ফুসফুসের ক্যানসার নির্মূল করবে রোবট! যুগান্তকারী আবিষ্কারের পথে বিজ্ঞানীরা
Medical science : ফুসফুসের ক্যানসার সারাতে হাজির রোবট, যুগান্তকারী চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কারের পথে বিজ্ঞানীরা
আরও একবার সাফল্যের পথে রোবোটিক টেকনোলজি। হার্ট, কিডনি, হাঁটু প্রতিস্থাপনের পর এবার ক্যান্সার মোকাবিলায় যুগান্তকারী সাফল্য পেল এই পদ্ধতি। সম্প্রতি আমেরিকার মেন লাইন হেলথের গবেষক এবং চিকিৎসকদের করা রিপোর্ট থেকে জন্য যায়, রোবোটিক ব্রঙ্কোস্কোপিতে ফুসফুসের ক্যানসার নিরাময়ের আশা দেখা যাচ্ছে। প্রাণঘাতী হয়ে ওঠার আগেই ফুসফুসের ক্যানসার কোশ চিহ্নিত করবে এই অভিনব টেকনোলজি। শুধু তাই নয়, নির্মূলও করতে পারবে সেই ক্যানসার কোশগুলিকে।
“ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর, এতে ক্যান্সার হয়”, অতিপরিচিত এই বাক্যবন্ধকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে সুখ টান দেওয়া নতুন কিছু নয়। সমীক্ষা করলে দেখা যাবে, সতর্কতার হিড়িক যত বেড়েছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে উপেক্ষাও। দেদার বিকোচ্ছে সিগার। এতদিন ধূমপানকেই ফুসফুসের ক্যানসারের প্রধান কারণ বলে মনে করতেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু বর্তমানে যে হারে পরিবেশ দূষণ বেড়েছে, তাতে আর আলাদা করে ধোঁয়া টানতে হয় না। ‘অ্যাকটিভ’ অথবা ‘প্যাসিভ স্মোকার’ কিংবা একেবারেই ধূমপান করেন না এমন ব্যক্তিও এই অসুখের শিকার হচ্ছেন। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে। এছাড়াও আর এক ধরনের ফুসফুসের ক্যানসারের কথাও চিকিৎসকেরা বলে থাকেন, যার অন্যতম কারণ জিনগত পরিবর্তন। যার বেশিরভাগটাই আজও ধোঁয়াশা।
আরও পড়ুন : সারছে এইডসও! চিকিৎসাজগতে বিপ্লব, তুলকালাম বিশ্বজুড়ে
‘রোবোটিক ব্রঙ্কোস্কোপি’, এটি এমন এক ধরনের নতুন রোবোটিক পদ্ধতি যা ইতিমধ্যেই ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত অনেক মানুষের জীবন বাঁচাতে সফল হয়েছে। এই পদ্ধতিতে কোনওরকম কাটাছেঁড়া ছাড়াই ফুসফুস বা শ্বাসনালি থেকে টিউমার বের করছেন চিকিৎসকেরা।
একটা সময়ে শ্বাসনালি থেকে টিউমার বের করতে গেলে বুকে অস্ত্রোপচার করে সেটা বের করতে হত। তাতে রোগীর ঝুঁকি বাড়ত। কিন্তু রোবোটিক টেকনোলজি আসার পর থেকে সে আশঙ্কা অনেকটাই কমে গিয়েছে। রোবোটিক প্রযুক্তির সাহায্যে ফুসফুসের ক্যানসারকে প্রাথমিকভাবে খুঁজে বার করা সম্ভব হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, ক্যানসারের চিকিৎসা করাও সম্ভব হচ্ছে এই পদ্ধতির সাহায্যে। ইমেজিং গাইডেন্স ও ফুসফুসে মিনি টিউব ঢুকিয়ে টিউমার কোষ বের করে এনেই ক্যান্সার নিরাময় করছে এই রোবোটিক ব্রঙ্কোস্কোপি পদ্ধতিটি।
রোবোটিক্সের ব্যবহার এখন বিশ্বজুড়েই। বিজ্ঞানের গবেষণা থেকে চিকিৎসা, এমনকী ডিজিটাল ভারতেও জাঁকিয়ে বসেছে এই রোবট। এখন চিকিৎসকেরাও তাই ছুড়ি কাঁচির বদলে জটিল অস্ত্রোপচারে ব্যবহার করছেন রোবটকেই। আক্রান্ত স্থানে নিখুঁত অস্ত্রোপচার সম্ভব করতে তাই রোবটের জুড়ি মেলা ভার! তাই ফুসফুসের ক্যানসারের মতো জটিল চিকিৎসায় এর ব্যবহার যে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে নতুন মাইলফলক তৈরি করেছে তা আর বার অপেক্ষা রাখে না।
১৯৮৫ সালে নিউরোলজিক্যাল বায়োপসি করতে প্রথম রোবটের সাহায্য নেওয়া হয়। এর পরে ২০০০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘দ্য ভিঞ্চি’ নামে একটি সংস্থা এই রোবট বাজারে আনার পরে চিকিৎসাশাস্ত্রে নতুন দিগন্ত খুলে যায়। তাই এখন প্রায় সব সার্জারিতেই ডাক পড়ে রোবট স্যারের। তিনিই যেন সাক্ষাৎ ধন্বন্তরি। এসে দাঁড়ালেই উধাও অসুখ।