দেশের 'এক্স-রে' চাইছে কংগ্রেস! নীতীশের ডিগবাজি নিয়ে কী বললেন রাহুল?

Nitish Kumar - Rahul Gandhi : রাহুল বলছেন, বিহারের রাজনীতির গোড়া আসলে এমনই দুর্বল। একটু চাপ প্রয়োগ করা হলেই নীতীশ কুমার ইউ-টার্ন নিয়ে ফেলেন।

নীতীশকে দরকার নেই। বেশ কিছু ঘণ্টা নীতীশের ডিগবাজি ইস্যুতে চুপ থাকার পরে অবশেষে ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম মুখ জেডিইউ-এর প্রধান নীতীশ কুমারের দলত্যাগের প্রসঙ্গে মন্তব্য করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। রবিবার, রাহুলের ন্যায় যাত্রা বিহারে আসার ঠিক একদিন আগেই সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের বা এনডিএ-র সঙ্গে জোট করেছেন। বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোট থেকে সরে এসে প্রাক্তন মিত্র বিজেপিতেই গিয়েছেন তিনি। রাহুল গান্ধি বলছেন, বিহারে মহাগঠবন্ধন যেমন ছিল তেমনই রইবে, তারা রাজ্যে সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে। ফলে এই জোটে নীতীশ থাকলে কি থাকলেন না কিচ্ছু এসে যায় না।

জনতা দল ইউনাইটেড-এর প্রধান নীতীশ এমন দলবদলে দক্ষ বললেও কম বলা হয়। এই নিয়ে নবমবার তিনি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হলেন, প্রতিবারই সুবিধা মতো জোট বদলে নেন তিনি। ঘন ঘন এমন রাজনৈতিক ডিগবাজির জন্য সারা দেশই তাঁকে চেনে পল্টুরাম নামে। ২০২৪ এর নির্বাচনের আগে এই মোক্ষম ডিগবাজির জন্য তাই নীতীশকে আক্রমণ করেছেন, উপহাসও করেছেন রাহুল। বলছেন, বিহারের রাজনীতির গোড়া আসলে এমনই দুর্বল। একটু চাপ প্রয়োগ করা হলেই নীতীশ কুমার ইউ-টার্ন নিয়ে ফেলেন।

মঙ্গলবার বিহারের পূর্ণিয়া জেলায় সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় রাহুল গান্ধি নীতীশের এই ডিগবাজি নিয়ে চরম রসিকতা করেছেন। রাহুল বলেছেন, “এক্ষুণি বাঘেলজি (ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী) আমাকে মজা করে একটা কথা বললেন। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ রাজ্যপালের বাড়িতে শপথ নিয়েছেন। শপথ নিয়েছেন তাঁর কয়েকজন মন্ত্রীও। উদযাপন চলছিল। নীতীশ কুমার ঠিক করলেন বাড়ি ফিরবেন। হঠাৎ ফিরে যাওয়ার সময় নীতীশ বুঝতে পারলেন তিনি তাঁর শালটি রাজ্যপালের বাড়িতে ফেলে রেখে গেছেন। তিনি ফিরে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করলেন। রাজ্যপাল তো অবাক! বললেন 'একী! এবার এত তাড়াতাড়ি চলে এলেন?”

আরও পড়ুন- জোট নয়, প্রতিপক্ষ কংগ্রেস! রাহুলের ন্যায় যাত্রার দিনেই জনসভা কেন মমতার? 

মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে আক্রমণের পাশাপাশি রাহুল জাতি-শুমারির গুরুত্বও তুলে ধরেছেন। তিনি বলছেন, দলিত এবং অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ দেশের সমস্ত ক্ষেত্রেই সমান গুরুত্ব পান না। তাই দেশের এক্স রে করা প্রয়োজন। সামাজিক ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপই হলো দেশের 'এক্স-রে’। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি অর্থাৎ ওবিসি ভারতের বৃহত্তম সম্প্রদায়। কিন্তু ভারতে এই সম্প্রদায়ের জনসংখ্যার কোনও সরকারি রেকর্ডই নেই।

রাহুল গান্ধির ভারত জোড়া ন্যায় যাত্রা পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিহারে ঢোকে। পূর্ণিয়ায় সমাবেশ করেন রাহুল, জেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। আজ, বুধবার তিনি আসছেন ফের বাংলায়। এদিকে রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাহুলে পাল্টা সমাবেশ করছেন, জনসংযোগ করছেন। নীতীশ কুমার একা ডিগবাজি খেয়েছেন তা নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সাফ করেছেন যে তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও আসন সমঝোতা করবেন না।

তাহলে রাহুলের ন্যায় যাত্রার নিট ফল এই রাজ্যে কি শূন্য?

More Articles