আরও ১০০ চিতা আসছে ভারতে! কেন এই চিতা আনার হিড়িক পড়ল দেশে?

Cheetah: নামিবিয়া থেকে ভারতে যে চিতা পাঠানো হলো তা প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় স্থানান্তর।

দেশে আসবে ১০০ চিতা! দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় এসে পৌঁছবে এই চিতারা। এক বিশেষ প্রকল্পের অংশ হিসাবেই ভারতে এত সংখ্যক চিতা পাঠানোর চুক্তি হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাসেই নামিবিয়া থেকে আটটি চিতাকে এই দেশে নিয়ে আসা হয়। ভারতের পরিবেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, আগামী মাসেই ১২টি চিতা আসছে ভারতবর্ষে। পরিবেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ৮ থেকে ১০ বছরে আরও ১২ টি চিতাকে আফ্রিকা থেকে এই দেশে পাঠানো হবে যাতে চিতার সংখ্যা নিরাপদ ও নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ভারত একসময় এশিয়াটিক চিতার আবাসস্থল ছিল। ১৯৫২ সালে চিতাকে এই দেশে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। মানুষের বাস বাড়তে থাকে আর চিতার কমতে থাকে। পাশাপাশি চামড়ার লোভে পশুপাচারকারীদের হাতে চিতার নিধনও ছিল ব্যাপক। ২০২০ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় আফ্রিকান চিতাদের পরীক্ষামূলকভাবে, সাবধানে, নির্বাচিত স্থানে দেশে আনা যেতে পারে।

আরও পড়ুন- ভারতে চিতাদের প্রথম শিকার! যেভাবে সেজে উঠছে নতুন শ্বাপদদের রোমহর্ষক অরণ‍্য

কর্মকর্তারা বলেছেন যে, নামিবিয়া থেকে ভারতে যে চিতা পাঠানো হলো তা প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় স্থানান্তর। নামিবিয়ার চিতাদের নয়াদিল্লি থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণে কুনো ন্যাশনাল পার্কে ছেড়ে দেওয়া হয়। যে চিতা নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল, সেই চিতাই কি ফিরে এল তবে? ১৯৪৭ সালে কোরাবির মহারাজা তিনটি চিতা শিকার করে। শোনা যায়, সেটাই ভারতে দেখা যাওয়া শেষ চিতা। ভারতে ছিল ইরানীয় চিতা (Acinonyx jubatus venaticus)। যে চিতা এখন নামিবিয়া থেকে আনা হচ্ছে, তা আফ্রিকান চিতা (Acinonyx jubatus jubatus)। ভারতে যেহেতু এর আগে কখনও ইরানীয় চিতা ছাড়া অন্য কোনও চিতা বাস করেনি তাই আফ্রিকান চিতা ভারতের বাস্তুতন্ত্রে কতটা খাপ খাওয়াতে পারবে তা জানার উপায় নেই।

কিন্তু সংরক্ষণ বিশারদের একাংশের মতে কুনো-পালপুরের বাস্তুতন্ত্র চিতার বাসযোগ্য নয়। সেখানে যে ঘাসজমি রয়েছে, তা চিতার স্বাভাবিক বিচরণক্ষেত্রের চেয়ে কম। এবং এখানে যে তৃণভোজী প্রাণীরা আছে তার সংখ্যাও আফ্রিকান চিতাদের খাবার সংকুলানের পর্যাপ্ত নয়। ফলে চিতারা আশপাশের গ্রাম-শহরাঞ্চলে ঢুকে গবাদি পশু, গৃহপালিত পশু শিকার করবেই। এতে ফের চাগাড় দেবে মানুষ আর পশুর চিরাচরিত বিরোধ।

More Articles