কল্পতরু রেল! বন্দে ভারত মেট্রো কবে আসছে?

Vande Bharat: এবার চেয়ার কার থেকে প্রোমোটেড হয়ে স্লিপারের দিকে যাত্রা শুরু করতে চলেছে বন্দেভারত। আর কী কী চমক? জানুন..

গত এক বছরে সবচেয়ে বেশি হইচই যদি কোনও ট্রেন নিয়ে হয়ে থাকে, তবে তা বন্দে ভারত। জন্মলগ্ন থেকেই বিক্ষোভকারীদের নিশানায় ছিল এই ট্রেন। কখনও বন্দে ভারত-কে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয়েছে পাথর, তো কখনও অবরোধের মুখে পড়েছে ট্রেনটি। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উদ্বোধন, তার পর থেকেই নানা ভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছে বন্দে ভারত। তবে নিন্দুকেরা যা-ই বলুন না কেন, ট্রেন চড়তে যারা ভালোবাসেন, তারা কিন্তু দিব্যি পছন্দ করেছেন ট্রেনটিকে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাব, আরামদায়ক আসন, সময়ের আগে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি এলাহি খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা। অল্প দিনেই পর্যটকদের মন টেনেছে এই ট্রেন। এবার আরও এক ধাপ পদোন্নতি হতে চলেছে বন্দেভারত এক্সপ্রেসের। এতদিন পর্যন্ত এই ট্রেনে কেবলমাত্র বসে যাওয়ারই ব্যবস্থা ছিল যাত্রীদের জন্য। অর্থাৎ যাকে কিনা বলে চেয়ারকার। তবে এবার আরও এক ধাপ উঠে যাত্রীদের জন্য শয়নের ব্যবস্থাযুক্ত আসন আনতে চলেছে বন্দে ভারত। অর্থাৎ শুধু বসে নয়, শুয়ে শুয়েই এবার গন্তব্য পৌঁছে যেতে পারবেন যাত্রীরা।

খুব শিগগিরই বন্দে ভারতের স্লিপার কোচ আনতে চলেছে ইন্ডিয়ান রেল। সম্প্রতি ইন্টিগ্রাল কোট ফ্যাক্টরি (আইসিএফ)-এর জেনারেল ম্যানেজার বিজি মাল্য জানিয়েছেন, এই অর্থবর্ষেই আসতে চলেছে বন্দে ভারত স্লিপার। ইতিমধ্যেই তার প্রথম মডেল প্রস্তুত। আশা করা যাচ্ছে, ২০১৪ সালের মার্চ মাসেই সরকারি ভাবে যাত্রা শুরু করবে সেই ট্রেন।

আরও পড়ুন: যাত্রার দ্বিতীয় দিনেই বিপত্তি! কেন এই হাল হল সাধের হাওড়া-পুরী বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের?

ভারতীয় রেলের স্লিপার ট্রেনের ধারায় বড়সড় পদক্ষেপ হতে চলেছে এই বন্দে ভারত স্লিপার। রাতভর যাত্রা করে বেশি দূরত্বে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে দারুণ কার্যকরী হতে চলেছে এই মডেল, এমনটাই মনে করছেন কর্মকর্তারা। মাল্য জানান, শুধু স্লিপারেই থামছে না যাত্রা। এরপরে বন্দে মেট্রো আনারও ভাবনাচিন্তা রয়েছে কর্তৃপক্ষর। বারো কোচের ওই ট্রেনগুলি তৈরি করা হবে সামান্য দূরত্বে যাত্রার জন্য। ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যেই চালু হয়ে যাবে সেটি, এমনটাই আশা।

Vande Bharat 2.0: Here's what's new

জানা গিয়েছে, বাকি সব ট্রেনের মতোই বন্দে ভারত মেট্রোগুলিতেও একই সঙ্গে বাতানুকূল এবং বাতানুকূল নয়, দু'ধরনের কামরাই রাখা হবে। নন এসি ট্রেনগুলিকে বলা হচ্ছে নন এসি পুশ পুল ট্রেন। যাতে থাকবে ২২টি কামরা ও একটি লোকোমেটিভ। এ বছর ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে।

ভারতের অন্যতম সেমি হাই স্পিড ট্রেন বন্দেভারত দেশের প্রায় সব কটি রাজ্যের মধ্যে দিয়েই ছুটে চলেছে। অন্তত ৫০টি অপারেশনাল সার্ভিস চালু আছে এটির। ইতিমধ্যেই ট্রেনযাত্রার ইতিহাসে রেকর্ড গড়েছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। প্রতিদিন নানা ধরনের সুযোগসুবিধা নিয়ে হাজির হয়েছে ট্রেনটি। তবে এবার যাত্রীদের মন ভরাতে আরও আরও পরিষেবা নিয়ে হাজির হতে চলেছে বন্দে ভারত।

আরও পড়ুন:হাওড়া-পুরী’র পর এই রুটে চলবে ট্রেন, জানুন বাংলার তৃতীয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের টাইম-টেবিল

তৈরি হয়ে গিয়েছিল ২০১৭ সালেই। তবে প্রথম যাত্রা শুরু হতে হতে ২০১৯। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে প্রথম বার যাত্রা শুরু করেছিল বন্দে ভারত। প্রধানমন্ত্রী খোদ পতাকা নেড়ে রওনা করেছিলেন ট্রেনগুলিকে। প্রথম যাত্রা শুরু হয়েছিল দিল্লি থেকে, গন্তব্য বারাণসী। তারপর অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও ছড়িয়ে গিয়েছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। প্রতিবাদ, বিক্ষোভের মুখেও যাত্রীদের পছন্দের ট্রেন হয়ে উঠতে কোনও কসুর বাকি রাখেনি বন্দে ভারত। এবার চেয়ার কার থেকে প্রোমোটেড হয়ে স্লিপারের দিকে যাত্রা শুরু করতে চলেছে ট্রেনটি। ভারতীয় ট্রেনযাত্রীদের জন্য যা সুখের খবর তো বটেই। তবে চেয়ারকারে যে ধরনের পরিষেবা মিলছে, স্লিপারেও সেই একই রকম পরিষেবা মিলবে তো? তাছাড়া চেয়ারকারের মতোই ঝাঁ চকচকে ভাব বজায় রাখতে পারবে তো স্লিপার এবং মেট্রো পরিষেবা, সেটাই এখন দেখার।

More Articles