বছর কুড়ির বন্দুকবাজ নয়, সত্যিই ট্রাম্পকে হত্যার ছক কষছে ইরান?
Donald Trump Assassination: থমাস ম্যাথিউ ক্রুকসের সাম্প্রতিক জনসভাতে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় সে এই পরিকল্পনার অংশই নয়।
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তথা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কান ঘেঁষে বেরিয়ে গেছে গুলি। প্রাণে বেঁচেছেন ঠিকই কিন্তু কঠোর মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের নিরাপত্তা পেরিয়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা নিয়ে বিশ্বের রাজনীতি তোলপাড়। থমাস ক্রুক নামের বছর কুড়ির ওই বন্দুকবাজের প্রাণও গেছে নিরাপত্তাকর্মীদের পাল্টা গুলিতে। কিন্তু মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস মনে করছে ক্রুক একা নয়, ট্রাম্পকে হত্যার নেপথ্যে রয়েছে ইরানের চক্রান্ত।
গোয়েন্দাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, ইরান ট্রাম্পকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। বাইডেন প্রশাসন বিভিন্ন মানুষের থেকে তো বটেই, অন্যান্য নানা উত্স থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করেছে, যাতে ইঙ্গিত মিলেছে ট্রাম্পকে নিকেশ করার নেপথ্যে তেহরানের হাত আছে। নভেম্বরের নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের জীবনহানির একাধিক আশঙ্কার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন- বছর ২০-র যুবক! ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করল কে?
গোয়েন্দারা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি মানব সূত্র থেকে তথ্য পেয়েছে যে ট্রাম্পকে হত্যার ছক কষেছে তেহরান। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, যে থমাস ম্যাথিউ ক্রুকসের সাম্প্রতিক জনসভাতে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় সে এই পরিকল্পনার অংশই নয়। ইরানের চক্রান্তের সঙ্গে থমাস ক্রুকস কোনওভাবেই যুক্ত নয়।
ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল বছরের পর বছর ধরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইরানের হামলার কথা বলে আসছে, তদন্ত করছে। মূলত কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার আদেশ দেওয়ার সিদ্ধান্তের পরেই ট্রাম্পের প্রতি ইরানের এই বিদ্বেষ জন্মেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রাক্তন কর্মকর্তারা, যেমন সেক্রেটারি অফ স্টেট মাইক পম্পেও এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন এর আগে ইরানের থেকে হুমকি পেয়েছেন।
নিজের রাষ্ট্রপতিত্বের প্রথম মেয়াদে, ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান পরমাণু চুক্তি (জেসিপিওএ) থেকে প্রত্যাহার করে নেন ট্রাম্প। ইরানের উপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন যার জেরে ইরানের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইরান সরকার সেই 'অপমান' ভুলতে পারেনি।
আরও পড়ুন- ট্রাম্প ৭৮, বাইডেন ৮১! যুক্তরাষ্ট্র দখলের লড়াইয়ে দুই বৃদ্ধ, মানুষের কথা কে ভাববে?
২০২০ সালে ট্রাম্প ইরানের জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যার নির্দেশ দেন। ইরানের একজন শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন সোলেইমানি। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর মৃত্যু ইরানের কাছে বড় ধাক্কা ছিল। ইরানের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত বলেওছিলেন, 'যুদ্ধ শুরু করার মতো' পরিস্থিতি আসতে চলেছে। ট্রাম্পকে নিশানা করার ইরানি চক্রান্তের পেছনে সোলেইমানির হত্যাকাণ্ডই মূল উদ্দেশ্য হতে পারে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং এফবিআইয়ের যৌথ তদন্তে তাই প্রতিশোধমূলক কোনও কার্যকলাপ সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। ট্রাম্প এবং বাইডেন, দু'জনকে ঘিরেই এখন শক্তিশালী নিরাপত্তা রয়েছে। তা সত্ত্বেও গুলি চলেছে ট্রাম্পের উপর। সেই ঘটনার রেশ ধরে রেখেই, সিক্রেট সার্ভিস উন্মুক্ত পরিবেশে সমাবেশের আয়োজনে বাধা দিচ্ছে। আরও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে জনসভা করার কথা বলছেন গোয়েন্দারা।
সত্যিই কি ইরানের হাত রয়েছে ট্রাম্পকে হত্যার ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে? জাতিসংঘে ইরানের এই হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগকে মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিয়েছে। ইরান বলছে, সোলেইমানি হত্যার বদলার নিতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইনি পথেই হাঁটবে তেহরান। ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেছেন, "শহিদ জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার অপরাধে ট্রাম্পের সরাসরি ভূমিকার জন্য ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতেই বদ্ধপরিকর।"