"কাজটা যদি করে দেন", সচিনকে কীসের কথা বলেছিলেন সেহওয়াগ? অবশেষে রহস্য প্রকাশ্যে
Sachin Sehwag Mystery Revealed : সেটাই বোঝা গিয়েছিল এই ঘটনায়। সেইসঙ্গে এতদিনের লুকিয়ে রাখা ‘রহস্য’ প্রথমবার সামনেও আনেন সেহওয়াগ।
একটা সময় ভারতীয় ক্রিকেট দলের ওপেনিং জুটি হিসেবে অন্যতম ভরসার মুখ ছিলেন তাঁরা। দুজনে মিলে একের পর এক শিখর স্পর্শ করেছেন। কথা হচ্ছে বীরেন্দ্র সেহওয়াগ এবং সচিন তেন্ডুলকরকে নিয়ে। ২০১১-র সেই স্মরণীয় ক্রিকেট বিশ্বকাপের কথা মনে আছে? যেখানে বিপক্ষের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকানো অভ্যাসে পরিণত করে নিয়েছিলেন সেহওয়াগ। আর সচিন? তাঁর সম্পর্কে বলতে গেলে একটা গোটা বইয়ের প্রয়োজন। শুধু ভারত কেন, বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার, অনেকের মতে ‘গড অফ ক্রিকেট’। তৈরি করেছেন একের পর এক অবিস্মরণীয় রেকর্ড। হাজার হাজার তরুণের অনুপ্রেরণা তিনি। সচিন-সেহওয়াগ জুটির অসামান্য পারফর্মেন্সকেও ভোলেনি বিশ্ব ক্রিকেট।
বাইশ গজের ভেতর তো বটেই, বাইরেও সেহওয়াগ একইরকম ‘ধুমধারাক্কা’ মেজাজে থাকেন। যা বলেন, খোলাখুলি বলে ফেলেন। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টও ভাইরাল হয়। সম্প্রতি নতুন একটি ব্যাপারের রহস্য উন্মোচন করলেন তিনি। ইউটিউবার রনভীর এলাহাবাদিয়ার চ্যাট শো-তে সম্প্রতি আমন্ত্রিত ছিলেন তিনি। তখন ক্রিকেট, ব্যক্তিগত জীবন ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছিল। সেই সময়ই বিশেষ একটি কথা শেয়ার করেছিলেন সেহওয়াগ। ভেরতিয় দলের সহযোদ্ধা তো ছিলেনই; কিন্তু ব্যক্তি সেহওয়াগ যে সচিন তেন্ডুলকরের কত বড় ভক্ত, সেটাই বোঝা গিয়েছিল এই ঘটনায়। সেইসঙ্গে এতদিনের লুকিয়ে রাখা ‘রহস্য’ প্রথমবার সামনেও আনেন সেহওয়াগ।
ঠিক কী হয়েছিল? সেহওয়াগের মতে, তিনি কখনও রেকর্ড তৈরি করার জন্য ক্রিকেট খেলেননি। স্রেফ খেলার আনন্দ নেওয়ার জন্য, দেশের জন্য খেলে গিয়েছেন। সেই সেহওয়াগই তৈরি করেছিলেন অনন্য একটি রেকর্ড। কেবল ভারত নয়, বিশ্বের প্রথম ব্যাটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে দু’বার ত্রিশতরান করেন তিনি। স্বয়ং সচিনেরও এমন রেকর্ড নেই। এই জায়গাতেই নিজের আলাদা সিংহাসন তৈরি করে নেন সেহওয়াগ। তারপর চেষ্টা করেছিলেন আরও একবার ত্রিশতরান করার। আরও একটা রেকর্ড স্পর্শ করাই শুধু নয়, বরং সচিনের থেকে কিছু পাওয়ার জন্য!
ব্যাপারটা কী? ওই সাক্ষাৎকারে সমস্তটা খোলসা করেন বিরেন্দ্র সেহওয়াগ। তাঁর বক্তব্য, একবার তিনি সচিনকে বলেছিলেন, যদি তিনি তৃতীয় ত্রিশতরান করে ফেলেন, তাহলে একটা কাজ করে দেবেন? এমন প্রশ্নে খানিক ঘাবড়েই যান সচিন। কী কাজ, পাল্টা প্রশ্নও করেন। কিন্তু সেহওয়াগ বলেছিলেন, যতক্ষণ না তিনি তৃতীয় ত্রিশতরানটি করছেন, ততক্ষণ তিনি কাউকে এই কাজের কথা বলবেন না। যদি করে ফেলেন, তখন সচিনের কাছে উপস্থিত হবেন তিনি।
দুর্ভাগ্যবশত, সেই মুহূর্ত আর আসেনি। একবারই নিজের লক্ষ্যের খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন সেহওয়াগ। সেটা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিল। ২৯৩ রানে ব্যাট করছেন সেহওয়াগ। হঠাৎই কিংবদন্তি স্পিনার মুথাইয়া মুরলীধরনের একটা বলেই ঘটল বিপত্তি। সেই বলেই ‘কট অ্যান্ড বোল্ড’ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যেতে হয় সেহওয়াগকে। মাত্র, সাত রানের জন্য সুযোগ নষ্ট হল। এরপর আর সেই সুযোগ আসেনি। তাই সেই কাজের কথা সচিনকে আর বলেনওনি সেহওয়াগ। এতদিন এই ব্যাপারটিও স্রেফ সচিন-সেহওয়াগের মধ্যেই ছিল। কিন্তু কোন কাজের কথা বলতে চেয়েছিলেন তিনি? এখনও মুখে কুলুপ সেহওয়াগের। আর তো সেই লক্ষ্যপূরণ হয়নি। তাই, সেই কাজের কথা চাপাই পড়ে থাকল চিরকালের জন্য।