ঢাকা কাঁপাবে আম জনতার লং মার্চ! আরও নির্মম মৃত্যু, হিংসা দেখতে হবে বাংলাদেশকে?
Long March To Dhaka: লংমার্চ করে ঢাকায় আসা জনতা সকাল ১১ টা থেকেই বিভিন্ন স্থানে অবস্থান শুরু করবে।
কথা ছিল ৬ অগাস্ট, মঙ্গলবার বিপুল শক্তি নিয়ে পথে নামবে ছাত্রছাত্রীরা। ঢাকা শহরে লং মার্চ হবে হাসিনাশাহীর অবসান চাওয়া মানুষদের। তবে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির তারিখ পরিবর্তন করেছে। মঙ্গলবার নয়, আজ, সোমবারই এই কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে তারা। সারা বাংলাদেশ থেকে আন্দোলনকারীরা আসছেন ঢাকায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেই জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 'মার্চ টু ঢাকা' কর্মসূচিতে সারা দেশের ছাত্র-জনতাকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করার আহ্বান জানিয়েছেন আসিফ। কী এই মার্চ টু ঢাকা?
বাংলাদেশের সমস্ত মুক্তিকামী ছাত্র-জনতাকে রাজপথে অবস্থানের ডাক দিয়েছেন আসিফ। এই পথে নামা হাসিনা সরকারের অবসান চেয়ে। আসিফ বলছেন, রবিবার আবার অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে খুন করেছে হাসিনা সরকার। তাই আর অপেক্ষা করা সাজে না। এই সরকারকে চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার সময় এসে গেছে। আশপাশের সমস্ত জেলা থেকে বিপুল পরিমাণ মানুষের ঢাকায় আসার কথা। আসিফ মাহমুদ বলেছেন, "এই ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের চূড়ান্ত স্বাক্ষর রাখার সময় এসে গেছে। ইতিহাসের অংশ হতে ঢাকায় আসুন সবাই। যে যেভাবে পারেন, ঢাকায় চলে আসুন। ছাত্র-জনতা এক নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটাব।"
আরও পড়ুন- নতুন করে মৃত্যু মিছিল বাংলাদেশ! “ছাত্র নয়, সব সন্ত্রাসবাদী”, কেন বলছেন হাসিনা?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা এই ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিকে ঘিরে নতুন করে হিংসার আশঙ্কা বাড়ছে তাই। সকাল থেকেই থমথমে ঢাকা। কার্ফিউ জারি হয়েছে, সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান করছে, নিয়মিত টহল দিচ্ছে। ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কাঁটাবন, নীলক্ষেত, শাহবাগসহ বেশ কয়েকটি রাস্তা। আন্দোলনকারীরা এই পথে এগোলে কী ব্যবস্থা নেবে হাসিনা সরকার? কোটা আন্দোলনের ফিকে না হওয়া ভয়াবহ স্মৃতি, দগদগে ঘা যেন খুঁচিয়ে উঠছে আবার!
রবিবার দুপুর থেকেই সারা বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু থাকলেও ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটকের মতো পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। রবিবার নতুন করে পুলিশ, আওয়ামী লীগ কর্মী ও আন্দোলনকারীদের হিংসায় ৯৭ জনের প্রাণ গেছে। এই অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন 'মার্চ টু ঢাকা'-র ডাক দিয়েছে। আসিফ জানিয়েছেন, ঢাকার আন্দোলনকারী ও লংমার্চ করে ঢাকায় আসা জনতা সকাল ১১ টা থেকেই বিভিন্ন স্থানে অবস্থান শুরু করবে। শহিদ মিনারে ১১ টা থেকে সবাইকে জড়ো হওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে মিছিল যাবে শাহবাগে। শাহবাগে কেন্দ্রীয় সমাবেশ হবে এবং সেখান থেকেই পরিস্থিতি বিবেচনা করে চূড়ান্ত ঘোষণা করা হবে।
সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ আন্দোলন ঘিরে সন্ত্রাসবাদী কাজ চালানোর অভিযোগ তুলে তা আবারও দমনের কথা স্পষ্ট জানিয়েছে। সোমবারের এই লংমার্চ ঘিরে আরও অনেক মানুষের নির্মম মৃত্যু কি দেখতে হবে বাংলাদেশকে? প্রশ্ন উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে জুলাই মাসে ইতিমধ্যেই তিনশোর কাছাকাছি মানুষের প্রাণ গেছে। তারপর অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে রবিবার নতুন করে উত্তপ্ত বাংলাদেশে পুলিশের ১৪ জন সহ প্রাণ গেছে ৯৭ জনের। এত বেশি প্রাণহানি এবং রক্ত স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ দেখেনি বলেই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের সরাসরি 'সন্ত্রাসবাদী' বলেছেন। নৈরাজ্য থামাতে সরকার যে আগের চেয়েও কঠোর হবে সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন। সোমবারের লংমার্চ কর্মসূচি ঘিরে তাই প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।