বিশ্বকাপ জেতার জন্য মেসিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পেলে
'দিয়েগো নিশ্চয়ই এখন হাসছে', মেসিদের বিশ্বজয়ে যে ভাবে আবেগে ভাসলেন পেলে
FIFA World Cup 2022 : ম্যাচ শেষের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে এল তাঁর লেখা। হাসপাতালে শুয়ে শুয়ে তিনি মনে করছেন তাঁর আর্জেন্টাইন বন্ধুকে।
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামের আলো ঝলমলে আবহ থেকে তিনি তখন অনেকটা দূরে। দুর্বল শরীরে সাও পাওলোর হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে। ৮২ বছরের শরীরটা আগের থেকে অশক্ত হয়ে পড়েছে অনেকটা। বিখ্যাত পা দু’টিও আর আগের মতো ম্যাজিক করে না। কিন্তু তাঁর চোখ, কান – সমস্ত ইন্দ্রিয় বিশ্বকাপের দিকে সজাগ। বিশ্বকাপ ফাইনাল হয়ে গেল, আর পেলে কিছু বলবেন না, তা হয় নাকি কখনও!
তিনি নিরাশও করলেন না ভক্তদের। উল্টোদিকে ব্রাজিলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনা। তাদের সামনে অপ্রতিরোধ্য ফ্রান্স। মেসি, এমবাপে – দুই তারকাকে নিয়েই গোটা বিশ্ব উথালপাথাল। পেলের গায়েও সেই ঢেউয়ের স্পর্শ এসে পড়বে, সেটাই স্বাভাবিক। হাজার হোক, তিনিই তো ফুটবলের সম্রাট। সাম্বা ম্যাজিকের আরেক নাম। ম্যাচ শেষের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে এল তাঁর লেখা। হাসপাতালে শুয়ে শুয়ে তিনি মনে করছেন তাঁর আর্জেন্টাইন বন্ধুকে। “দিয়েগো নিশ্চয়ই এবার হাসছে”…
View this post on Instagram
দিয়েগো মারাদোনা এবং পেলে, পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী। পরস্পরের অভিন্নহৃদয় বন্ধুও বটে। দুজনের মধ্যে কে সেরা, সেটা নিয়ে গোটা বিশ্ব তর্কে মত্ত। কিন্তু মারাদোনা আর পেলে বরাবর নিজেদের বন্ধুত্ব বজায় রেখেছেন। কিন্তু ২০২০ সালে অকালে চলে যান মারাদোনা। তাঁর মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি ফুটবল বিশ্ব। মানতে পারেননি পেলেও। সেই দুঃখ এখনও তাঁর সঙ্গে লেগে রয়েছে।
২০২২ বিশ্বকাপে জয়ের পর আর্জেন্টিনা এখন উন্মাদনায় ভাসছে। এই প্রজন্মের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নিজের নাম অমর করে রাখলেন মেসি। ফাইনালের টানটান উত্তেজনায় হ্যাটট্রিক করলেও মুখ নিচু করে ফিরতে হল ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপেকে। সেই সমস্ত ছবিটাই ধরা পড়ল পেলের পোস্টে। ক্যানসারের থাবায় তিনি এখন সাও পাওলোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখান থেকেই মেসির উদ্দেশ্য তিনি লিখেছেন- “আজ ফুটবল আবারও নিজের আশ্চর্য রূপকথা শোনাল। মেসি নিজের প্রথম ফুটবল বিশ্বকাপ জিতলেন। তিনিই যোগ্য, তিনিই পেলেন… আর্জেন্টিনাকে অভিনন্দন। দিয়েগো এবার নিশ্চয়ই হাসবে।”
আরও পড়ুন : আজ থেকে মেসি মারাদোনা সমার্থক, ২০২২ বিশ্বকাপ আর্জেন্টিনার
তবে এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। অভিবাদন জানিয়েছেন এমবাপেকে। ফাইনালে আর্জেন্টিনার নাভিশ্বাস ওঠার একমাত্র কারণ এই ২৩ বছরের প্রতিভা। তাঁকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন পেলে। বলেছেন, “এমবাপে, আমার প্রিয় বন্ধু, ফাইনালে চারটি গোল করল। ফুটবলের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তৈরি হতে দেখছি, এর থেকে বড়ো উপহার আর কি হতে পারে!” সেই সঙ্গে পেলে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মরক্কোকেও। এই বিশ্বকাপের চতুর্থ স্থানাধিকারী দলটির প্রতি কারোর আশা ছিল না। সবাইকে চমকে দিয়ে ফুটবল মাঠে রূপকথা লিখল মরক্কো। তৈরি করল ইতিহাস। “মরক্কোর অসামান্য খেলাকে অভিবাদন না জানালে অন্যায় হবে। আফ্রিকাকে এই পর্যায়ে খেলতে দেখে খুব খুশি।”
কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের হারের পরও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন পেলে। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন নেইমারের। ভরসা দিয়েছিলেন সেলেকাওদের। সব মিলিয়ে সশরীরে না উপস্থিত থাকলেও, ফুটবল বিশ্বকাপ জুড়ে পেলের উপস্থিতি ছিল আগের মতোই।