যা জানা যাচ্ছে, প্রতিটি বন্ডকে একটি ইউনিক আলফা-নিউমারিক বন্ড বরাদ্দ করা হয় এসবিআইয়ের তরফে।
SBI-এর কাছে সমস্ত বন্ডের আলফা-নিউমারিক নম্বর চাইল সুপ্রিম কোর্ট, কী এই ইউনিক কোড?
Electoral Bonds Case: শীর্ষ আদালত এসবিআইকে বলেছে, নির্বাচনী বন্ডের বিশদ বিবরণ-সহ সমস্ত তথ্য প্রকাশ করতে হবে তাদের। যার মধ্যে থাকতে হবে আলফা-নিউমেরিক্যাল একটি ইউনিক নম্বর।
ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। অধিকাংশ রাজ্যে প্রার্থীতালিকাও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। আর ঠিক ভোটের আগেই ইলেক্টোরাল বন্ড দুর্নীতি মামলায় বারবার সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খাচ্ছে বিজেপি। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই মোদি সরকারের ইলেক্টোরাল বন্ড প্রকল্পকে বেআইনি বলে ঘোষণা করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ইলেক্টোরাল বন্ড সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য এসবিআইয়ের কাছ থেকে নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করারও নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। নানা টালবাহানার পরে শেষপর্যন্ত সেই তথ্য জমা করেছে ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক। ইতিমধ্যে তা উঠেছে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটেও। কে কত টাকা দিয়েছে এবং কোন কোন দল টাকা পেয়েছে, তা এতদিনে দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট। তবে কোন দল কোন কোন সংস্থা বা ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা পেয়েছে, তা জানা যায়নি ওই তথ্য থেকে। সোমবার সুপ্রিম-শুনানিতে সেই তথ্যও চেয়েছে শীর্ষ আদালত। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে হলফনামা-সহ সেই তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এসবিআই-কে। আর সেই তথ্য উঠবে ইলেকশন কমিশনের ওয়েবসাইটেও।
সোমবারই সুপ্রিম কোর্টে ইলেক্টোরাল বন্ড সংক্রান্ত একটি শুনানিতে এই ব্যাপারটি স্পষ্ট করে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের একটি বেঞ্চ। শীর্ষ আদালত এসবিআইকে বলেছে, নির্বাচনী বন্ডের বিশদ বিবরণ-সহ সমস্ত তথ্য প্রকাশ করতে হবে তাদের। যার মধ্যে থাকতে হবে আলফা-নিউমেরিক্যাল একটি ইউনিক নম্বর। সেই ইউনিক নম্বরই নাকি বলে দেবে ইলেক্টোরাল বন্ড যারা কিনছেন এবং যে রাজনৈতিক দল সেই টাকা অনুদান হিসেবে পাচ্ছে, তাদের মধ্যেকার যোগাযোগ। কী আসলে এই আলফা-নিউমারিক্যাল নম্বর, যা প্রকাশ্যে এলেই মিটবে সব ধোঁয়াশা।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী বন্ডের নামে কীভাবে তোলাবাজি চক্র চালাচ্ছিল মোদি-শাহের বিজেপি?
প্রতিটি বন্ডের জন্য একটি করে ইউনিক আলফা-নিউমারিক কোড বরাদ্দ করা হয়েছে এসবিআইয়ের তরফে। প্রতিটি বন্ডের উপরে যা মুদ্রিতও রয়েছে। তবে খালি চোখে তা দেখা যায় না। নির্দিষ্ট ধরনের অতিবেগুনি আলোতেই দৃশ্যমান হয় এই সংখ্যা। আর সেই নম্বরই এবার এসবিআইকে প্রকাশ্যে আনতে বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে, বন্ডের ক্রেতা ও বন্ডের মাধ্যমে অনুদানপ্রাপকের মধ্যেকার সংযোগ সূত্রই হচ্ছে এই ইউনিক নম্বর।
এখনও পর্যন্ত এসবিআই ইলেকশন কমিশনকে যে তথ্য দিয়েছে, তা থেকে কে কত টাকার বন্ড কিনেছে, তা স্পষ্ট। পাশাপাশি মোট বন্ডের থেকে কোন কোন রাজনৈতিক দল কত টাকা পেয়েছে, তা-ও স্পষ্ট। তবে কোন দলকে কোন সংস্থা বা ব্যক্তি কত টাকা দিয়েছে, তা জানা যাচ্ছে না এসবিআইয়ের দেওয়া তথ্য থেকে। এবার সেই সম্পর্কিত তথ্য পাওয়ার একমাত্র জায়গা হচ্ছে ওই ইউনিক আলফা-নিউমারিক নম্বর। যা সকলের সামনে তুলে ধরতে চাইছে সুপ্রিম কোর্ট। শুধু আলফা-নিউম্যারিক নম্বরই নয়, একই সঙ্গে যদি কোনও বন্ডের সিরিয়াল নম্বর থেকে থাকে, তা প্রকাশ্যে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এসবিআইকে।
আরও পড়ুন: কোটি কোটি টাকা বন্ডের নামে রাজনৈতিক দলের বেইমানি এখনও সহ্য করে যাবেন?
এসবিআই শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছে, তারা সিস্টেমে আলফা-নিউমারিক কোড নথিভুক্ত রাখেনি। ২০১৭ সালে ইলেক্টোরাল বন্ড প্রকল্প পরিকল্পনার সময়ে অর্থসচিব ছিলেন যিনি, সেই সুভাষ চন্দ্র গর্গের তরফে জানানো হয়েছিল, যে এই ইউনিক আলফা-নিউমারিক কোডটি আদতে নিরাপত্তার জন্য তৈরি করা হয়েছে। ফলে বন্ড বিক্রয়ের সময়ে তা নথিভুক্ত করা হয়নি ব্যাঙ্কের রেকর্ডে। তবে সোমবার সুপ্রিম কোর্টকে এই নম্বর প্রকাশ করতেই হবে। ১৫ ফেব্রুয়ারির রায়ে শীর্ষ আদালতের তরফে বন্ড কেনার তারিখ, ক্রেতাদের নাম ও যে যে রাজনৈতিক দল ওই বন্ড থেকে প্রাপ্ত টাকা গ্রহণ করেছে, সেই তথ্য প্রকাশ করতে বলা হয়েছিল। তবে বাকি তথ্য দিলেও কতগুলি বন্ড কেনা হয়েছে বা তার থেকে প্রাপ্ত টাকা গ্রহণ করা হয়েছে, সেই তথ্য় প্রকাশ করেনি এসবিআই। এবার সেই নির্দেশই দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ১৯ মার্চ ওই মামলার ফের শুনানি বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে শীর্ষ আদালতের তরফে।