বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট চরমে? ভারতে কতটা ছায়া ফেলবে এই বিপদ?
একটা যুদ্ধের প্রভাব যে শুধুমাত্র সেই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী দেশগুলির মধ্যে পড়বে–সেরকমটা কখনওই হয় না। ইতিহাসেও এরকম বহু নিদর্শন রয়েছে, যেখানে যুদ্ধ-পরবর্তী প্রভাব ছিল বিশ্বব্যাপী, সর্বগ্রাসী। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের পরিণতিও তার থেকে আলাদা কিছু নয়। প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার এই দু’টি দেশ, এদের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আবিশ্ব জ্বালানির ঘাটতি হওয়াটা তো অবশ্যম্ভাবী। তবে শুধুমাত্র প্রাকৃতিক গ্যাস নয়, এই যুদ্ধের অভিঘাত সরাসরি বিশ্বের খাদ্যের আধারের ওপরেও পড়তে পারে খুব শীঘ্রই। হয়তো অনেকেই এই বিষয়টি নিয়ে অবগত নন, রাশিয়া-ইউক্রেন, এই দু’টি দেশই কিন্তু সারা বিশ্বের কৃষি এবং শস্য সরবরাহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই দুই দেশ যত পরিমাণ গম উৎপাদন করে, তার ধারেকাছে বিশ্বের কোনও দেশ আসতেই পারবে না। ভুট্টা এবং বার্লি উৎপাদনেও এই দেশগুলির জুড়ি মেলা ভার। গমের দিক থেকে দেখতে গেলে, বিশ্বজুড়ে রফতানি হওয়া গমের মোট পরিমাণের ২৮.৫% আসে এই দুই দেশ থেকেই।
কিন্তু, সারা বিশ্বের খাদ্য রফতানির ক্ষেত্রে নতুন করে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই যুদ্ধ। অর্থনীতিবিদদের ধারণা, বিশ্বে স্থানীয় সংঘাত তেমন কিছু নেই। যখন কয়েকটি দেশের মধ্যে কোনও সংঘাত দেখা দেয়, তখন গোটা বিশ্বকে এর ফল ভুগতে হয়। এরকমই হতে চলেছে এই যুদ্ধের ক্ষেত্রেও। শীঘ্রই রাশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধের ফলাফল বিশ্বের তামাম উন্নত এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির ক্রিয়াকলাপগুলিকে অভিভূত করবে বলে মত অর্থনীতিবিদদের। অনেকের ধারণা, বিশ্বে খাদ্যসংকট পৌঁছবে চরমে। দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির আর্থিক অবস্থা হবে বিপর্যস্ত। দরিদ্র দেশগুলোর বৃহৎ জনসংখ্যা যখন ক্ষতিগ্রস্থ হতে শুরু করবে, তখনই শুরু হবে বিশ্বজুড়ে খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি। কৃষিনির্ভর নয়, এমন দেশগুলির আর্থিক পরিস্থিতি হয়ে উঠবে ভয়াবহ, যা বিশ্বকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এক ভয়াবহ আর্থিক, এবং এই দশকের সবথেকে খারাপ খাদ্যসংকটের দিকে।
ইতিমধ্যেই এই যুদ্ধের প্রভাব কিছু কিছু দেশে পড়তে শুরু করেছে। তুর্কির দরিদ্র জনতাকে এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে সরকারের নিজস্ব রেশনের পাউরুটি কিনতে হচ্ছে। বাজার থেকে ন্যূনতম খাদ্যদ্রব্য কেনার পর্যন্ত ক্ষমতা নেই তুর্কির মানুষদের। যুদ্ধ ছাড়াও এর নেপথ্যে রয়েছে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের ভুলে ভরা রাষ্ট্রনীতি। একসঙ্গে এই দু’টি বিষয় মিলে তুর্কির মানুষদের একেবারে নাজেহাল করে তুলেছে। অন্যদিকে, এই একই অবস্থা টিউনিশিয়া দেশটিরও। গত তিন বছর লাগাতার খরা থাকার কারণে এই দেশের কৃষিকাজ সম্পূর্ণরূপে ব্যাহত। এই অবস্থায়, এই দেশটিকে সম্পূর্ণরূপে ভরসা করতে হত রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে আমদানি করা খাদ্যের ওপর। যুদ্ধের কারণে খাদ্যের আমদানি কার্যত বন্ধ। এই মুহূর্তে পুরো টিউনিশিয়াতে যত পরিমাণ খাদ্য দরকার, তার কেবল ৫০ শতাংশ আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে অন্য দেশ থেকে। শুধুমাত্র যে সেখানকার মানুষ আধপেটা খেয়ে রয়েছেন, তাই নয়, টিউনিশিয়ার সরকারের সরকারের কোষাগারের ওপরেও বাড়ছে চাপ। শুধুমাত্র, খাদ্যদ্রব্য কেনার জন্য এই বছর টিউনিশিয়াকে খরচ করতে হয়েছে ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের থেকে প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। অন্যান্য দেশেও মূল্যবৃদ্ধি চরম সীমায় পৌঁছে গেছে।
আরও পড়ুন: চিনের শত্রুতা নাকি পরপর ভুল সিদ্ধান্ত, কেন দেউলিয়া শ্রীলঙ্কা
মরক্কোতে প্রকাশ্য রাস্তায় শুরু হয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের বিক্ষোভ সমাবেশ। অন্যদিকে, উত্তর আফ্রিকার সুদানে মূল্যবৃদ্ধি ২৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। আফ্রিকাজুড়েই শুরু হয়েছে চরম মূল্যবৃদ্ধি। এরিত্রিয়া, সিরিয়া এবং ইথিওপিয়ার মতো দেশগুলিও খাদ্যের অভাবে কার্যত ধুঁকছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই খাদ্যসংকট আরও চরমে পৌঁছবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্য আফ্রিকার এই দেশগুলিতে এর আগেও এরকম খাদ্যসংকট দেখা গিয়েছিল। সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের বিক্ষোভ, অনাহার এবং অর্ধাহারে মৃত্যুর ঘটনা– এই সমস্ত দেশগুলির অর্থনীতিকে প্রতিদিন আরও খারাপ দিকে নিয়ে যেতে শুরু করে। এই যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ও এই দেশগুলির জন্য খুব একটা ভাল যাচ্ছে না। মূল্যবৃদ্ধির জন্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই সমস্ত আফ্রিকান দেশগুলির অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি। তার ওপর রয়েছে প্রচুর ঋণের বোঝা।
চিনেও কৃষিকাজের অবস্থা কার্যত তথৈবচ। গত বছরে হওয়া ভয়ংকর বন্যা থেকে চিন এখনও পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেনি। চিনের আর্থসামাজিক এবং কৃষিকাজের পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হতে পারেনি। চিন সরকারের জন্য কৃষিকাজের দিক থেকে সময়টা বেশ চ্যালেঞ্জিং। বিশ্ব অর্থনীতিতে চিনের ভূমিকা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্যানডেমিকের পর থেকে বেইজিংয়ের অর্থনীতিতেও পড়েছে আঘাত। সেই দেশেও মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে লাগাতার। সারা বিশ্বের সাপ্লাই চেনের ওপর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের কৃষি এবং খাদ্য নিয়ামত কমিটির একটি রিপোর্টে উঠে এসেছে, চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সারা বিশ্বের খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ছিল বিগত দশকের মধ্যে সবথেকে বেশি। এই সংস্থাটির তরফ থেকে বিশ্বজুড়ে একটি ফুড প্রাইস ইনডেক্স চালানো হয়। দানাশস্য এবং উদ্ভিজ্জ তেল, এই দু’টির উপরেই মূলত নির্ভরশীল থাকে এই প্রাইস ইনডেক্স। রাশিয়া এবং ইউক্রেন, এই দু’টি দেশ দানাশস্য এবং উদ্ভিজ্জ তেল উৎপাদন এবং রফতানিতে বিশ্বের মধ্যে শীর্ষ স্থানে অবস্থান করে। যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে এই মুহূর্তে দু’টি দ্রব্যের রফতানিই ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ২০২১ থেকেই সারা বিশ্বে গম এবং বার্লির দাম ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। অপরদিকে, ২০২০ থেকে বাড়তে শুরু করেছে রেপসিড তেল এবং সূর্যমুখী তেলের দাম। চলতি বছরে এই দুই ধরনের তেলের মূল্যবৃদ্ধির হার যথাক্রমে ৬৫ ও ৬৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য একেবারেই সুখকর সংকেত নয়।
ভুট্টার দামেও বৃদ্ধি হয়েছে গত দুই বছরে। চলতি বছরের মার্চ মাসে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনায় দেখা গিয়েছিল ফসল মড়ক, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছিল ভুট্টা রফতানির ক্ষেত্রে। একই সঙ্গে গমের দামও অনেকটাই বৃদ্ধি পায়, ইউক্রেনের বন্দরগুলির অব্যবস্থার কারণে। এছাড়াও উন্নতশীল দেশগুলির রক্ষণনীতি নিয়েও উঠতে শুরু করেছিল প্রশ্ন। নিজের দেশের মানুষের কথা ভেবে, অন্য দেশে খাদ্য রফতানি বন্ধ করেছিল ইউক্রেন, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার মতো দেশগুলি। ভুট্টা এবং গম রফতানিতে আরও একটি দেশ বিশ্বে বড় ভূমিকা গ্রহণ করে, তা হল মলদোভা। এই দেশটিও তাদের দেশে উৎপন্ন হওয়া খাদ্যদ্রব্য রফতানি বন্ধ করে দেয় চলতি বছরে। হাঙ্গেরিতে এই মুহূর্তে খাদ্যসংকট, তাই বাইরের দেশের জন্য রফতানি বন্ধ। মিশরের অবস্থাও প্রায় একইরকম। চলতি মাসে বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য খাদ্যদ্রব্য রফতানিতে ভাল অঙ্কের কর গ্রহণ করতে শুরু করেছে রাশিয়া। অন্যদিকে, নিজের দেশের মানুষের যাতে খাদ্যদ্রব্যের অভাব না হয় তাই, গত দু’মাস ধরে ইউক্রেনও খাদ্য রফতানি বন্ধ রেখেছে, যা প্রভাব ফেলেছে বিশ্বের শস্যভাণ্ডারের ওপর।
আরও পড়ুন: স্রেফ পেট্রলই নয়, আগুন দাম জীবনদায়ী ওষুধেরও, কোন যুক্তিতে আকাশছোঁয়া মূল্য?
এই খাদ্যসংকটে ভারত কোথায় দাঁড়িয়ে?
খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি এই মুহূর্তে আবিশ্ব আরও একটি সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে, যার ফলে সংকটে রয়েছে ভারত-সহ বিশ্বের সমস্ত কৃষিনির্ভর দেশ। খাদ্যদ্রব্য এবং দানাশস্যের পাশাপাশি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে সারের দাম। ইউরিয়া এবং নাইট্রোজেন সারের মূল্যে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি লক্ষ করা গেছে বিগত এক বছরে। রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী এই এক বছরে প্রায় তিনবার বৃদ্ধি পেয়েছে সারা বিশ্বে সারের দাম। ফসফরাস সারের দাম এমনিতেই বেশি থাকে। এক বছরে এই সারটির দাম বৃদ্ধির হার ছিল সব থেকে বেশি। এই মূল্যবৃদ্ধি প্রভাবিত করেছে ভারতের কৃষিক্ষেত্রকেও।
এই মুহূর্তে সারের জন্য ভারত নির্ভর করে থাকে রফতানির ওপরেই। ভারতের প্রয়োজনের ২৫ শতাংশ ইউরিয়া আসে রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে। ৯০ শতাংশ ফসফেট সার (ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট, মোনো অ্যামোনিয়াম ফসফেট অথবা ট্রিপল সুপার ফসফেট) রফতানি করা হয় বিশ্বের সার উৎপাদনকারী দেশগুলির কাছ থেকে। পাশাপাশি, পটাশ সারের প্রায় পুরোটাই আসে রফতানি থেকেই। ২০২০-’২১ আর্থিক বছর থেকেই সার আমদানির ক্ষেত্রে অনেকটাই রাশিয়া এবং ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে ভারত। একটি আর্থিক সমীক্ষা অনুযায়ী দেখা গেছে, ২০২১-’২২ আর্থিক বছরে রাশিয়া থেকে ভারতের ইউরিয়া আমদানি ২৭.১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ১২৩.৭৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্যদিকে, ইউক্রেন থেকে এই আমদানির পরিমাণ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত ছিল ৩৬৮.৭৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ভারতের সার রফতানি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে।
ইউক্রেন থেকে সারের আমদানি এবং রফতানি ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলতি বছর থেকেই বিদেশে এই সমস্ত পণ্য রফতানি বন্ধ করেছে রাশিয়া। ফলে, সমস্যায় পড়েছে ভারতের কৃষিক্ষেত্র। এই মুহূর্তে ভারতের কাছে শুধুমাত্র একটি রাস্তা। চিন, ওমান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী থেকে অতিরিক্ত সার আমদানি করে কোনওভাবে তাদের এই অভাব পূরণ করতে হবে। ভারতে ইউরিয়া উৎপাদন যদি কোনওভাবে বৃদ্ধি করা সম্ভবও হয়, অন্যান্য সারের অপ্রতুলতার জন্য সমস্যায় পড়বে ভারত। প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিও সারের দাম বৃদ্ধির একটি অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউরিয়া সার তৈরি করার জন্য প্রাকৃতিক গ্যাস প্রয়োজন হয়। বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে ইউরিয়া সারের দামের ওপর। ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের একটি গণনায় দেখা গেছে, যদি এভাবেই প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পায়, তাহলে খুব শীঘ্রই ভারতের সারের সাবসিডি ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
ভারতের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
সারের দাম বৃদ্ধি পেলেও ভারতে এখনও পর্যন্ত কোনও খাদ্যসংকট তৈরি হয়নি। ভারত যদি সম্পূর্ণরূপে অর্গানিক চাষ সঠিক পদ্ধতিতে শুরু করতে পারে, তাহলে ভারতের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। এই মুহূর্তে ‘ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া’-র কাছে ২৩.৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন গম সঞ্চিত রয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের খাদ্য দফতরের একটি হিসেবে বলা হয়, ভারতের মানুষদের পর্যাপ্ত খাদ্যের জন্য ৭.৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন গম সঞ্চিত রাখা দরকার। এই মুহূর্তে ভারতের কাছে এই মাপকাঠির প্রায় চারগুণ বেশি গম সঞ্চিত রয়েছে।
সারা বিশ্বের নিরিখে দেখতে গেলে, এই মুহূর্তে ভারতে ১৪.১৪ শতাংশ গম উৎপন্ন হয়। ২০২০ সাল থেকে গম রফতানির ক্ষেত্রেও উন্নতি করতে শুরু করেছে ভারত। ২০২২ অর্থবর্ষে গম রফতানির ওপর লক্ষ রাখছে ভারত সরকার। ২০২১ অর্থবর্ষে ভারত ২.১৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন গম রফতানি করেছিল অন্য দেশে। এই অর্থবর্ষে তারা লক্ষ্য নিয়েছে, ৬.৬ মেট্রিক টন গম তারা রফতানি করবে। গম রফতানিতে ভারতের কাছে সম্ভাবনা আরও বাড়ছে। কৃষি-বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ভারত যদি সঠিক পদ্ধতিতে গমের উৎপাদন করতে পারে, তাহলে সারা বছরে ১০ মিলিয়ন মেট্রিক টন পর্যন্ত গম রফতানি করতে পারবে তারা। ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের মাপকাঠি মেনে চললে ভারতের জন্য সম্ভাবনা আগামী দিনে আরও বৃদ্ধি পাবে। ভারতের গমের মান হয়তো ইউক্রেন বা রাশিয়ার গমের মতো হবে না। কিন্তু, তারা যদি গমের দাম একটু কম রাখতে পারে, তাহলে বিশ্ববাজারে ভারতীয় গমের চাহিদা আরও বাড়বে। তবে এই সবকিছুর আগে ভারতকে সারের অপ্রতুলতা নিয়ে কোনও একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবেই, নতুবা ভারতের পক্ষে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে।