নিজের রায় গিললেন বিচারপতি! কেন ববিতাকে চাকরি দিয়েও ফের কাড়লেন অভিজিৎ?
Abhijit Ganguly SSC Scam: পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী বেআইনিভাবে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন ববিতা সরকার।
মন্ত্রীকন্যার চাকরি কেড়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। আন্দোলন করে নিজের চাকরি ছিনিয়ে নিয়েছিলেন ববিতা সরকার। এবার ববিতার চাকরি কেড়ে অন্য একজনকে দিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রাজ্যে ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে শিক্ষক নিয়োগের মামলা। এক ধাক্কায় চাকরি যাচ্ছে ৩৬ হাজার মানুষের, কখনও আবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে তুমুল লড়াই করে পাওয়া চাকরি ফের হারাচ্ছেন প্রার্থী। ববিতা সরকারের আন্দোলন ও চাকরি পাওয়া, পাশাপাশি তৃণমূলের মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর অন্যায্য চাকরি যাওয়া নিয়ে হইচই হয়েছিল বেশ। অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি কেড়ে সেই চাকরি দেওয়া হয়েছিল ববিতা সরকারকে। ববিতার সেই চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে ববিতার চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন অভিজিৎ। ববিতার চাকরি এবার পাবেন অনামিকা রায়।
পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী বেআইনিভাবে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন ববিতা সরকার। মামলা হয়। মামলায় জিতে যান ববিতা, অঙ্কিতাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে ববিতাকে সেই চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, অঙ্কিতা অধিকারী যতদিন চাকরি করেছিলেন ততদিনের বেতনও পান ববিতা। সেই ববিতার চাকরি কেন কেড়ে নেওয়া হলো ৬ মাসের মধ্যেই? হাইকোর্ট নিজেরই রায় নিজেই গিলতে বাধ্য হলো কেন?
আরও পড়ুন- কেন সরানো হল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে?
ববিতা সরকারের চাকরি বাতিল করার দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন এসএসসি পরীক্ষার্থী অনামিকা রায়। অনামিকার অভিযোগ, ববিতা নিজের স্নাতকস্তরের নম্বর বাড়িয়ে দেখিয়েছেন যার ফলে তাঁর ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ বেড়ে গিয়েছে। ববিতার আবেদনপত্র অনুযায়ী, স্নাতকস্তরে ববিতা মোট ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৪০ নম্বর পেয়েছিলেন অর্থাৎ ৫৫%। ববিতা দেখিয়েছেন তিনি ৬০% নম্বর পেয়েছেন।
অনামিকা রায় কলকাতা হাইকোর্টে সরাসরি মামলা করেন। ৫৫% নম্বরের ভিত্তিতে ববিতা যোগ্য প্রার্থীর তালিকাতে অনেকটাই নিচে নেমে যাবেন। তাঁর উপরে, তাঁর চেয়ে বেশি নম্বর পাওয়া অনেকেই রয়েছেন যাদের এই চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা বেশি। বলাবাহুল্য হাইকোর্ট নিজের রায় ভুল দিয়েছে। আর মধ্যশিক্ষা পর্ষদও যাচাই করেনি। ববিতার র্যাঙ্কিং নেমে যাওয়াতে সেই জায়গাতে উঠে এসেছেন অনামিকা রায়। ববিতার চাকরির যোগ্য প্রার্থী বা দাবিদার।
কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে চাকরি করতেন অঙ্কিতা। পরেশ অধিকারীর কন্যার সেই চাকরি পান ববিতা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দেন তিনি। ববিতার সেই চাকরি পেলেন শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকা রায়। ববিতা যেমন অঙ্কিতা অধিকারীর টাকা পেয়েছিলেন, তেমনই ববিতাকেও টাকা ফেরত দিতে হবে অনামিকাকে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী ৬ জুনের মধ্যে ববিতাকে ১৫ লক্ষ টাকা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দিতে হবে। আগামী বুধবারের মধ্যে তাঁকে ১১ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তবে এই টাকা চাকরির বেতন নয়। এই টাকা অঙ্কিতার চাকরি যাওয়ার পর ববিতার পাওয়া টাকা। মোট ১৫ লক্ষ ৯২ হাজার ৮৪৩ টাকা ফেরত দিতে হবে ববিতাকে। এদিকে টাকা পয়সা পেয়ে ববিতা ইতিমধ্যেই কিনে ফেলেছেন গাড়ি। তাই এক্ষুণি এত টাকা দেবেন কীভাবে? টাকা ফেরতের জন্য ৩ মাস সময় চেয়েছেন ববিতা। তবে এর পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ববিতা অংশ নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।