সামনেই ভারতের টি-২০'র মরসুম, প্রথম আইপিএলের এই খেলোয়াড়রা এখন কোথায়, জানেন?
IPL 1st Edition Players : কোথায় সেই ক্রিকেটাররা? প্রথম আইপিএলের সেরকমই কয়েকজন খেলোয়াড়ের দিকে ফিরে তাকানো যাক একবার।
ভারতের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে কত না ঐতিহ্য, সংস্কৃতি। নানা জনের নানা মত, ধর্ম আলাদা, ভাবনাচিন্তাও পৃথক। তবে একটা ব্যাপারে গোটা দেশ এককাট্টা হয়ে যায়। তখন তার একটাই নাম হয়ে যায় – ক্রিকেট। বিশ্বকাপ হোক বা যে কোনও টুর্নামেন্ট, ভারতের ক্রিকেটাররা মাঠে নামলেই সমস্ত পরিস্থিতি বদলে যায়। একটাই প্রার্থনা তখন সঙ্গে থাকে, ভারত যেন জিতে যায়। কপিল দেব, সুনীল গাভাস্কার থেকে সচিন-সৌরভ, কিংবা হালের বিরাট-শুভমান গিল-মহম্মদ সামি, তাঁদের সামনেই এসে বসেন ভারতীয়রা।
আর এসবের মধ্যেই চলে এল আরও একটা ক্রিকেটের মরসুম। নতুনভাবে, নতুন ছন্দে টি-২০ ক্রিকেটে মেতে উঠবে দেশ। শুরু হবে চলতি মরসুমের আইপিএল (IPL)। সেই ২০০৮ থেকে যার যাত্রা শুরু হয়েছিল। আজও অনেক তরুণ প্রতিভা নিজের মঞ্চ খুঁজে নেয় এখানে। আইপিএল নিয়ে ইতিমধ্যেই উন্মাদনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পাঠকদের কি মনে আছে সেই প্রথম যাত্রাশুরুর কথা? ২০০৮ সালের প্রথম আইপিএলের কথা? সেই সময়ের অনেক ক্রিকেটাররাই এখন অবসর নিয়ে নিয়েছেন। শেন ওয়ার্নের মত কেউ কেউ চিরবিদায় নিয়েছেন পৃথিবী থেকে। নতুন প্রতিভা যেমন এসেছে, তেমনই হারিয়ে গিয়েছে অসংখ্য মুখ। এখন কোথায় সেই ক্রিকেটাররা? কী করছেন? প্রথম আইপিএলের সেরকমই কয়েকজন খেলোয়াড়ের দিকে ফিরে তাকানো যাক একবার।
শোয়েব আখতার
এই নামটির সঙ্গে একটা প্রজন্ম জুড়ে রয়েছে। জুড়ে রয়েছে অজস্র রেকর্ড। ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’-এর গতি, তাঁর মারকাটারি অ্যাকশন, বোলিং দক্ষতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন আসে না। শোয়েব আখতার যেমন নিজের সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়, তেমনই এক বিতর্কিত নামও বটে।
২৬/১১-র পর পাকিস্তানের কোনও ক্রিকেটারই আর আইপিএলে জায়গা পাননি। কিন্তু ২০০৮ সাল তেমন ছিল না। পাকিস্তানের বহু ক্রিকেটার অংশ নিয়েছিলেন সেবারের খেলায়। যেমন শোয়েব আখতার। কলকাতা নাইট রাইডার্স বা কেকেআরের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। সেই সময় বেশ কয়েকটি ম্যাচও খেলেছিলেন। কিন্তু প্রবল চোটের জন্য মাঝপথেই তাঁর আইপিএল কেরিয়ার থেমে যায়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন টিম থেকে বাদ পড়েন দুর্ভাগ্যবশত। ২০১১ সালে ক্রিকেটকে বিদায় জানান তিনি। এখন শোয়েব নিজে একজন কমেন্টেটর এবং ক্রিকেট বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করছেন।
স্বপ্নিল আসনোদকর
আইপিএলের প্রথম সিজন জিতেছিল শেন ওয়ার্নের নেতৃত্বাধীন রাজস্থান রয়্যালস। সেখানেই খেলেছিলেন আসনোদকর। ওপেনার হিসেবে বেশ প্রতিশ্রুতিবানও ছিলেন। কিন্তু সেই ফর্ম ধরে রাখতে পারেননি তিনি। দ্বিতীয় সিজনেই টিম থেকে বাদ পড়েন। তারপর গোয়া ও রাজস্থানের হয়ে ঘরোয়া স্তরের ক্রিকেটও খেলেছিলেন। কিন্তু জাতীয় দলের ডাক আর সেনি। এখন তিনি বিপিএলে খেলছেন।
মনপ্রীত গোনি
এই বোলারের নাম চেন্নাই সুপার কিংসের ভক্তদের নিশ্চয়ই মনে থাকবে। ধোনির সিএসকে-র অন্যতম প্রধান অস্ত্র ছিলেন গোনি। প্রথম আইপিএলে ১৬ ম্যাচে ১৭টি উইকেটও নিয়েছিলেন। তারপরও আইপিএলের ম্যাচ খেলেছিলেন। পাশাপাশি পাঞ্জাবের হয়ে রঞ্জিও খেলেছেন অনেকগুলি বছর। কিন্তু চোট আঘাত তাঁর কেরিয়ারে বড় শত্রু হয়ে দাঁড়াল। ২০২০ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নেন গোনি।
সলমন বাট
কলকাতা নাইট রাইডার্সের আরেক পাকিস্তানি খেলোয়াড়। আন্তর্জাতিক কেরিয়ার প্রথমদিকে বেশ উজ্জ্বল, পাকিস্তানের অধিনায়কও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কেকেআরের হয়ে সেভাবে পারফরমেন্স করতে পারেননি। পরবর্তীকালে স্পট ফিক্সিং ইস্যুতে তাঁর নাম জড়িয়ে যায়। পাঁচ বছরের জন্য তাঁকে ক্রিকেটের সমস্ত ফরম্যাট থেকে ব্যান করে দেওয়া হয়। এখন পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরে এলেও, আন্তর্জাতিক মঞ্চে আর দেখা যায় না সলমন বাটকে।
মহম্মদ হাফিজ
প্রথম আইপিএলে কেকেআরের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ ছিলেন হাফিজ। সঙ্গে ছিল পার্ট টাইম স্পিন বোলিংও। কিন্তু আইপিএলের কেরিয়ারে খুব একটা ছাপ রাখতে পারেননি তিনি। বরং পাকিস্তানের হয়ে একের পর এক দুরন্ত পারফরমেন্স উপহার দিয়েছেন হাফিজ। বলে-ব্যাটে সব জায়গায় তিনি ছিলেন ভরসার অস্ত্র। ২০২২ সালে অবসরের আগে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় টি-২০ লিগ খেলেছেন তিনি। সঙ্গে ছিল আন্তর্জাতিক পারফরমেন্সও।
সোহেল তানভির
রাজস্থান রয়্যালসের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অন্যতম কারিগর ছিলেন তানভির। প্রথম আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি, পার্পল ক্যাপ বিজেতা তানভির গোটা টুর্নামেন্টে দুরন্ত ছন্দে ছিলেন। সেইসঙ্গে পাকিস্তানের হয়েও তিনি ছিলেন ভরসার মুখ। পাকিস্তান ছাড়াও ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও খেলেছেন তিনি। সম্প্রতি খেলোয়াড় জীবন থেকে অবসর নিয়েছেন।