এই কনকনে শীতে প্রাণ কাড়ছে কোল্ড স্ট্রোক! কোন উপসর্গগুলি দেখলেই সতর্ক হবেন?

Cold Stroke: ১৯৭০-১৯৮০ সালের তুলনায় ভারতে কোল্ড স্ট্রোকে মৃত্যুর হার দ্বিগুণ হয়েছে।

হিটস্ট্রোক বা সানস্ট্রোকের মতোই ভয়াবহ ঝুঁকি লুকিয়ে থাকে শীতকালেও, বরং বেশিই। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গ্রীষ্মের তুলনায় শীতকালেই মানুষের স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ে। সপ্তাহখানেক ধরে তাপমাত্রার পারদ যে পরিমাণ নেমে গিয়েছে তাতে কোল্ড স্ট্রোকের পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরাও। ঠান্ডার সময় মানুষের স্নায়ু, ত্বক এবং সারা শরীর সংকুচিত হতে থাকে যার ফলে আমাদের শরীর জমাট বাঁধতে শুরু করে। এ কারণে কোল্ড স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয়ে গেলে, সেই অবস্থায় দেহের স্ট্রোককে বলা হয় কোল্ড স্ট্রোক। এই সময়ে কোল্ড স্ট্রোকের ঝুঁকি ১০ থেকে ১২ শতাংশ বেশি থাকে। শীতের সময়ে, বিশেষ করে হঠাৎ টানা শীতের কামড়ে তাই নিজের, পরিজনদের বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের আরও যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।

কোল্ড স্ট্রোক এবছর উদ্বেগের বিষয় হয়ে গিয়েছে কারণ কোল্ড স্ট্রোকের কারণে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা বিশ্বে এই দশ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৭০-১৯৮০ সালের তুলনায় ভারতে কোল্ড স্ট্রোকে মৃত্যুর হার দ্বিগুণ হয়েছে। কোল্ড স্ট্রোকের মূল উপসর্গ মাইন্ড অ্যাটাক এবং প্যারালাইজিং।

ব্রেন স্ট্রোকের গুরুতর সমস্যাটি হলো, এটি যে কোনও জায়গায় এবং যে কারও সঙ্গে হতে পারে, এর কোনও নির্দিষ্ট সময় নেই। কিন্তু ঠান্ডার সময় এর ঝুঁকি বেশি হয়ে যায় কারণ ঠান্ডার কারণে আমাদের রক্ত ঘন হয়ে যায় এবং যে কোনও সময় হঠাৎ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং এতে মস্তিষ্কের কোষের স্থায়ী ক্ষতি হয়। এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো চিনতে পারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এক মিনিট দেরি করলেই মৃত্যু হতে পারে মানুষের। এই স্ট্রোকে বিশ্বে মৃত্যুর হার ১.৯ মিলিয়ন।

আরও পড়ুন- চোখে অন্ধকার, হাত পা অসাড়, রোজের জীবনেই লুকিয়ে ব্রেন স্ট্রোকের ফাঁদ! সতর্ক হবেন কীভাবে?

স্ট্রোকের লক্ষণ কী কী?

মুখের একটা অংশ পড়ে যায়

এই অবস্থায়, আমাদের মুখ কিছুটা অস্বাভাবিক দেখায়। সাধারণত একদিকের মুখে সমস্যা বেশি হয়, হাসতে বা কথা বলতে গেলে অবস্থা টের পাওয়া যায়।

হাতের দুর্বলতা

দুই হাত তুলতে গেলেই পার্থক্য চোখে পড়বে। একটি হাত দুর্বল অন্যটির তুলনায় দুর্বল ও অসাড় মনে হয়।

কথা বলতে অসুবিধা

হঠাৎ কথা বলতে অসুবিধা হয় এবং মুখ পুরোপুরি খুলতে সমস্যা হয়। যার ফলে কথা বলা, খাবার খাওয়ার অসুবিধা হতে পারে

অসাড় দেহ

শরীর হঠাৎ অসাড় হয়ে যায় এবং কোনও অনুভূতি থাকে না। কখনও কখনও শরীরের শুধুমাত্র একটি পাশ অসাড় হয়ে যায়।

চোখ ঝাপসা হওয়া

কিছু ক্ষেত্রে দৃষ্টিও ঝাপসা দেখায়। কখনও কখনও দৃষ্টিশক্তি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়াতে হাঁটতে অসুবিধা হয়

কোল্ড স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায়

প্রথমত, ভালো পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার খেতে হবে। ফাস্টফুড, জাঙ্ক ফুড সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলুন। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। শরীরের অবস্থা বুঝে এবং রেড মিট এবং সামান্য নোনতা খাবার খেতে পারেন। সবজি, ড্রাই ফ্রুট অবশ্যই খান।

দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। BMI ২৫-এর কম রাখুন। প্রতিদিন প্রায় ৩০ মিনিট নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করুন এবং স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০/৮০ mmHg বজায় রাখুন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং ধূমপান ত্যাগ করুন।

 

More Articles