রোজ পাতে চাটনি বা আচার! জানেন, আসলে বারোটা বাজাচ্ছে কে স্বাস্থ্যের?

Pickle and Chutney: বাড়িতে তৈরি আচার আবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার দুর্দান্ত উৎস

শুরুর পাতে আচার আর শেষ পাতে চাটনি। ভারতীয় ঘরানার খাবারে এই দুই প্রায় অবিচ্ছেদ্য। সুস্বাদু এই দুই খাবার মেইনকোর্স হতে পারেনি ঠিকই কিন্তু এদের ছাড়া ভারতীয় খাবার ভাবাটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ভাত হোক, রুটি হোক বা পরোটা, এমনকী খিচুড়ির মতো পদের সঙ্গেও চাটনি বা আচার দুর্দান্ত জুটি! টক, ঝাল, মিষ্টি অথবা তিনটেই একসঙ্গে- বাঙালি বাড়িতে শীতকাল মানেই ছাদে আচারের বয়াম। সরস্বতীপুজো মানেই কুলের আচারের তোড়জোড়। আর আচার চুরি করে খাওয়ার সংস্কৃতিই আমাদের শৈশব, আমাদের বেড়ে ওঠা। আসলে দেশের এক এক অংশে আচার আর চাটনির বিশেষত্বও এক এক প্রকার৷ কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন, প্রিয় এই দুই পদের মধ্যে কোনটি আসলে স্বাস্থ্যকর? আচার বেশি পুষ্টিকর না কি চাটনি?

আচার এবং চাটনির মধ্যে পার্থক্যটাই বা আসলে কী? আচার বলতে সাধারণত সংরক্ষিত সবজি-ফল এবং মশলা বোঝায়, আচার সাধারণত দীর্ঘকাল ধরে সংরক্ষিত করা খাবার। আচার সাধারণত তেল বা ভিনিগারে বা নুন দিয়ে তৈরি। অন্যদিকে, চাটনি হলো ডিপ বা পিউরি যা শাকসবজি এবং নানা ভেষজ মিশিয়ে তার উপরে মশলা যোগ করে তৈরি করা হয়৷ চাটনিতে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে। চাটনিতে প্রচুর ফাইবার থাকে এবং এটি ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ যা ত্বক আর চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। চাটনি রোগ এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধেও আমাদের সুরক্ষা জোগায়। চাটনি তাজা শাকসবজি এবং ধনেপাতার মতো ভেষজ দিয়ে তৈরি করা হয়। এতে ব্যবহৃত সমস্ত উপাদানই স্বাদ যেমন বাড়ায়, তেমনই স্বাস্থ্যকেও বজায় রাখে।

বাড়িতে তৈরি আচার আবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার দুর্দান্ত উৎস। খাবারের স্বাদ এবং গন্ধ বাড়ানোর পাশাপাশি আচার আমাদের শরীরের হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে। আচার অনেকদিন ধরে গ্যাঁজানো হয় এবং তাই এতে প্রচুর স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া থাকে। আচার তাই প্রোবায়োটিক হিসাবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন- আচার আগলানো কনকসুন্দরী, রিফিউজি মাইনসের খিদের গল্প

তাহলে, প্রশ্ন জাগে, আমাদের স্বাস্থ্যের পরিপ্রেক্ষিতে আচার না কি চাটনি থেকে কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ? বিশেষজ্ঞদের মতে, দু'টিই নিজের নিজের মতো করে পুষ্টিকর এবং দুইয়েরই নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। আচার সংরক্ষণের জন্য প্রচুর পরিমাণে তেল এবং নুন ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে, চাটনিতেও কখনও কখনও স্বাদ বাড়াতে খুব বেশি নুন বা চিনি মেশানো হয়ে থাকে। সুতরাং, মূল খাবারের সঙ্গে সামান্য পরিমাণেই তা খাওয়া উচিত। মনে রাখতে হবে, চাটনি বা আচার কখনই মূল খাবারের বিকল্প হতে পারে না, তাই পরিবেশনের সময় পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

আচার এবং চাটনি তৈরিতে কিছু স্বাস্থ্যকর রান্নার পদ্ধতি এবং উপাদান ব্যবহার করা আবশ্যক। বেশ কিছু তেল শূন্য আচার রয়েছে যা ঘরেই তৈরি করা যায়। চাটনি তৈরির সময় তাজা, স্বাস্থ্যকর উপাদান যেমন কারি পাতা, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা ব্যবহার করা উচিত। চিনি এবং নুনের পরিমাণ ন্যূনতম রাখতেই হবে এক্ষেত্রে!

 

More Articles