আচমকা হাত লেগে ডায়ল হয়ে যায় এমারজেন্সি নম্বর, জানেন আসলে কে থাকেন ফোনের ওপারে?

Emergency number : আমেরিকা-সহ অন্যান্য উন্নত দেশগুলির মতো ভারতেও রয়েছে এমার্জেন্সি হেল্পলাইন নম্বর। জানেন কোন নম্বর? ডায়াল করলে কে ফোন ধরবে?

‘এমারজেন্সি’ অর্থাৎ জরুরী প্রয়োজনের সঙ্গে সম্পর্কিত যা কিছু। হাসপাতাল থেকে শুরু করে বাস ট্রেন সর্বত্র থাকে এই আপৎকালীন ব্যবস্থা। ঠিক সেরকমই ব্যতিক্রম নয় আমাদের হাতে থাকা মুঠোফোনটিও। আমেরিকা-সহ অন্যান্য উন্নত দেশগুলির মতো ভারতেও চালু হয় সিঙ্গল এমার্জেন্সি হেল্পলাইন নম্বর। ফোনে একটি নির্দিষ্ট নম্বর ডায়াল করে সহজেই পরিষেবা মিলিয়ে পারে পুলিশ, দমকল, স্বাস্থ্য, নারী নিরাপত্তা ও শিশু সুরক্ষা সহ যে কোনও জরুরী প্রয়োজনীয় মাধ্যম থেকে।

২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতেই ঘটে যায় এক মর্মান্তিক ঘটনা। সেই ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। দিল্লির নির্ভয়া কান্ড আইনি ব্যবস্থায় বেশ কিছু বদল এনেছিল। সেই ঘটনাকে সামনে রেখেই মোবাইল ফোনে এমারজেন্সি নম্বর ডায়াল করার দাবি উঠেছিল। অবশেষে ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর দেশের মধ্যে প্রথম হিমাচল প্রদেশে চালু হয় এই পরিষেবা। নম্বরটি হল ১১২। এরপর হিমাচল প্রদেশ থেকে নাগাল্যান্ড হয়ে দেশের আরও ১৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রীয়শাসিত অঞ্চল আর মুম্বইয়ে এই পরিষেবা চালু করে কেন্দ্র সরকার। ক্রমেই এই পরিষেবা গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়বে এমনটাই দাবি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের। আমেরিকার ৯১১ সিঙ্গল এমার্জেন্সি নম্বরের আদলেই ভারতে ১১২ নম্বরটি চালু করা হয়েছে এমারজেন্সি নম্বর হিসেবে।

আরও পড়ুন - শাহিনবাগে ‘অতিসক্রিয়’, অথচ ফোন বেজে গেলেও মহিলা সুরক্ষার প্রশ্নে শীতঘুমে দিল্লি পুলিশ

অনেক সময় দেখা যায়, কোনও কারণে আচমকা হাত লেগেই মোবাইলে সরাসরি ডায়ল হয়ে যায় এমারজেন্সি নম্বর। স্ক্রিনে নামটা দেখা মাত্রই তড়িঘড়ি কেটে দিই আমরা ফোনটি। কিন্তু আপনি কি জানেন ফোন বেজে গেলে আদৌ কি ধরা হয় ফোন? ফোনের ওপারে আসলে কে থাকেন? প্রসঙ্গত জেনে রাখা দরকার, শুধু অ্যান্ড্রয়েড ফোন নয়, পুরনো আদলের ফোনেও রয়েছে এই পরিষেবা। ৫ অথবা ৯ বাটনটি একটু বেশি সময় ধরে চাপ দিলে চালু হয়ে যায় এমারজেন্সি কল।

এমারজেন্সি নম্বরে যাওয়া সমস্ত ফোনকেই প্রাথমিক ভাবে প্যানিক কল হিসেবে গ্রাহ্য করা হয়। তথ্য ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের মতে, এই পরিষেবা সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আওতায় পড়ে। দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে এই নম্বরে করা যায় ফোন। এই আপৎকালীন নম্বরে ফোন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগকারীর সমস্যার কথা শুনে তা দ্রুত পাঠিয়ে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে। এই আপৎকালীন বিভাগ বলতে একটি বড় তালিকা নির্ধারিত রয়েছে। যে যে বিভাগ থেকে বিপদের মুহূর্তে জরুরি পরিষেবা পাওয়া সম্ভব, সেগুলি হল - পুলিশ, দমকল, স্বাস্থ্য, নারী নিরাপত্তা, শিশু সুরক্ষা ইত্যাদি নানা বিভাগ।

আরও জানা যায়, এই এমারজেন্সি নম্বরে ফোন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপদে পড়া মানুষটির লোকেশন ট্র্যাক করতে পারে পুলিশ। এবং সেই মতো যত দ্রুত সম্ভব জরুরি পরিষেবা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। যদিও যে নির্ভয়া কান্ডকে সামনে রেখে এই পরিষেবার দাবি উঠেছিল তার মীমাংসা হয়নি আজও, পরিষেবা চালু হওয়ার পরও একা রাস্তায় কতটা নিরাপদ সাধারণ মানুষ সেই নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন থেকেই যায়। তবুও সরকারি হিসেব বলছে, এমারজেন্সি নম্বর চালু হওয়ার পর নাকি বহু মানুষ বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছেন। সুতরাং এই নম্বর ভবিষ্যতে যে আরও সুরক্ষা দিতে পারবে, এমনটা নিয়ে আশাবাদী সকলেই।

More Articles