যুবতীকে ৩০ টুকরো করে খুনে মূল সন্দেহভাজনের মৃত্যু! নেপথ্যে যা ঘটেছে আসলে

Bengaluru Fridge Murder: মুক্তিরাজন রায় অর্থাৎ মহালক্ষ্মীর সহকর্মী ১ সেপ্টেম্বর থেকে কাজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। মহালক্ষ্মীর কাজের শেষ দিনও ছিল ১ সেপ্টেম্বরই।

দুই মৃত্যু। একজন খুন হয়ে গেছেন, একজন সম্ভাব্য খুনি। দুইজনের মৃত্যু ঘটেছে অল্পদিনের ব্যবধানেই! বেঙ্গালুরুতে সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর হত্যা শোরগোল ফেলে দেয়। মহিলার দেখ খণ্ড বিখণ্ড করে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখেছিল সন্দেহভাজনরা। এই হত্যার সঙ্গে জড়িত অন্যতম সন্দেহভাজন ব্যক্তির মৃত্যু হলো ওড়িশায়! ওড়িশা পুলিশ বলছে, আত্মহত্যা করে মারা গেছেন ওই ব্যক্তি। মুক্তিরাজন রায় নামের ওই সন্দেহভাজনকে ওডিশার ভদ্রক জেলায় একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। বেঙ্গালুরুতে খুন হওয়া মহিলার একজন সহকর্মী ছিলেন তিনি। ওই মহিলার তিন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর একজন ছিলেন তিনি।

গত শনিবার বেঙ্গালুরুতে বছর ২৬-এর তরুণী মহালক্ষ্মীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ৩০ টুকরো হওয়া দেহ ছিল ফ্রিজের মধ্যে ঠাসা। শরীরের অংশগুলি আংশিকভাবে পচে গিয়েছিল। পুলিশ বলছে, অন্তত দুই সপ্তাহ আগে মহালক্ষ্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ আসছে দেখে প্রতিবেশীরা ওই মহিলার পরিবারকে ডাকেন। শনিবার ত্রিপুরার বাসিন্দা মহালক্ষ্মীর মা ও বোন বাড়িতে গিয়ে লাশটি দেখতে পান।

আরও পড়ুন- ফ্ল্যাটের ফ্রিজে তরুণীর টুকরো টুকরো দেহ! শ্রদ্ধাকাণ্ডের ছায়া বেঙ্গালুরুতেও?

ভ্যালিকাবলের বিনায়ক নগরে ভাড়া বাড়িতে একাই থাকতেন মহালক্ষ্মী। একটি শপিং মলে কাজ করতেন। স্বামীর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিল না। এই হত্যার নেপথ্যে পুলিশ মহালক্ষ্মীর বন্ধুদেরকেই সন্দেহ করেছে। তাঁর স্বামী, হেমন্ত দাস দাবি করেন যে, উত্তরাখণ্ডের একজন বন্ধু ছিলেন যিনি এই ঘটনার জন্য মূল দায়ী।

মুক্তিরাজন রায় অর্থাৎ মহালক্ষ্মীর সহকর্মী ১ সেপ্টেম্বর থেকে কাজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। মহালক্ষ্মীর কাজের শেষ দিনও ছিল ১ সেপ্টেম্বরই। পুলিশের সন্দেহ, ওই মহিলাকে ২ বা ৩ সেপ্টেম্বর হত্যা করা হয়েছে। তবে কী উদ্দেশ্যে তা স্পষ্ট নয় এখনও। পুলিশ জানাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে থাকে পারে অন্য সন্দেহভাজনরা।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানিয়েছিল, এই ভয়ানক হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মুক্তিরাজন প্রতাপ রায় নামে একজনকে খুঁজছেন তারা, যিনি ওড়িশার বাসিন্দা। বেঙ্গালুরু পুলিশের দু'টি দল পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশায় পাঠানো হয়। মুক্তিরাজন রায়ের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাকে খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। জানা গিয়েছে, মুক্তিরাজন বুধবার বাইকে করে পাণ্ডি গ্রামে এসে পৌঁছয়। বাড়িতেই ছিল সে। স্থানীয়রা তার মৃতদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।

আরও পড়ুন- যৌনাঙ্গে রড, দেহ ৩৫ টুকরো! অপরাধীকে নৃশংসতা শেখায় আসলে কারা?

পুলিশ জানাচ্ছে, মহালক্ষ্মী এবং মুক্তিরাজনের বন্ধুত্ব ২০২৩ সাল থেকে। তারা একই মলে কাজ করতেন। মহালক্ষ্মী এবং মুক্তিরাজনের সম্পর্ক বিষয়ে সম্প্রতি জানতে পেরেছিলেন যে তিনি অন্য একজনের সাথে ছিলেন। তিনি মহালক্ষ্মীর মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানা গেছে এবং এটি তার হত্যার কারণ হতে পারে, অফিসার যোগ করেছেন।

পুলিশ মহালক্ষ্মীর স্বামী হেমন্ত দাস, মা মীনা রানা এবং সহকর্মীদের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে মুক্তিরাজন রায় বেঙ্গালুরু বাড়ি থেকে নিখোঁজ। পুলিশ তখন মুক্তিরাজনের ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি জানান মুক্তিরাজন তাঁকে ফোন করেছিল এবং মহালক্ষ্মীকে খুন করার কথা স্বীকারও করেছে। তিনিই পুলিশকে আরও জানান, দাদাকে রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে বলেছিলেন তিনি। মুক্তিরাজন পশ্চিমবঙ্গ থেকেই তার ভাইকে ফোন করে এবং সেটিই ছিল তাঁর শেষ লোকেশন।

More Articles