ভাতঘুম না হলে তার একেবারেই চলে না! বিশ্বের সর্বকালের বয়স্ক কুকুরের বয়স কত, জানেন?

Bobi World's Oldest Dog Ever : গিনেস বিশ্ব রেকর্ডের সার্টিফিকেট। সেখানে লেখা, এই কুকুরটিই বিশ্বের সর্বকালের সবচেয়ে বয়স্ক কুকুর!

বাদামি চেহারা, চোয়ালের কাছ থেকে সাদা একটা লাইন নেমে গিয়েছে পেট অবধি। জুলজুল চোখে সে তাকিয়ে আছে ক্যামেরার দিকে। পাশেই রাখা ফ্রেমে বাঁধানো বড় একটা ছবি। সেটি আসলে গিনেস বিশ্ব রেকর্ডের সার্টিফিকেট। সেখানে লেখা, এই কুকুরটিই বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক কুকুর। আরও ভালো করে বললে, পৃথিবীর ইতিহাসে খুব বেশি কুকুর এতদিন বেঁচে থাকেনি। সেটা অস্বাভাবিকও বটে। আর সেই অস্বাভাবিক ঘটনাটাই ঘটাল। এই বাদামি রঙের জুলজুল চোখে তাকিয়ে থাকা কুকুরটি।

নাম তার ‘ববি’ (Bobi)। ভারত থেকে বহুদূরে, পর্তুগালের একটি গ্রামে থাকে সে। পর্তুগালের লেইরিয়ার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে, কোস্টা পরিবারের সঙ্গেই থাকে ববি। এটি রাফেইরো দো আলেনতেজো গোত্রীয় কুকুর; আরও ভালো করে বললে লাইভস্টক গার্ডিয়ান প্রজাতির কুকুরের একটি ব্রিড। সাধারণত এই প্রজাতির কুকুররা ১২ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত জীবিত থাকে। কিন্তু তাদের মধ্যেই ব্যতিক্রম ববি। ১৯৯২ সালে জন্ম তার। হিসেব অনুযায়ী, তার বয়স এখন ৩০ বছর! এতদিন ধরে একটা কুকুর বহাল তবিয়তে বেঁচে আছে! সেটাই আশ্চর্যের।

আরও পড়ুন : বদ্ধ বাথরুমে চিতাবাঘের সামনে বেকায়দায় কুকুর, তারপর? যে ঘটনায় বিস্মিত সোশ্যাল মিডিয়া

অবশ্য এই বয়সের মধ্যে কোনও জল মেশানো নেই, সেটা সবদিক থেকে নিশ্চিত করেছে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ। লেইরিয়ার পুরসভার পশুচিকিৎসা কেন্দ্রের নথিও খতিয়ে দেখেছে গিনেস। সেইসঙ্গে পর্তুগালের পোষ্যদের নিয়ে তৈরি বিশেষ ডেটাবেসও খতিয়ে দেখা হয়েছে। সব হিসেব করেই দেখা গিয়েছে, সত্যিই ববির বয়স ৩০ বছর! ২০২৩-র মে মাসেই ৩১ বছর হয়ে যাবে সে। কয়েকদিন আগেই বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক কুকুরের তকমা দেওয়া হয়েছিল ওহিও-র চিহুয়াহুয়া গোত্রের কুকুর ‘স্পাইক’-কে। তার বয়স ২৩ বছর। পরে ববির অস্তিত্ব জানার পর তার হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছে এই সম্মান।

এর আগে বিশ্বের সর্বকালের সবচেয়ে বয়স্ক কুকুরের তকমা দখল করেছিল অস্ট্রেলিয়ার ক্যাটল ডগ ‘ব্লুই’। ২৯ বছর পর্যন্ত বেঁচেছিল সেই কুকুরটি। ১৯৩৯ সালে ব্লুই মারা যায়। কিন্তু ৩০ বছর ধরে ববির এভাবে বহাল তবিয়তে বেঁচে থাকার রহস্য কী? পর্তুগালের লেইরিয়ার ওই গ্রামের কোস্টা পরিবার জানাচ্ছে, ববি একেবারে জন্ম থেকেই তাদের সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। ওর মা-ও ১৮ বছর অবধি বেঁচেছিল। শহর থেকে অনেক দূরে, গ্রামের সুন্দর, স্বাস্থ্যকর, শান্ত নিরিবিলি পরিবেশেই বড় হয়েছে ববি। তাই সেই শান্ত ভাবটা তার স্বভাবের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। দূষণের থেকে দূরে থাকার কারণেই নাকি ববির এমন লম্বা আয়ু।

আরও পড়ুন : ছিলেন মানুষ, রাতারাতি হয়ে গেলেন কুকুর! তারপর? অদ্ভুত এই ঘটনায় হইচই সোশ্যাল মিডিয়ায়

এখন অবশ্য বেশি ছোটাছুটি করতে পারে না ববি। খাওয়ার পর ছোট্ট করে ভাতঘুম দেওয়াও তার দীর্ঘদিনের অভ্যাস। কোস্টা পরিবারের বাকিরা যা খায়, সেই খাবারই মনের আনন্দে খায় ববি। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি ডাক্তারের কাছেও তাকে নিয়মিত নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১৮ সালে হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট হয় ববির। শেষমেশ অবশ্য চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওঠে সে। ওই একবারই বড় ধরনের শরীর খারাপ হয়। এখন অবশ্য ববি একেবারে ফিট। সবার বড় দাদা সে, বাড়ির ‘কর্তা’; তাই মেজাজও সেরকম।

More Articles