বাংলার জেলের জামাই আদর শেষ, যে কারণে মমতার প্রিয় 'কেষ্ট' দিল্লির পথে
Anubrata Mondal TMC : দলের তরফে বারবার তাঁর পাশে দাঁড়ানোও হয়েছে। স্বয়ং মমতার পক্ষ থেকেও অনুব্রত নিয়ে এসেছে আক্ষেপের সুর।
বাঘ অবশেষে বনবিড়াল! বীর থেকে এবার একেবারে তলানিতে যোদ্ধা! রবিবারের বিশ্বকাপ-উত্তাপের রেশ তিলোত্তমায় কাটতে না কাটতেই, বঙ্গের রাজনীতির অলিগলিতে এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে ফের। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক কচকচানিও। আর এই আলোচনার কেন্দ্রে ফের জায়গা দখল করেছেন বীরভূমের 'বেতাজ বাদশা' অনুব্রত মণ্ডল। দিল্লির রাইস অ্যাভিনিউ আদালতের এক নির্দেশে বঙ্গের হাওয়া খাওয়া থুড়ি বাংলার জেলের 'পরিচর্যা' এবার বন্ধ হতে চলেছে অনুব্রত মণ্ডলের(Anubrata Mondal Delhi) । আদালতের নির্দেশে ইডি-র (ED) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মোদির (Narendra Modi) গড়ে পা দিতে হবে কেষ্টকে।
তৃণমূল-বিরোধীদের দাবি, অনেক চেষ্টার পরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) 'প্রিয় ভাই' কেষ্টর, আসানসোল জেলের জামাই-আদরের চড়াম চড়াম ঢাক এবার বাজবে তিহাড় (Tihar Jail) জেলে! তৃণমূলের কেষ্ট-বিড়ম্বনা এবং বারবার 'বোলপুরের মহারাজে'র এহেন দশায় শনির মারাত্মক প্রভাবের কথাও বলছেন জ্যোতিষীরা। এদিকে, দুর্নীতির একের পর অভিযোগ। আদালত। মামলা। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly) এবং গরুপাচার, কয়লা পাচারে বারবার বিধ্বস্ত হতে হতে কাঁটা গায়ে ফের নুনের ছিটে লেগেছে তৃণমূলের। পার্থ-অর্পিতা ছাড়িয়ে আবার অস্বস্তি বাড়িয়েছেন সেই কেষ্ট!
কিন্তু তাঁর দল কী বলছে? পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো যদিও প্রথম থেকেই দলের কাছে 'ব্রাত্য' নন জেলবন্দি অনুব্রত। দলের তরফে বারবার তাঁর পাশে দাঁড়ানোও হয়েছে। স্বয়ং মমতার পক্ষ থেকেও অনুব্রত নিয়ে এসেছে আক্ষেপের সুর। এদিনও তার অন্যথা হয়নি। রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলছেন, ''কেষ্ট বীরভূমের বাঘ। আমাদের আদালতের উপর ভরসা আছে। উপরে ভগবান, নিচে আদালত। এঁদের কাছে ন্যায়বিচার পাব।'' অনুব্রত মণ্ডলের গড়ে দাঁড়িয়ে তাঁর ডেপুটি অর্থাৎ বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের দাবি, "আশঙ্কা ছিল। বিজেপি নেতারা বারবার ডিসেম্বর মাসের বিভিন্ন তারিখের কথা বলছিলেন। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আমরা দিল্লির হাইকোর্টেও যেতে পারি। নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।''
আরও পড়ুন : ‘চড়াম চড়াম’ বাণী এখন অতীত, জেলের ভিতর কেমন আছেন বীরভূমের ‘কেষ্ট’
যদিও অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি গমনের আদালত-নির্দেশ প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূলকে একহাত নিয়েছেন রাজ্যের বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলছেন, ''তিহাড়ে তো যাওয়ারই কথা। যা অপরাধ এঁরা করেছেন! যান, ওখানে বিহার করে আসুন। কিছুদিন থাকুন, হাওয়া খান। পাপ বাপকেও ছাড়ে না! যত বড় চোর হোক, কেউ ছাড় পাবেন না। ধরা পড়বেই।'' সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, "অনুব্রত মণ্ডল মার্কা দুষ্কৃতীরা মমতার স্নেহধন্য বীর হতে পারেন। কিন্তু বাংলার সাধারণ মানুষের কাছে এঁরা অপরাধী ছাড়া আর কিছু নন। আর কোনও মূল্য নেই এঁদের। সঠিক নির্দেশ দিয়েছে আদালত।''
যদিও এত কিছুর পরেও বিপদ মোটেও কাটছে না কেষ্টর! দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল-নায়ককে কেন্দ্র করে আবার অস্বস্তিতে পড়ছে তৃণমূল কংগ্রেস। জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক মাস আগেই নয়াদিল্লির রাইস অ্যাভিনিউ আদালতে একটি মামলা দায়ের করে ইডি। ওই মামলায় আবেদন ছিল, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনুব্রত মণ্ডলকে ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লি নিয়ে যেতে চায় ইডি। সেই মামলার শুনানি ছিল সোমবার। ওই আদালতের বিচারক নির্দেশ দেন, 'ট্রানজিট রিমান্ডে আপাতত দিল্লি নিয়ে যাওয়া যাবে অনুব্রত মণ্ডলকে। এই পদ্ধতির ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা থাকবে না।' দিল্লি নিয়ে গিয়ে অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেও অনুমতি দিয়েছে ওই আদালত। প্রসঙ্গত, এই মামলায় দিল্লির ওই আদালতে অনুব্রত মণ্ডলের হয়ে সওয়াল করেন কেন্দ্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। কিন্তু কপিলের কঠিন সওয়াল জবাবেও শেষরক্ষা হয়নি অনুব্রত মণ্ডলের। দিল্লির পথেই যেতে হবে তাঁকে, নিশ্চিত হয়েছে এই বিষয়টিও।
কপিল সিব্বলের মামলা লড়া। অনুব্রতকে বাঁচাতে মরিয়া শাসকদল তৃণমূলের এই মরিয়া চেষ্টার পিছনেও যুক্তি দেখছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তাঁদের দাবি, আজ শুধু নয় কয়েক বছর আগে থেকেই মমতার ভরসার অন্যতম স্থান হয়ে উঠেছেন অনুব্রত মণ্ডল। শুধু বীরভূম নয়, লালমাটির দেশের পাশের জেলা বর্ধমান এবং জঙ্গলমহলের একাধিক জেলায়, সংগঠনের হাল ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল কেষ্টর। একের পর এক নির্বাচনে বিরোধীদের নাস্তানাবুদ করা থেকে শুরু করে বিরোধীশূন্যের কোটায় উপরের দিকে নাম তুলে ফেলেন তিনি। কিন্তু এর সঙ্গেই ওঠে একাধিক অভিযোগও।
আরও পড়ুন : কেষ্টর ‘বীরত্ব’ কেন জাহির করছেন মমতা? কতটা অপরিহার্য বীরভূমের বেতাজ বাদশা
তবে কে শোনেন কার কথা! ক্রমশ মমতার কাছের লোক অনুব্রতই হয়ে ওঠেন সব! বীরভূমের পাখি হাঁ করতেও তাঁর অনুমতি নিতে হত, এমন অভিযোগও উঠত মাঝে মাঝেই। নানুর থেকে বোলপুর, বীরভূমের কোণায়-কোণায় তৃণমূল-ব্যতীত অন্য কিছুর অস্তিত্ব শেষ করতে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের খুন, বিরোধীদের শেষ করে দেওয়ার সন্ত্রাসের নেপথ্যের নায়ক হিসেবেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে বারবার। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং বিরোধী-শূন্যতা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন অনুব্রত। আর সেই বছরেই শিরোনামে উঠে আসে তাঁর নাম। 'পুলিশের গাড়িতে বোম মারুন! নির্দল প্রার্থীর বাড়ি জ্বালিয়ে দিন,' চমকে দেওয়া সংলাপে বিতর্ক বাড়ান অনুব্রত। কিন্তু তিনিই তখন সব! কে আটকাবে তাঁকে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে সেই সময় বলেন, 'কেষ্ট ভালো ছেলে। ওঁর মাথায় অক্সিজেন কম পৌঁছয়।'
তবে মাত্র কয়েক বছরেই ভালোছেলে থেকে খারাপের দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করেন কেষ্ট! নকুল দানা-পাঁচন থেকে খেলা হচ্ছে! একাধিক গরমাগরম বক্তব্যে বঙ্গ রাজনীতির-মঞ্চে তখন হিট তিনি। ২০২১ এর হাইভোল্টেজ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন, একদা বন্ধু শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মাঠেও একাকুম্ভ হয়ে ওঠেন অনুব্রত মণ্ডল। হয়ে ওঠেন বীরভূমের সর্বেসর্বা। যাঁর নির্দেশে যেন বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খায়!
কিন্তু ২০২২ পড়তেই আর দিন ভালো যাচ্ছিল না অনুব্রত মণ্ডলের। অসুস্থ স্ত্রী-র মৃত্যুর পরে কেষ্টর একাকীত্বে বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দেয় গরুপাচার (Cattle Smuggling) ! একাধিক অভিযোগে বিপর্যস্ত হন অনুব্রত। চেপে ধরেন বিরোধীরা। চাপে পড়ে তৃণমূল। এদিকে একাধিকবার ইডি, সিবিআই ডেকে পাঠায় অনুব্রত মণ্ডলকে। আদালতের রক্ষাকবচের বশে মাঝে মাঝে অনুব্রত হাজির হন নিজাম প্যালেসে। আবার বেরিয়েও আসেন স্বশরীরে। একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদের সময় আসতেই, এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ণ ওয়ার্ডে ভর্তি হন অনুব্রত। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি আর।
আরও পড়ুন : সাজতেন অনুব্রতর ৫৭০ ভরি সোনায়, কেষ্টর গরু পাচারের দুর্নাম ঘোচাবেন কালীই!
গত ১১ আগস্ট সকাল-সকল বীরভূমের নিচুপট্টি এলাকায় পৌঁছে যায় সিবিআই। বিরাট কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ঘিরে ফেলা হয় কেষ্টর বাড়ি। অসুস্থতা-সহ একাধিক ক্ষেত্রে ছাড় পাওয়ার চেষ্টায় জল ঢেলে অবশেষে ওই দিনই গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল। আসানসোলের বিশেষ আদালতে তোলা হলে তাঁকে সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিশেষ আদালতের বিচারক।
জেলবন্দি অনুব্রত নিয়েও কম হয়নি বিতর্ক। একদিকে সিবিআই, ইডি-র নজরে প্রকাশ্যে আসতে থাকে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। অন্যদিকে জেলের মধ্যেই পুকুরের কাতলার জোগান থেকে শুরু করে পুজোর ব্যবস্থা, একাধিক খবরেও কেষ্ট-পরিচর্যার আবহ ছড়ায়। কিন্তু বারবার আদালতের দ্বারে এসেও জামিন পাননি গরম-গরম বক্তব্যের এই মালিক। বোগটুই গণহত্যার পরে যাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েই পুলিশকে নির্দেশ দিতে শোনা গিয়েছিল। যাঁকে প্রকাশ্যে পুলিশের সামনেই ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে দেখা গিয়েছিল। তিনিই যেন দমে যান ক্রমশ। একমাত্র কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের বিরুদ্ধেও ওঠে একাধিক অভিযোগ। তা নিয়েও বিপর্যস্ত হন অনুব্রত। সুকন্যাকেও বারবার তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে ইডি-সিবিআই।
প্রসঙ্গত, গত ৮ সেপ্টেম্বর নেতাজী ইনডোরের একটি অনুষ্ঠান-মঞ্চে দাঁড়িয়ে অনুব্রত মণ্ডল সম্পর্কে মমতা বলেন, ''কেষ্টকে বীরের সম্মান দিয়ে জেল থেকে বের করে আনতে হবে। মনে রাখবেন!'' মমতার মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়, অভিযুক্ত নেতাকে বীর বলছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। প্রশ্ন ওঠে তা নিয়েও। এদিকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও প্যাঁচে পড়তে থাকেন অনুব্রত মণ্ডল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (CBI) জোড়া ফলায়, তাঁর বিপদ বাড়ায় অনুব্রত মণ্ডলের বিতর্কিত দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। যিনি আগেভাগেই গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার হন সিবিআইয়ের হাতে। একজন সামান্য পুলিশ কনস্টেবলের কোটি-কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। এর পিছনে অনুব্রত মণ্ডলের হাত রয়েছে বলেও ওঠে অভিযোগ। সেই সায়গলকে বর্তমানে রাখা হয়েছে দিল্লিতে। এবার অনুব্রত মণ্ডলকেও দিল্লি নিয়ে যাওয়ার কারণ বলা না হলেও সায়গলের সঙ্গে বসিয়ে জেরার সম্ভাবনা রয়েছে। এর সঙ্গেই যোগ হয়েছে আর এক অভিযুক্ত। পাচারের 'মাস্টারমাইন্ড' বলে পরিচিত এনামুল হকের নাম। অভিযোগ, এই এনামুলের মাধ্যমেই পাচারের লক্ষ্যপূরণ করত দুষ্কৃতীরা। এনামুলও বর্তমানে দিল্লিতে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে সায়গল, এনামুল এবং অনুব্রত মণ্ডলের মুখোমুখি জেরার প্রয়োজন অনুভব করে ইডি। কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার তরফে আবেদন করা হয়, দিল্লির ওই বিশেষ আদালতে।
অবশেষে সফল! ইডির ইচ্ছায় দিল্লিতে মুখোমুখি হতে পারেন অনুব্রত, এনামুল এবং সায়গল। তিন অভিযুক্তকে মুখোমুখি জেরা করে একাধিক নয়া তথ্য বের করে আনতে পারেন আধিকারিকরা, এমনও বলছেন কেউ কেউ। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি শোরগোল ফেলেছিল রাজ্যে। তৃণমূলের অনুব্রত-অস্বস্তির আগেই ঘটে এই ঘটনা। সমস্যায় পড়ে তৃণমূল কংগ্রেস। তড়িঘড়ি পার্থ-বিদায় নিশ্চিত করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। কড়া ভূমিকা নেওয়া হয় দলের তরফে।
আরও পড়ুন : প্রতিদিন একটু একটু করে অক্সিজেন, জেলে হেসেখেলেই সময় কাটছে কেষ্টর
কিন্তু কেষ্ট-প্রসঙ্গে বিপরীত ভূমিকা পালন করে রাজ্যের শাসকদল। 'ভালো সংগঠক অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়ায় দলের নেতৃত্ব। কেষ্টর পক্ষে সওয়াল করেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এদিনও তার অন্যথা হয়নি। কেষ্টর দিল্লি যাওয়া আটকে দিতে শেষ চেষ্টা হয়। কিন্তু রাজ্যের তরফে সেই আবেদন ধোপে টেকেনি আদালতে।
অনুব্রত দিল্লি গেলে কেন আশঙ্কা? রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, অনুব্রত মণ্ডলের রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে থাকা এমন কোনও সংশোধনাগারে চলে গেলেই অনেকটা সমস্যা পড়বেন তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা। এমনকি অনুব্রতকে নিয়ে নানান আপডেট রাখার ক্ষেত্রেও চাপ বাড়বে নবান্নের। অনেকেই বলছেন, অনুব্রত মণ্ডলের আদালতের নির্দেশে দিল্লি যাওয়া আবার ত্রিমুখী-সংস্পর্শের বিপদ মারাত্মক করতে পারে। অর্থাৎ দাবি করা হচ্ছে, সায়গল এনামুল এবং অনুব্রত মুখোমুখি জেরায় বসলে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য উঠে আসতে পারে। যা রাজ্যের শাসকদলের পক্ষে স্বস্তির না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
এদিকে এনামুল, সায়গল যদি অনুব্রতকে সামনে পেয়ে বিস্ফোরক কিছু ফাঁস করে, সেক্ষেত্রেও চাপ বাড়বে কেষ্টর উপর। অনেকেই বলছেন, এই পরিস্থিতিতে তিনিও কিছু বলবেন। সেই বিষয়টির সন্ধিক্ষণকে মোক্ষম অস্ত্র হতে দিতে পারে তদন্তকারীদের কাছে। উঠে আসতে পারে বিরাট কোনও নামও।
প্রসঙ্গত, অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের প্রায় ৫৭ দিন পর গরুপাচার মামলায় চার্জশিট জমা করে সিবিআই। সেখানে এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে প্রাথমিকভাবে নাম দেওয়া হয় ১২ জনের। ৩৫ পাতার চার্জশিটে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে উঠে আসে একের পর এক অভিযোগ। সমস্যায় পড়েন অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীরা। যদিও একাধিক চেষ্টার পরেও এখনও জেলেই রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। সোমবার গভীররাত অথবা মঙ্গলবার সকালেই বিশেষ বিমানে দিল্লি যাচ্ছেন অনুব্রত।