সিনেমা দেখায় বিশ্বরেকর্ড! এক বছরে ৭৭৭টি সিনেমা কীভাবে দেখলেন এই ব্যক্তি?
Guinness World Record: প্রতিদিন ভোর ৬.৪৫-এ উঠে কাজে ছুটতেন তিনি। যা শেষ হক দুপুর ২.৪৫ নাগাদ। এর পর ব্যাক টু ব্যাক তিনটি করে সিনেমা নিয়মিত দেখতে হত জ্যাককে।
সিনেমা দেখার নেশা অনেকেরই থাকে, তাই বলে সিনেমা দেখে গিনেস বিশ্ব রেকর্ডে নাম! এমনই আশ্চর্য ঘটনা ঘটিয়ে ফেললেন আমেরিকার বাসিন্দা জ্যাক সোপ। সিনেমার পোকা বললেও তাঁকে কম বলা হবে। নাহলে মাত্র এক বছরে অন্তত ৭৭৭টি সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখে ফেলতে ফেলা কি সহজ কথা নাকি! ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২৩ সালের জুলাই, মাত্র এই এক বছরের সময়সীমাতেই ওই বিপুল সংখ্যক সিনেমা দেখে ফেলেছেন তিনি। আর তাতেই গড়া হয়ে গিয়েছে বিশ্ব রেকর্ড।
আরও পড়ুন: রিয়েলিটি শো থেকে সোজা গিনেস বুকের পাতায়, মার্শাল আর্টে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করল নাগাল্যান্ড
এর আগে ৭১৫টি সিনেমা দেখে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন ফ্রান্সের বাসিন্দা ভিনসেন্ট ক্রোহন। সেটা ২০১৮ সালের ঘটনা। তবে ভিনসেন্টের সেই রেকর্ড পুরোপুরি ভেঙে নয়া রেকর্ড গড়েছেন ৩২ বছরের জ্যাক। আমেরিকার পেনসিলভিনিয়ার বাসিন্দা সে। ছোটো থেকেই সিনেমা দেখার নেশা তাঁর। এমনিতেই প্রতিবছর একশো-দেড়শো করে সিনেমা দেখতেন তিনি। তবে এবার তিনি ময়দানে নেমেছিলেন রেকর্ড গড়ার লক্ষ্যমাত্র নিয়েই।
এক বছরে ৩৬৫টি দিন। এই ৩৬৫টি দিনে তিনি দেখে ফেলেছেন মোট ৭৭৭টি সিনেমা। অর্থাৎ এক বছরের যত দিন, তার চেয়েও দ্বিগুণ সংখ্যক সিনেমা দেখতে হয়েছে তাঁকে। সেই হিসেবে দেখতে গেলে প্রতিদিন অন্তত দুটি করে সিনেমা তো দেখতেই হয়েছে, একেকদিন তার চেয়েও বেশি সংখ্যক সিনেমা দেখতে বাধ্য হয়েছেন জ্যাক। সিনেমা দেখার ক্ষেত্রে তেমন কোনও বাছবিচার ছিল না তাঁর। বিভিন্ন রকম সিনেমা দেখেছেন জ্যাক এই এক বছরে। দেখেছেন বিভিন্ন ভাষার সিনেমা। তাঁর এই যাত্রা শুরু হয়েছিল 'মিনিয়নস: রাইজ অব গ্রু' ছবিটি দিয়ে, শেষ হয়েছে 'ইন্ডিয়ানা জোনস অ্যান্ড দ্য ডায়াল অফ ডেসটিনি' ছবিটি দিয়ে।
তবে এই রেকর্ড গড়ার ক্ষেত্রে কিন্তু কড়া ধরনের বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। ব্রিটিশ রেফারেন্স বুকের শর্ত অনুযায়ী, এই রেকর্ডের লড়াইয়ে নামা ব্যক্তিটিকে সমস্ত সিনেমা মনোযোগ সহকারে দেখতে হবে। সিনেমা চলাকালীন ঘুমিয়ে পড়লেন বা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে খুটখুট করলেন, এমনটা কিন্তু চলবে না মোটেই। শুধু কি তাই! সিনেমা দেখার সময় খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা ছিল জ্যাকের। তিনি এই সব শর্ত পালন করছেন কিনা তা নজরদারীর জন্য রীতিমতো পাহারাদারেরা ঘুরত জ্যাকের পাশাপাশি। জ্যাক জানিয়েছেন. সিনেমাহলের কর্মীরা প্রতিটি স্ক্রিনিংয়ের সময় চোখে চোখে রাখত জ্যাককে।
বেশিরভাগ সিনেমাই তিনি দেখেছেন রিগ্যাল সিনেমায়। তার জন্য জ্যাকের কাছে ছিল রিগ্যাল সিনেমার আনলিমিটেড সদস্যপদ। যার মাধ্যমে মাত্র ২২ ডলারের বিনিময়ে আনলিমিটেড সিনেমা দেখার সুযোগ পেয়েছেন মার্কিন এই বাসিন্দা। সহজ ছিল না এই রেকর্ড গড়ার কাজ। তবে এই ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ নিয়েও কিন্তু প্রতিদিনের কাজ থেকে সরে আসেননি জ্যাক। প্রতিদিন ভোর ৬.৪৫-এ উঠে কাজে ছুটতেন তিনি। যা শেষ হক দুপুর ২.৪৫ নাগাদ। এর পর ব্যাক টু ব্যাক তিনটি করে সিনেমা নিয়মিত দেখতেন জ্যাক। এ তো গেল, সপ্তাহের পাঁচ দিনের গল্প। সপ্তাহান্তে আরও বেশি সংখ্যক সিনেমা দেখার চেষ্টা করতেন জ্যাক।
আরও পড়ুন: ৯১ বছরেও পুরোদমে কাজ করছেন ক্যামেরার পিছনে, চেনেন গিনেস বুকে নাম তোলা এই পরিচালককে?
আর সেই বিপুল পরিশ্রমেরই পুরস্কার মিলেছে হাতেনাতে। সিনেমাপোকার খেতাব তো তিনি ছিনিয়ে নিয়েছেন বটেই, তার সঙ্গে মিলেছে বিশ্বরেকর্ড গড়ার সুযোগ। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে আপাতত সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সিনেমা এক বছরে দেখার রেকর্ড রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। পরবর্তীতে আরও বেশি সংখ্যক সিনেমা দেখার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তিনি কি নামতে চলেছেন ময়দানে, সেটাই দেখার।