
তাই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে জাতীয় দল হিসেবে আপের স্বীকৃতি পাওয়া পাকা। কারণ আপের এই উত্থানে বিজেপি-র আশঙ্কিত হওয়ার যত না কারণ রয়েছে, তার চেয়ে ঢের বেশি উদ্বিগ্ন বিজেপি বিরোধী শিবির। কারণ ২০১৪ সাল থেকে কেন্দ্রে প্রধান বিরোধী দলের জায়গা ধরে রাখলেও, একের পর এক রাজ্য হাতছাড়া হতে হতে শরিক দলগুলির কাছে গ্রহণযোগ্যতা কমেছে কংগ্রেসের। তার উপর দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব, অভ্যন্তরীণ নেতৃত্ব সঙ্কটে গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হয়েছে যথেষ্ট। এমন পরিস্থিতিতে বিরোধী জোটের নেতৃত্ব পেতে মুখিয়ে রয়েছে তৃণমূল এবং আপ। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভের পরই তাই সরাসরি বিরোধী ঐক্যের কথা নিজে থেকে পেড়েছিলে তৃণমূল নেত্রী মমতা। খোদ দিল্লি ছুটে গিয়েছিলেন। বৈঠক করেছিলেন সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, শরদ পওয়ার, এমনকি এমকে স্ট্যালিন এবং কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গেও।
সাত, সাত বারের সাংসদ, রেলমন্ত্রী থাকা মমতার এই তৎপরতা যেমন ভাল চোখে দেখেনি কংগ্রেস, তেমনই মাথার উপর অন্য কারও ছড়ি ঘোরানোয় অনীহা দেখান কেজরিওয়ালও। তাই কংগ্রেস, তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার বদলে, নিজের যোগ্যতা প্রমাণেই উদ্যোগী হন তিনি। পর পর দিল্লি পৌর নির্বাচন এবং গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের পারফর্ম্যান্সকে সামনে রেখে আগামী দিনে তিনি যে বিরোধী শিবিরের মুখ হতে চাইবেন, তা বলা বাহুল্য। কেসিআর বিজেপি-কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে তৃতীয় জোটের কথা বললেও, বাকিরা তাতে সায় দেবেন কিনা, আবার জোট হলেও, মোদির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নির্বাচন নির্বিঘ্নে হবে কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। তাই গুজরাতের ভোটপর্ব মিটতেই বিজেপি প্রস্তুতি শুরু করে দিলেও, ২০২৪-এ বিজেপি বিরোধী ঐক্যমঞ্চ গড়ে তোলার পথে জট সহজে কাটবে বলে মনে হচ্ছে না। কিন্তু কেন্দ্রে বিজেপি-র বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গেলে বিরোধীদের একজোট হওয়া জরুরি, তা যত শীঘ্র হয়, বিরোধীদের জন্য ততই মঙ্গল।
এ ক্ষেত্রে উদাহরণস্বরূপ তুলে ধরা যায় গুজরাতেরই সঙ্গে সম্পন্ন হিমাচলপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনকে। সেখানে মূলত বিজেপি বনাম কংগ্রেসের লড়াই ছিল, বিগত কয়েক দশক ধরে যেমন চলে এসেছে। এ বার সেখানেও পা রাখে আপ। কিন্তু সেখানে শাসক এবং বিরোধীকে, বুঝতে কোনও অসুবিধাই হয়নি সাধারণ মানুষের। নির্বাচনে নাম লেখালেও, জনমোহিনী প্রতিশ্রুতি দিলেও, গুজরাতেই পুরোপুরি মনোনিবেশ করেছিল আপ, ফলে বিরোধী দল নিয়ে কোনও ধন্দ তৈরি হয়নি। তার সুফল পেয়েছে কংগ্রেস। সরাসরি লড়াইয়ে বিজেপি-কে ধরাশায়ী করেছে তারা। সামনে এসে গিয়েছে বিজেপি-র খামতিগুলিও। অর্থাৎ বিজেপি যে অদম্য কোনও শক্তি নয়, তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। এর পাশাপাশি, ২০২৪-এর আগে কর্নাটক, তেলেঙ্গানা, রাজস্থান, ছত্রিশগড় এবং মধ্যপ্রদেশেও বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। কর্নাটকে কংগ্রেসের ডিকে শিবকুমার এবং সিদ্দারামাইয়ার মধ্যেকার বিবাদ চাপা না থাকলেও, সেখানে বিজেপি-ও খুব একটা সুবিধাজনক জায়গায় নেই। বাসবরাজ বম্মাইয়ের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরেই। অশোক গহলৌত বনাম সচিন পায়লটের দ্বন্দ্বে রাজস্থানে কংগ্রেসের সঙ্কট না কাটলেও, তেলেঙ্গানা, ছত্রিশগড় এমনকী মধ্যপ্রদেশেও প্রত্যাশা রয়েছে কংগ্রেসকে ঘিরে।
আরও পড়ুন : গুজরাত ভোটে তিনিই ‘চাণক্য’, অমিত শাহর ছোট্ট চালে যে ভাবে কিস্তিমাত ‘ব্র্যান্ড মোদি’-র
রাজস্থান, গুজরাত, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল, হরিয়ানা এবং দিল্লি যথাক্রমে ২৫, ২৬, ৫, ৪, ১০ এবং ৭ জন সাংসদ পাঠায় লোকসভায়। উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক এবং মধ্যপ্রদেশ থেকে লোকসভায় যাওয়া সাংসদের সংখ্যা যথাক্রমে ৮০, ২৮ এবং ২৯। বিহার এবং মহারাষ্ট্র রাজ্য দু’টিও গুরুত্বপূর্ণ। শিবসেনা এবং সংযুক্ত জনতা দল, দুই দলই বিজেপি-র সঙ্গ ত্যাগ করেছে। মহারাষ্ট্রে একনাথ শিন্ডের সঙ্গে হাত মিলিয়ে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনাকে বিজেপি ক্ষমতাচ্যূত করলেও, মামলা এখনও সুপ্রিম কোর্টে। সিবসেনার আসল দাবিদার নিয়েও চলছে মামলা। বিহারে রাষ্ট্রীয় জনতা দল এবং সংযুক্ত জনতা পার্টি বিজেপি-র বিরুদ্ধে একজোট। বিরোধী জোট ঐক্যবদ্ধ হলে, হিসেব-নিকেশ পাল্টে যেতে পারে, তা বিলক্ষণ জানে বিজেপি-ও। ২০১৯সালে ২৫০-২৬০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই এগোচ্ছিল তারা। তার ঠিক আগে পুলওয়ামার জঙ্গি হামলা এবং তার জবাবি বালাকোট অভিযান বিজেপি-র ৩০৩টি আসন জেতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২০১৯-এর চেয়ে এই মুহূর্তে আরও বেশি সুবিধাজনক জায়গায় মোদি। তবে ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহার, রাজস্থান, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা এবং দিল্লি, যে ১১টি রাজ্য থেকে ৩০৩টির মধ্যে ২৩১ আসন জিতেছিল বিজেপি, তার মধ্যে মহারাষ্ট্র (৪৮), বিহার (৪০), কর্নাটক (২৮) এবং দিল্লিতে (৭) সম্ভাবনা রয়েছে বিরোধীদের। তবে তুরুপের তাস হাতে রেখেছেন মোদিও। আগামী বছর আন্তর্জাতিক জি-২০ সম্মেলন আয়োজনের দায়িত্ব পাচ্ছে ভারত। মোদির আমলেই বহির্বিশ্বে ভারত সম্মানজনক জায়গায় পৌঁছেছে বলে এমনিতেই বিজেপি-র তরফে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চলছে গত কয়েক বছর ধরে। জি-২০ সম্মেলনের পর রাষ্ট্রনেতা হিসেবে মোদির ভাবমূর্তিতে আরও ধার বাড়বে। তা মিটলেই, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অযোধ্যায় খুলে দেওয়া হবে রামমন্দির। ২০২৪-এর জানুয়ারিতে তার উদ্বোধন করবেন খোদ মোদি। এমনকি অযোধ্যার মাঠ-ময়দান থেকেই তিনি নির্বাচনী প্রচার শুরু করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। বর্তমান দিনে ভোটবাক্সে তার প্রভাব কী হতে পারে, তা আঁচ করা কঠিন নয়। তাই বিজেপি বিরোধী দলগুলি মান-অভিমান, ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে না পারলে, কোনওভাবেই বিজেপি-কে রোখা সম্ভব নয়।
২০২৪-এ মোদিই ফের প্রধানমন্ত্রী হবেন কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান কেউ কেউ। কারণ বিজেপি-র অলিখিত নিয়ম অনুযায়ী, বয়স ৭৫-এ পৌঁছলে নেতাদের মন্ত্রিত্ব বা প্রাতিষ্ঠানিক পদ আঁকড়ে থাকা দলের নিয়মবিরুদ্ধ। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের সময় ৭৩ বছর বয়স হবে তাঁর। তাই মোদিকে মুখ করা হলেও, অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী করা হতে পারে, বা বয়সের কারণে মোদি মাঝপথে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে অন্য কাউকে রাস্তা করে দিতে পারেন, এমন যুক্তিও উঠে আসছে। কিন্তু বিজেপি তো বটেই, সঙ্ঘও একরকম ভাবে মোদির জনপ্রিয়তা নির্ভর হয়ে পড়েছে। তাই মোদির জন্য নিয়মের হেরফের হওয়া মোটেই আশ্চর্যজনক নয়।