'বিজেপি ছেড়ে হিন্দু মহাসভায় যোগ দিন'! বাংলার গেরুয়া নেতাদের কেন ডাকছে হিন্দু মহাসভা?
Dilip Ghosh Rahul Sinha : পোস্টারগুলিতে লেখা রয়েছে, "আমরা বাংলার বিভাজন মেনে নেব না। আমরা দিলীপ ঘোষ এবং রাহুল সিনহার কার্যালয় ভেঙে দেওয়ার নিন্দা জানাই।"
বাংলার বিজেপি নেতারা দলে দলে যোগ দিন! কোথায় যোগ দেবেন বাংলার গেরুয়া বাহিনীর নেতৃত্বরা? দলেই তো রয়েছেন। দলে থেকে কাজ করতে না পেরে অনেকে দল ত্যাগ, দলবদল অনেক কিছুই করেন। ঘটনাটা এক্ষেত্রে তেমন নয়। বিজেপি নেতাদের যোগ দিতে বলা হচ্ছে অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভায়। অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা বঙ্গ বিজেপিকে বেশ কড়াভাবেই জানিয়েছে বিজেপিকে দিয়ে হচ্ছে না। তাই দলের নেতাদের তাদের সংগঠনে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে এবিএইচএম। অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার দাবি, হিন্দু মহাসভাই হলো 'একমাত্র সনাতনী'। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করবে মহাসভা।
হিন্দু মহাসভার নেতা চন্দ্রচূড় গোস্বামী বিজেপিকে মনে করছেন 'বাঙালি বিরোধী দল'। বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা দিলীপ ঘোষ এবং রাহুল সিনহা, যাদের কেবিনগুলি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের লোকসভা নির্বাচনের আগে অবিলম্বে হিন্দু মহাসভায় যোগদান করা উচিত বলেই মনে করেন চন্দ্রচূড়। বিজেপির সমালোচনা করে মহাসভার নেতা বলছেন, 'সনাতনী বাঙালি হিন্দুদের প্রাপ্য দেবে না' এই বিজেপি। একদিকে দেশ সনাতন ধর্ম নিয়ে জেরবার! দেশে 'সনাতন ধর্ম নির্মূল' করার কথা বলায় ডিএমকে নেতা উদয়নিধিকে ঘিরে বিতর্ক চলছে। বিজেপি নেতারা সনাতন ধর্মের হয়ে লড়ে যাচ্ছেন। এদিকে হিন্দু মহাসভা বলছে বাঙালি সনাতনীরা মূল্য পাবেন না বিজেপির থেকে? কে বেশি সনাতনী? বাঙালি নাকি বিজেপি?
আরও পড়ুন- দিলীপ ঘোষ ‘Missing’
চন্দ্রচূড় বলেছেন, অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা লোকসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আরএসএস আসলে এই মহাসভা থেকেই উদ্ভূত হয়েছে তাই মহাসভাই একমাত্র সনাতনী জাতীয়তাবাদী দল। ইতিমধ্যেই, বিজেপি সদর দফতরের কাছে হিন্দু মহাসভার নামে একাধিক পোস্টার পড়েছে। সেখানে দিলীপ ঘোষ এবং রাহুল সিনহার প্রতি সমর্থন প্রকাশ পেয়েছে। পোস্টারগুলিতে লেখা রয়েছে, "আমরা বাংলার বিভাজন মেনে নেব না। আমরা দিলীপ ঘোষ এবং রাহুল সিনহার কার্যালয় ভেঙে দেওয়ার নিন্দা জানাই। এবিএইচএম-কে শক্তিশালী করতে বাহিনীতে যোগদান করুন।"
চন্দ্রচূড় গোস্বামী বলছেন, পোস্টারগুলি সম্ভবত তাঁদের কিছু কর্মীরা লাগিয়েছেন বা কিছু বিজেপি কর্মীরাই লাগিয়েছেন যারা দলের প্রতি অসন্তুষ্ট। তবে মহাসভার নেতৃত্বদের অনেকে বলছেন, দিলীপ ঘোষ এবং রাহুল সিনহা নাকি মহাসভাতে যোগ দিতেই চাইছেন। কারণ একেবারে স্পষ্ট। বিজেপিতে দিলীপ ঘোষ এবং রাহুল সিনহার অবদানকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। কেন? কারণ তাঁরা বাঙালি।
পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির দুই প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং রাহুল সিনহার অফিসের কেবিনগুলি কলকাতায় বিজেপির সদর দফতরে মেরামতির কারণে ভেঙে ফেলা হয়। বিজেপি বলছে, ২০২৪ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসাবে আইটি সেল অফিস সম্প্রসারণের জন্য কিউবিকলগুলি সরানো হয়েছিল। তবে এত সহজ হিসেব মানছেন না দলের অন্দরের ও বাইরের অনেকেই। এই 'অস্বাভাবিক সিদ্ধান্ত' যে বাংলার বিজেপির মধ্যে চিড় ধরাতে পারে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও। তবে চিড় ধরার ফলে মহাসভাতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা কতখানি তা বলা যাচ্ছে না। হিন্দুত্ব প্রসঙ্গে, সনাতন প্রসঙ্গে সব গেরুয়াই যে এক সুরে কথা বলে না তা স্পষ্ট। এখন কে বেশি সনাতনী, কে বেশি হিন্দু এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে বিজেপিকে। কেবিন ভাঙার অন্তর্দ্বন্দ্বের চেয়েও এই কাঁটা বড় বালাই!