করোনার পরে কি নিপা! হু হু করে সংক্রমণে বাড়ছে উদ্বেগ, কীভাবে সতর্কতা?
Nipah deaths: কোঝিকোড় জেলা জুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুমও। রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
করোনার ফাঁড়া কাটিয়ে উঠেছে বিশ্ব, খুব বেশি সময় হয়নি। প্রতি বছরের মতো বর্ষার উপসর্গ হিসেবে হাজির ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া। তার মধ্যে ফের উঁকি মারছে নয়া ফাঁড়া। আবার নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে নিপা ভাইরাস। কেরলে বাদুড়বাহিত এই রোগের ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে দু'জনের।
কেরলে ইতিমধ্যেই আতঙ্ক বেড়েছে এই ঘটনায়। এখনও পর্যন্ত ওই ভাইরাস আক্রান্তদের প্রায় সকলেই রাজ্যের কোঝিকোড় জেলার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যেই ওই জেলার সাতটি গ্রামকে কনটেনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে একাধিক স্কুল।
আরও পড়ুন: মৃত বেড়ে ১১, রোজই চোখ রাঙাচ্ছে অ্যাডিনোভাইরাস, বিপদ এড়াতে যা যা খেতে দেবেন শিশুদের
স্বাভাবিক ভাবেই ব্যাপারটি নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানেন, নিপা ভাইরাসের সংক্রমণের হার কম। কিন্তু মৃত্যুহার সেই তুলনায় অনেক বেশি। সেটাই চিন্তার ব্যাপার। নিপা ভাইরাসে আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার জন্য কোঝিকোড় মেডিক্যালে কলেজে একটি ভ্রাম্যমান পরীক্ষাগার তৈরি করেছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি)। ইতিমধ্যেই পুণে থেকে কোঝিকোড়ে পৌঁছেছে এনআইভি-র একটি দল। তাছাড়া চেন্নাই থেকেও কেরলে পৌঁছেছে একটি বিশেষজ্ঞদল। একই সঙ্গে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চও নিপা আক্রান্তদের রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি দিয়ে সাহায্য করতে চেয়েছে বলে বিধানসভায় জানিয়েছেন সে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
নিপা ভাইরাসের নতুন এই ভ্যারিয়েন্টটিকে 'বাংলাদেশ' ভ্যারিয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন চিকিৎসকেরা। এখনও পর্যন্ত কোঝিকোড়ে মোট চার জন নিপা ভাইরাস আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। তবে তার সঙ্গেই এক বেসরকারি হাসপাতালে দুই রোগীর অস্বাভাবিক মৃত্য়ুর খবর মিলেছে। অনুমান করা যাচ্ছে, তাঁদের মৃত্য়ুর জন্য দায়ী ওই বাদুড়বাহী ভাইরাসই। ইতিমধ্যেই কোঝিকোড় জেলা জুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুমও। রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তবে একই সঙ্গে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলেও জানিয়ে দেন তিনি। মৃতদের সংস্পর্শে এসেছিলেন যাঁরা যাঁরা, তাঁদেরও চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে ইতিমধ্যেই।
আরও পড়ুন:দেহ থেকে অবিরাম রক্তপাত, ভূতের মতো চেহারা! মারাত্মক যে ভাইরাস ছড়াচ্ছে বিশ্বজুড়ে
তবে নিপা ভাইরাসের উৎপাত এই প্রথম নয়। এর আগেও নিপা ভাইরাসে মড়ক দেখেছে কোঝিকোড় ও মলপ্পুরম জেলা। ২০১৮ সালে এই ভাইরাসের বলি হয় ১৭ জন। অন্তত ১৮ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। ২০২১ সালেও ফের হানা দেয় এই ভাইরাস। সেবারও মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েক জনের। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তরফে সতর্ক করে দিয়ে জানানো হয়েছে, শুধু মানুষই নয়, এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে পশুপাখিরাও। ফলভুক বাদুড় বা 'ফ্রুট ব্যাটস'-এর মাধ্যমেই এই সংক্রমণ ছড়ায় মূলত। তাই এই সব প্রাণীগুলির থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জ্বর, পেশির যন্ত্রণা, মাথাধরা, ঝিমুনি বা বমি বমি ভাবের মতো উপসর্গ দেখা গেলে, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে অভিজ্ঞমহল।