পুরুষরা 'সিঙ্গল' কি না গন্ধ শুঁকে বলতে পারেন মহিলারা? অবাক করবে এই গবেষণা

Male Body Smell : সিঙ্গল পুরুষদের মুখগুলি সম্পর্কে থাকা পুরুষদের মুখের চেয়ে বেশি 'পুরুষালি' হিসাবে মনে করেন মহিলারা।

যৌনতার ক্ষেত্রে অনেক পুরুষ প্রাণীই স্ত্রী সঙ্গীদের আকর্ষণ করতে বিশেষ নির্যাস বের করে শরীর থেকে। মানুষ নিজে নিজে গন্ধ উৎপাদন করতে অপারগ। মানুষ কৃত্রিম সুগন্ধীর সাহায্য নেয়। বিশেষ বিশেষ কোম্পানির সুগন্ধী ব্যবহার করলে কীভাবে মহিলারা আকর্ষিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন সেই নিয়ে একাধিক বিজ্ঞাপন ও বিতর্ক হামেশাই উথালপাথাল করে দেয় সোশ্যাল মিডিয়া। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, মানুষের বিশেষ করে পুরুষের দেহে একটি বিশেষ গন্ধ থাকে। আরও মজার ঘটনা হচ্ছে, অবিবাহিত পুরুষদের গায়ে সম্পর্কে থাকা পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি গন্ধ বেরোয়। শরীরের গন্ধ এবং 'সিঙ্গল' হওয়ার মধ্যে বিশেষ এক সম্পর্ক রয়েছে, বলছেন গবেষকরা। এই শক্তিশালী গন্ধই আসলে মহিলাদের কাছে 'সিঙ্গল' পুরুষদের সংকেত পাঠাতে সাহায্য করে। প্রাণীদের সঙ্গে এই ক্ষেত্রে মিল রয়েছে মানুষের।

এর আগের গবেষণাগুলি বলেছে, যৌন প্রতিযোগিতার কারণেই সিঙ্গল পুরুষদের দেহে সম্পর্কে থাকা পুরুষদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বেশি থাকে। বিষয়টিকে একটু অন্যভাবে বলা যাক। কম টেস্টোস্টেরনের সঙ্গে পুরুষদের যৌন আকর্ষণের বিষয়টি জড়িত। সম্পর্কে থাকা পুরুষদের মধ্যে তাই যৌন হরমোনের মাত্রা হ্রাস পেতে থাকে। টেস্টোস্টেরন পুরুষদের দেহের গন্ধ নির্ধারণ করে। সম্পর্কে না থাকা পুরুষদের দেহ থেকে তাই বিশেষ একটি গন্ধ বেরোয়।

গবেষণার জন্য গবেষকরা ৯১ জন পুরুষকে একটি সাধারণ সাদা টি-শার্ট পরতে দিয়েছিলেন। প্রতি অংশগ্রহণকারী পুরুষকে একদিনের জন্য এই নতুন পোশাক পরতে হয়েছিল। ৪৬ জন সিঙ্গল পুরুষ এবং ৪৫ জন সম্পর্কে থাকা পুরুষকে হালকা ব্যায়ামও করতে বলা হয় যাতে ওই টি-শার্টের হাতায় যথেষ্ট পরিমাণে ঘাম শোষিত হয়। টি-শার্ট থেকে ঘাম সংগ্রহ করার পরে গবেষকরা ৮২ জন মহিলাকে (হেটেরোসেক্সুয়াল) এই গন্ধ শোঁকান। প্রতি মহিলাই ছয়টি ভিন্ন পোশাক শুঁকে আনন্দ পান। প্রতি গন্ধপিছু সেই গন্ধের পুরুষের ছবিও দেখানো হয়।

আরও পড়ুন- একই মানুষের বহু যৌনসম্পর্কে আগ্রহ, কেন এমন হয়!

গবেষকরা বলছেন, সিঙ্গল পুরুষের দেহের গন্ধ সম্পর্কে থাকা পুরুষদের গায়ের গন্ধের থেকে শক্তিশালী। গবেষকরা দেখেন, সিঙ্গল পুরুষদের মুখগুলি সম্পর্কে থাকা পুরুষদের মুখের চেয়ে বেশি 'পুরুষালি' হিসাবে মনে করেন মহিলারা। তবে সম্পর্কে থাকা মহিলারাই আবার এই পুরুষদের বেশি আকর্ষণীয় বলে মনে করেছেন।

গবেষকরা বলছেন, এই গন্ধই মহিলাদের যোগ্য সঙ্গী খুঁজে পেতে সাহায্য করতে পারে। বিবর্তনের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে গেলে, মহিলাদের জন্য বিষয়টি বেশ সুবিধাজনক হতে পারে। কেমোসিগন্যাল শনাক্ত করার ক্ষমতা থাকলে নিজের সঙ্গীকে বোঝার ক্ষমতাও বাড়তে পারে৷ তবে মজার বিষয় হচ্ছে, দেহের গন্ধ তীব্র হলেই যে একজন পুরুষের প্রেমিকা খোঁজার সম্ভাবনা বেড়ে যায় তা না। অবিবাহিত ছেলেদের গায়ের গন্ধ যে সম্পর্কে থাকা পুরুষদের তুলনায় 'সেক্সি' বা বেশি আকর্ষণীয় তেমন নয়। আরেকটি বিষয় হলো, সম্পর্কে থাকা মহিলারাও সম্পর্কে থাকা পুরুষদের মুখগুলিকেই অবিবাহিত ছেলেদের তুলনায় বেশি বিশ্বস্ত এবং অনুগত বলে মনে করেছেন। উল্টোদিকে, ‘সিঙ্গল' মহিলারা কারও ক্ষেত্রেই এই গুণগুলি দেখতে পাননি।

ব্যাচেলর পুরুষদের দেহের বেশি গন্ধের পিছনে একটি কারণ ব্যাখ্যা করেছেন গবেষকরা। গবেষকরা বলছেন, যে পুরুষদের সঙ্গীর অভাব রয়েছে তারা কম স্বাস্থ্যকর হতে পারে। ফ্রন্টিয়ার্স ইন সাইকোলজি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্যই বলছে, সিঙ্গল পুরুষের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে থাকা পুরুষদের তুলনায় খুব একটা ভালো না। স্বাস্থ্যবিধির অভাব তাই গন্ধের পিছনে অন্যতম কারণ হতে পারে।

More Articles