প্রথা ভেঙে প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট? নাকি ‘আব কি বার’ ট্রাম্প সরকারেই ঝুঁকছে আমেরিকা?

US Presidential Election 2024: দেশের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই বেছে নেবেন আমেরিকাবাসী, নাকি এ বারও নিজেদের আসন ধরে রাখবে ডেমোক্র্যাট? কার দখলে থাকবে শেষমেশ হোয়াইট হাউস?

বহু আগে থেকেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে। শুধু মার্কিন মূলুকেই নয়, গোটা বিশ্বেই এই ভোট বড়সড় মাথাব্যথার বিষয়। তার আগে আমেরিকা দিয়ে বয়ে গিয়েছে বহু জল। শারীরিক অসুস্থতা ও বয়সের কারণে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রেসিডেন্ট ভোট থেকে সরে দাঁড়ানো। তার জায়গায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিসের ভোটে দাঁড়ানো, রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের কান ঘেঁষে আততায়ীর গুলি বেরিয়ে যাওয়া। নানা ঘটনা-অঘটনে শেষমেশ মঙ্গলবারই ভোটদান মিটল আমেরিকায়। এখন অপেক্ষা ফলাফলের। দেশের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই বেছে নেবেন আমেরিকাবাসী, নাকি এ বারও নিজেদের আসন ধরে রাখবে ডেমোক্র্যাট? কার দখলে থাকবে শেষমেশ হোয়াইট হাউস?

ভারতের লোকসভা ভোটে মুখ থুবড়ে পড়েছিল বুথ ফেরত সমীক্ষা। আমেরিকাতেও কি তেমনটাই হতে চলেছে? কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের পর অধিকাংশ বুথ ফেরত সমীক্ষাই এগিয়ে রেখেছিল ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিসকে। কিন্তু ভোটগণনা শুরু হতেই দেখা গেল উলটপূরাণ। জো বাইডেন ভোটে প্রার্থী হওয়ার লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর পর দলের মধ্যেই সমর্থন জোগাড় করতে বেশ কসরৎ করতে হয়েছিল কমলাকে। পরে অবশ্য সেসব দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটিয়ে নিজের জায়গা করে নেন এই ডেমোক্র্যাট নেত্রী। এই ভোটে যদি তিনি জিততে পারেন, তাহলে কমলা আমেরিকায় ইতিহাস গড়তে চলেছেন। তিনিই হতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে ট্রাম্প,অতীতে তিনি একবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সি দখল করেছেন। শেষবারও জো বাইডেনকে জোর টক্কর দেন ট্রাম্প। এ নিয়ে তৃতীয়বার তাঁর প্রেসিডেন্ট ভোটে দাঁড়ানো। এবার জিতে ক্ষমতায় এলে দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হবেন তিনি। তার জন্য কম কাঠখড় তো পোড়াননি ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে তাঁর কান ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছে আততায়ীর গুলি। একবার নয়, একাধিক বার হামলার চেষ্টা হয়েছে তাঁর উপরে। কানাঘুষো শোনা যায়, ট্রাম্পকে কুর্সিতে ফিরিয়ে আনতে নির্বাচনী প্রচারে নাকি কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢেলেছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক।

আরও পড়ুন: বন্দুকের নলই আমেরিকায় ক্ষমতার উৎস

আমেরিকার নির্বাচনের পদ্ধতি কিন্তু বেশ জটিল। মার্কিন মুলুকে ভোটারদের সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় না। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে (ফেডারেল) নির্বাচনী লড়াইয়ের বদলে জয়ী-পরাজিত নির্ধারিত হবে একেকটি প্রদেশের নির্বাচনী লড়াইয়ের মাধ্যমে। আমেরিকার ৫০টি প্রদেশের একটিতে জয়ী হওয়ার অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রার্থী সেই প্রদেশের সব ক’টি ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ ভোট পেয়ে যাবেন। যেমন, টেক্সাসে ৪০ জন ইলেক্টর রয়েছেন। কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি এই প্রদেশে বেশি ভোট পাবেন, তিনিই প্রদেশের ৪০ জন ইলেক্টরকে জিতে নেবেন। ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮। মাইনে এবং নেব্রাসকা এই দু’টি প্রদেশ বাদে বাকি সবগুলি রাজ্যের ইলেক্টোরাল ভোট যোগ করলে যে প্রার্থী ২৭০টি বা তারও বেশি ভোট পাবেন তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। সেই প্রার্থীর রানিং মেট হয়ে যাবেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট। আগামী ১৩ ডিসেম্বর ইলেক্টরেরা সংশ্লিষ্ট প্রাদেশিক রাজধানীতে জড়ো হয়ে তাঁদের দলের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্ব শেষ করবেন।

আমেরিকায় প্রতিটি প্রদেশে ভোটের পদ্ধতির নির্দিষ্ট বিধি রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই তা পরস্পরের থেকে আলাদা। মোটের উপর ভোটারেরা তিনটি প্রাথমিক পদ্ধতির মাধ্যমে ভোট দেন। প্রথম হচ্ছে, হ্যান্ডমার্ক করা কাগজের ব্যালট। যা প্রেসিডেন্ট ভোটে সবচেয়ে প্রচলিত এবং সহজ পদ্ধতি, প্রায় ৭০ শতাংশ কাগজের ব্যালট ব্যবহার করে এই পদ্ধতিতে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেন। দ্বিতীয় হল, ব্যালট মার্কিং ডিভাইস (বিএমডি)।২৫ শতাংশেরও বেশি ভোটার ব্যবহার করেন এই কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ভোটদান পদ্ধতি। ভোটারদের একটি স্ক্রিনে বিকল্প নির্বাচন করতে দেয় এবং তার পর তাঁদের পছন্দ নিশ্চিত করতে একটি কাগজের ব্যালট প্রিন্ট করা হয় এই ব্যবস্থায়। ‘হেল্প আমেরিকা ভোট অ্যাক্ট’ (হাভা) মেনে চালু করা এই পদ্ধতিতে বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ পদ্ধতিও রয়েছে। এবং সর্বশেষ হল, ডাইরেক্ট রেকর্ডিং ইলেক্ট্রনিক (ডিআরই)।এই বৈদ্যুতিন যন্ত্রনির্ভর পদ্ধতি অনেকটা আমাদের ইভিএমের মতোই। কোনও কাগজ ছাড়া ইলেকট্রনিক ব্যবস্থায় জনতার রায় ‘মেমোরি’-বন্দি করা হয়। লুইজ়িয়ানা এবং নেভাদায় চালু এবং পদ্ধতিতে মোটের উপর ৫ শতাংশ ভোটার আস্থাশীল। কিন্তু গত ভোটে নেভাদায়ায় এই পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধায় এ বার ভোটদানের হার কম হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ভোট গণনার ক্ষেত্রে হাতে-চিহ্নিত কাগজের ব্যালট এবং বিএমডি-তে দেওয়া ভোটগুলি সাধারণত ‘অপটিক্যাল স্ক্যানার’ ব্যবহার করে স্ক্যান করা হয়। এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় ভাবে ফলাফল নথিভুক্ত করা যায়। এই প্রক্রিয়াটি একটি প্রাদেশিক-স্তরের নির্বাচন কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করেন। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে গণনার পাশাপাশি প্রয়োজনে হাতে ভোটগণনারও ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া আগাম ভোটের ক্ষেত্রে চালু ‘মেইল ইন ব্যালট’ ব্যবস্থায় দেওয়া ভোটের বৈধতা যাচাই এবং গণনার প্রক্রিয়াও রয়েছে কয়েকটি প্রদেশে। প্রাদেশিক নির্বাচন কর্তৃপক্ষকে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফলাফল ফেডেরাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করতে হয়।

ভোট গণনা শুরু হতে না হতেই কিন্তু মুখ থুবড়ে পড়তে শুরু করেছে বুথ ফেরত সমীক্ষা। অধিকাংশ বুথ ফেরত সমীক্ষাই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে এগিয়ে রাখলেও যত সময় যাচ্ছে ততই ম্যাজিক সংখ্যার দিকে এগোচ্ছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার বিকেল থেকেই (ভারতীয় সময়) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত তথা অন্তিম পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮। জাদুসংখ্যা ২৭০। যা দেখা যাচ্ছে, তাতে সেই জাদুসংখ্যার দিকেই ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। দেখা যাচ্ছে, ৫০টি প্রদেশের মধ্যে বেশিরভাগই দখলে রেখেছেন রিপাবলিকানরা। জানা যাচ্ছে, বেলা বারোটা পর্যন্ত পাওয়া ফলাফল অনুযায়ী, মোন্টানা, ইডাহো, উটাহ, উওমিং, নর্থ এবং সাউথ ডাকাটো, নেব্রাস্কা, কানসাস, ওকলাহোমা, টেক্সাস, মিসৌরি, আইওয়া, আরকানসাস, লুইজ়িয়ানা, মিসিসিপি, টেনেসি, কেনটাকি, ইন্ডিয়ানা, ওহিয়ো, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, সাউথ ক্যারোলাইনা, আলাবামা ও জর্জিয়াতে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে ওয়াশিংটন, ওরেগন, ক্যালিফর্নিয়া, কোলোরেডো, নিউ মেক্সিকো হাওয়াই, ইলিনয়, নিউ ইয়র্ক, নিউ হ্যাম্পশায়ার, ভেরমন্ট, কানেকটিকাট, নিউ জার্সি, মেরিল্যান্ড, ভার্জিনিয়াতে ইতিমধ্যেই জয় পেয়ে গিয়েছেন কমলা হ্যারিস। তবে এখনও অন্তত ৮টি প্রদেশে ভোটগণনা চলছে। নেভাডা, অ্যারিজ়োনা, আলাস্কা, মিনেসোটা, উইসকনসিন, মিশিগান, পেনসিলভেনিয়া, মাইনে-তে এখনও চূড়ান্ত ফলপ্রকাশ হয়নি। সেই সব জায়গার ফলাফল হাতে এলেই মোটামুটি একটা আন্দাজ পাওয়া যাবে হোয়াইট হাউস দখলে রাখবে কারা, তা নিয়ে।

কার্যত এই মুহূর্তে খাদের ধারে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ডেমোক্র্যাট কমলা। কারণ হাওয়া বলছে, এক রকম ভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সি সুরক্ষিত করেই ফেলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মোটামুটি বেলা বারোটা পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলের হিসেবে আপাতত কমলার ঝুলিতে রয়েছে ২২৪টি ইলেক্টোরাল কলেজ। সেখানে ট্রাম্পের ঝুলিতে রয়েছে ২৬৭টি। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য তাঁর প্রয়োজন আর মাত্র ২৩টি কলেজ। ১৯৯৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে জর্জিয়ায় জিতে আসছিল রিপাবলিকানরা। ২০২০ সালে একেবারে অল্প ব্যবধানে জিতেছিলেন জো বাইডেন। সেই জর্জিয়া ফের ছিনিয়ে নিয়েছেন টাম্প। সুইং স্টেটেও আপাতত কমলা হ্যারিসদের অবস্থা তেমন ভালো নয়। ইতিমধ্যেই সেখানে চারটি প্রদেশে এগিয়ে ট্রাম্প। নর্থ ক্যারোলিনা ইতিমধ্যেই হাতছাড়া হয়েছে কমলার। নিউ হ্যাম্পশায়ারে তিনি জিতলেও তাতে তেমন লাভ হচ্ছে না ডেমোক্র্যাটদের। কারণ সেখানে ইলেক্টোরাল কলেজের সংখ্যা মাত্র চারটি। এদিকে ট্রাম্প এগিয়ে থাকার খবর পেয়েই তাঁর নির্বাচনী রাতের ভাষণ বাতিল করেছেন কমলা। 

ইতিমধ্যেই পেনসিলভেনিয়ার ভোটে আবার ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন ট্রাম্প। সুইং স্টেটগুলির একটি এই পেনসিলভেনিয়া। আমেরিকার ইতিহাসে পেনসিলভেনিয়ার গুরুত্ব খুবই। তাই এই প্রদেশ দখলের লড়াইয়ে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। ট্রাম্প হোক বা ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস, দু’জনেরই ‘পাখির চোখ’ পেনসিলভেনিয়া। প্রচারের শেষবেলাতেও দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে ছুটে যেতে দেখা গিয়েছে এই প্রদেশে। ২০২০ সালেও একই অভিযোগ তুলেছিলেন ট্রাম্প। সে বার পেনসিলভেনিয়াতে হারের পর প্রথম প্রতিক্রিয়া হিসাবে ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন ভোট কারচুপির। এ বার যখন আমেরিকার ভোটপ্রক্রিয়া মধ্যগগনে তখন একই অভিযোগ শোনা গেল প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের মুখে। যদি সেই প্রদেশের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, ট্রাম্প ‘বিভ্রান্তি’ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিনটনের মুখ থেকে পেনসিলভেনিয়া ছিনিয়ে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু ২০২০ সালে নির্বাচনে সেখানেই হারতে হয় ট্রাম্পকে। লাল পতাকা নামিয়ে ডেমোক্র্যাটেরা পেনসিলভেনিয়া উড়িয়েছিলেন নীল পতাকা। সে বার ভোটের ফলাফল অস্বীকার করেছিলেন ট্রাম্প। তবে এবার সেই প্রদেশে ফের জয়ধ্বজা উড়িয়েছেন ট্রাম্পই। 

আরও পড়ুন: ভোটারদের কোটি কোটি টাকা ‘পুরস্কার’! কেন ট্রাম্পের হয়ে সালিশি করছেন এলন মাস্ক?

হোয়াইট হাউজের ক্ষমতা কার হাতে থাকবে, তা যে শুধু আমেরিকাবাসীর মাথাব্যথার বিষয় তা কিন্তু বলা যায় না। মার্কিন প্রেসিডেন্টের তখতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব। আমেরিকার মসনদে কে থাকবেন, তা নিয়ে বিশ্ব রাজনীতিরও অনেক কিছুই এসে যায়। কারণ আমেরিকা বহু আন্তর্জাতিক মামলাতেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় রয়েছে। ভারতের ক্ষেত্রে কতটা প্রভাব পড়তে চলেছে মার্কিন এই ভোটের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ভোটে এগিয়ে থাকা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌহার্দ্যের কথা কারওরই অজানা নয়। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস নিজেই একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর অবশ্য জানাচ্ছেন, মার্কিন মসনদে যে-ই বসুক না কেন, আমেরিকার সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কে তার প্রভাব পড়বে না। বরং তা উত্তরোত্তর ভালোর দিকেই যাবে। সম্প্রতি ক্যানবেরায় অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রী পেনি ওংয়ের সঙ্গে একটি যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করার সময় তেমনটাই জানালেন জয়শঙ্কর। তবে মুখে এখন তিনি যা-ই বলুন না কেন, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে বারবার ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে অভিবাসী নীতি নিয়ে ঢিলেমির কথা। এমনকী আমেরিকার গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হিসেবেও ডেমোক্র্যাটদের তুলে ধরেছেন ট্রাম্প। অভিবাসন নীতি নিয়ে  বরাবরই কড়া অবস্থান দেখিয়ে এসেছেন ট্রাম্প,  বিশেষ করে তাঁর H-1B ভিসা প্রোগ্রাম নিয়ে বিধিনিষেধের কারণেও অতীতেও সমস্যায় পড়েছেন আমেরিকায় কাজ করতে যাওয়া ভারতীয়রা। পাশাপাশি ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্ক নীতিও যে ভারতের আইটি, ফার্মাসিউটিক্যাল এবং টেক্সটাইল সেক্টরগুলির উপর প্রভাব ফেলবে না, এমনটাও খুব একটা জোর গলায় বলা যাচ্ছে না। 

শেষপর্যন্ত কী হতে চলেছে আমেরিকায়? আন্তর্জাতিক রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে প্রথম বার কোনও নারীর হাতে মার্কিন মুলুকের ভার দেবেন আমেরিকাবাসী, নাকি পুরনো তাসেই ভরসা রাখতে চলেছেন তাঁরা? আবকে বার কি ট্রাম্প সরকারই আসতে চলেছে সেখানে নাকি যে কোনও মুহূর্তে পাল্টে যেতেও পারে পাশা? তা জানতে আরও কিছু মুহূর্তের অপেক্ষা কেবল।

More Articles