১২ দিন পর অবশেষে মুক্তি! কীভাবে সুড়ঙ্গ থেকে বের করা হচ্ছে ৪১ শ্রমিককে?

Uttarakhand tunnel collapse : শ্রমিকদের বের করে আনার জন্য চওড়া ওই পাইপ ধ্বংসাবশেষের মধ্য দিয়ে ঠেলে ঢোকানো হয়েছে।

উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা টানেলে উদ্ধার কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। হয়তো আরও কিছু ঘণ্টার মধ্যেই আটকে পড়া শ্রমিকদের বের করে আনা হবে গর্ত থেকে, নিরাপদে। ৪১ জন পরিযায়ী শ্রমিক ওই সুড়ঙ্গে গত ১২ দিন ধরে আটকা পড়ে রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত শ্রমিকরা নিরাপদেই আছেন। একটি বিশেষ পাইপ প্রবেশ করিয়ে তাঁদের খাবার পাঠানো হয়েছে। এমনকী ক্যামেরা পাঠিয়ে তারা কেমন আছে তাও রেকর্ড করা হয়েছে, বাড়ির মানুষদের সঙ্গে কথাও বলানো হয়েছে। কিন্তু ১২ দিন ধরে কেন উদ্ধার করা গেল না?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হিমালয় ভূতত্ত্ব নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যায় না। সকলেই জানেন এই অঞ্চল ভূতাত্বিকভাবে দুর্বল। সেখানে এই টানেল নির্মাণ নিজেই এক বিতর্কিত সরকারি কাজ। এরই মধ্যে উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য যে প্রতিবন্ধকতাগুলির মুখে পড়তে হচ্ছে তা গোটা কাজটি প্রায় পাঁচ দিন পিছিয়ে দিয়েছিল। তবে গত কয়েকদিনে উদ্ধারকাজের গতি বাড়ে।

প্রযুক্তিগতভাবেই এগোনো হচ্ছে শ্রমিকদের উদ্ধারের কাজে কিন্তু হিমালয় অঞ্চলের ভূতত্ত্ব এমন যে এই নিয়ে আগাম কোনও কিছুই বলা সম্ভব না। ১২ নভেম্বর ওই শ্রমিকরা আটকা পড়েন, ১৬, ১৭ নভেম্বর করেই উদ্ধারকার্যে বাধার মুখে পড়েন উদ্ধারকারীরা।

আরও পড়ুন- ১০ দিন ধরে সুড়ঙ্গে আটকে ৪০ শ্রমিক! উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয় মনে করাচ্ছে প্রিন্স উদ্ধারের ঘটনা

এখন একটি ৮০০ মিমি ব্যাসের পাইপ তৈরি করা হয়েছে। সেই পাইপ সুড়ঙ্গের ভেতরে প্রেবেশ করানো হয়েছে। যেহেতু শ্রমিকরা ১২ দিন ধরে আটকে রয়েছেন, ফলে দৈহিক শক্তির মাত্রা কম হবেই তাঁদের। সেক্ষেত্রে এনডিআরএফ কর্মীরা এই পাইপ দিয়েই ভিতরে গিয়ে তাদের বের করে আনবেন। আর যদি শ্রমিকদের পর্যাপ্ত শক্তি থাকে, ১২ দিন পরেও ধীরে ধীরে নিজেরাই হামাগুড়ি দিতে বেরিয়ে আসতে পারে তাহলে সবচেয়ে ভালো। তবে এতদিন আটকে থাকা, এবং আবারও পাইপের মধ্যে দিয়ে বেরনো ক্লস্ট্রোফোবিয়া বা দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। সেক্ষেত্রে এনডিআরএফ স্ট্রেচারের ব্যবহার করবে।

শ্রমিকদের বের করে আনার জন্য চওড়া ওই পাইপ ধ্বংসাবশেষের মধ্য দিয়ে ঠেলে ঢোকানো হয়েছে। ধ্বংসাবশেষের মধ্য দিয়ে এক ঘণ্টায় প্রায় ৩ মিটার ড্রিল করে পাইপ ঢোকানো হয়েছে। এই পাইপ ঢোকানোর সময় ধাতব বাধাও এসেছে। ধ্বংসাবশেষের মধ্যে স্টিলের রড মিলেছে, মেশিন সেই রডগুলি কাটতে পারেনি। শ্রমিকদের সরিয়ে আনার জন্য যে নতুন পাইপ বসানো হয়েছে, তা ওই ধসে পড়া সুড়ঙ্গের নীচ দিয়েই গেছে। মানে ধ্বংসাবশেষের চাপ রয়েছে এই পাইপের উপরে। সেই চাপে তা যদি ভেঙে পড়ে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়? এই পাইপটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা এড়াতে নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্ল্যাডিং যুক্ত করা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা বাড়ানোর জন্য বেশ কয়েকটি সরকারি দফতর এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারদেরও যুক্ত করা হয়েছে।

৪১ টি অ্যাম্বুলেন্সের পাশাপাশি, এই উদ্ধার অভিযানের শেষ পর্যায়ে একটি হেলিকপ্টারও রাখা হতে পারে। স্থানীয় কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে এই সমস্ত আটকা পড়া শ্রমিকদের থাকার জন্য একটি বিশেষ ওয়ার্ডও প্রস্তুত করা হয়েছে।

More Articles